করোনার কারণে চলতি বছরের শুরু থেকেই বিদেশে উচ্চশিক্ষা যাওয়ার বিষয়ে শিক্ষার্থীরা ব্যাপক সংকটে পড়েছেন। অনেক শিক্ষার্থী ইউরোপ, কানাডা, আমেরিকার মতো দেশের নামি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েও ভিসা ও ফ্লাইটসংক্রান্ত জটিলতার কারণে যেতে পারছেন না। আবার ছুটিতে যারা দেশে এসেছিলেন তাদের মধ্যে অনেক শিক্ষার্থী নির্দিষ্ট সময়ে ফিরতে পারছেন না।
শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি একই সংকটে পড়েছে দেশআকই ৪ শতাধিক স্টুডেন্ট কনসালট্যান্সি প্রতিষ্ঠানও। প্রতিবছর বাংলাদেশ থেকে প্রায় ৫০ হাজার শিক্ষার্থী উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশে যায়। কিন্তু করোনা মহামারির জন্য এ বছরের শুরু থেকেই পৃথিবীর নানা দেশে লকডাউন শুরু হয়। ফলে চলতি বছর ১০ হাজারেরও কম শিক্ষার্থী বিদেশে উচ্চশিক্ষায় যেতে পেরেছেন বলে জানিয়েছেন এ খাতের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
তবে গেল অক্টোবরে যুক্তরাষ্ট্রে নানা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তির সুযোগ পাওয়া নতুন শিক্ষার্থীদের জন্য ভিসা সার্ভিস চালুর জন্য ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলন করেন শিক্ষার্থীরা।
বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সাথে কথা বলে জানা গেছে, অনেক শিক্ষার্থীই আছে যারা চলতি বছরের আগস্ট থেকে শুরু হওয়া সেমিস্টারে বিদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েও অনেকে ভিসা ও ফ্লাইটসংক্রান্ত জটিলতায় সেমিস্টার পরিবর্তন করে আগামী জানুয়ারি থেকে নিয়েছেন। আবার অনেকে পুরো এক বছরের সেমিস্টারও পরিবর্তন করেছেন।
জানা গেছে, এ বছর বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পাওয়া অনেক শিক্ষার্থী ভিসা আবেদন না করতে পারায় অনলাইন ক্লাসে অংশগ্রহণ করতে পারেননি। কারণ অনলাইন ক্লাসে যোগ দিতে হলে প্রথম সেমিস্টারের ফি পরিশোধ করতে হয়। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ে সরাসরি গিয়ে রিসার্চ ওয়ার্কে যোগ দিতে পারলে অধিকাংশই স্কলারশিপ পান। তাই অনেকেই ভিসা না পাওয়ায় তারা নিশ্চিন্তও হতে পারছিলেন না। আর এতে দেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়েও ভর্তি হননি ওই সব শিক্ষার্থীরা।
বিএসবি ক্যামব্রিয়ান গ্রুপের প্রতিষ্ঠান বিএসবি গ্লোবাল নেটওয়ার্কের প্রধান নির্বাহী লায়ন এম কে বাশার জানান, করোনায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশে লকডাউন থাকার ফলে খুব কমসংখ্যক শিক্ষার্থীই এবার বিদেশে উচ্চশিক্ষায় যেতে পেরেছে। তবে সম্প্রতি বিভিন্ন দেশের এমবাসিগুলো নতুন শিক্ষার্থীদের জন্য ভিসা প্রক্রিয়া আবার চালু করেছে। ইংল্যান্ড, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, আমেরিকা ও ইউরোপের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তাদের শর্তগুলোও সহজ করেছে। ফলে আগামীতে উন্নত দেশগুলোর উচ্চশিক্ষায় সম্ভাবনা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
ফরেন অ্যাডমিশন অ্যান্ড ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট কনসালট্যান্ট অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি এবং ওয়েল বাংলাদেশ এডুকেশন লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী ফরিদুল হক হ্যাপী জানান, আমাদের ৪০০ সদস্য আছে। তারা সবাই খুবই দুরবস্থায় আছে। উচ্চশিক্ষায় বিদেশে যাওয়া শিক্ষার্থীরা পড়ালেখার পাশাপাশি চাকরি করে প্রতিবছর মোটা অঙ্কের রেমিট্যান্স পাঠায়। কিন্তু চলতি বছর করোনার জন্য সেখানেও সংকট তৈরি হচ্ছে।
আনন্দবাজার/এইচ এস কে