ঢাকা | শনিবার
২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অনলাইনে বিনামূল্যে পাঠদান করাচ্ছে একদল স্বপ্নবাজ তরুণ

বর্তমান বিশ্ব সবার হাতের মুঠোয় চলে এসেছে। একটি স্মার্টফোন বা যেকোনো ইলেক্ট্রনিক ডিভাইসের সাথে ইন্টারনেট সংযোগ থাকলে দৈনন্দিন জীবনের সকল কাজ খুব সহজেই করা যায়। ইন্টারনেটের কল্যানে এবং এর সুফল কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন ইতিবাচক কাজ করছে একদল তরুন। বর্তমান সময়ে ফেইসবুক, ইউটিউব ব্যবহার করে কেউ জ্ঞান আহরণ করছে আবার একই মাধ্যমে কেউবা বিলিয়ে দিচ্ছে নিজেদের অর্জিত জ্ঞান।

তারই ধারাবাহিকতায় “Learn and Grow” নামক একটি ফেইসবুকভিত্তিক প্লাটফর্ম, যেখানে বিনামূল্যে লাইভ ক্লাস এবং ক্লাসের উপর ভিত্তি করে সকল বিষয়ে অনলাইনে পরীক্ষা, বিভিন্ন ধরণের কন্টেন্ট এবং শিক্ষার্থীদের জন্য বিষয় ভিত্তিক সীট সহ নানা টিপস্ আপলোড করে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করানো হচ্ছে। আর এই কাজগুলো যারা করছে তারাও বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া নবীন ও পুরাতন শিক্ষার্থী নিয়ে গঠিত একদল মেধাবী শিক্ষার্থী। যাদের অদম্য মেধা এবং ভালো কিছু করার ইচ্ছাশক্তির কারনে উপকৃত হচ্ছে অন্যান্য শিক্ষার্থীরা।

“বিনামূল্যে শিক্ষা হোক সবার দীক্ষা ” এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে ২০ এপ্রিল ২০২০ সাল থেকে কার্যক্রম শুরু করা এই প্রতিষ্ঠানটি অনলাইনে বিনামূল্যে পাঠদান করাচ্ছে।এখানে প্রায় পঞ্চাশোর্ধ মেধাবী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী নিয়মিত পাঠদান করাচ্ছে এবং ১০ থেকে ১২ হাজার শিক্ষার্থী নিয়মিত লাইভ ক্লাস এবং পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে।

এ সম্পর্কে প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাতা ইমাম হোসেন জেমস এবং সহ প্রতিষ্ঠতা মো: রিয়াদ এবং অন্যান্য পরিচালকদের সাথে কথা বলে জানতে পারি বর্তমানে দেশের বেশিরভাগ শিকার্থী আছে যারা কিনা প্রতিভা এবং আগ্রহ থাকা সত্ত্বেও আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে কোচিং বা প্রাইভেট সেবা থেকে বঞ্চিত তাদের দোরগোড়ায় আধুনিক ও জ্ঞান সমৃদ্ধ শিক্ষা ব্যবস্থায় অত্যাধুনিক ক্লাস এবং দিকনির্দেশনা গুলো পোছে দিতে আমাদের এই ক্ষুদ্র প্রয়াস। তারা আরও জানান বর্তমানে এখানে মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক ক্লাস এবং কন্টেন্ট গুলো সেয়ার করা হলেও আগামীতে ষষ্ঠ শ্রেণী থেকে লার্নিং সেবা দিয়ে যাবে। আর তাদের এই কর্মকাণ্ডে বিপুল পরিমাণ সারা এবং তারিফ পাচ্ছে বলে জানিয়েছেন। তা নিয়েই বিস্তারিত জানাচ্ছেন তানজিন রোবায়েত রোহান

আনন্দবাজার: কখন থেকে এরকম একটি সেবামূলক কার্যক্রম শুরু করেছেন?

জেমস: আমাদের অনেক আগে থেকেই এই ধরনের একটি শিক্ষা সেবামূলক কার্যক্রম করার পরিকল্পনাছিল। আর লকডাউনের এই সময়ে যখন শিক্ষাব্যাবস্থা স্থগিত তখনই শিক্ষার্থীদের ঘরে বসে শিক্ষা দিতে আমরা আমাদের গ্রুফের মাধ্যমে ফেইসবুক ভিত্তিক অনলাইন ক্লাসের আয়োজন করি যার সেবা আমরা বিনামূল্যে দিয়ে থাকি।

আনন্দবাজার: কীভাবে এই রকম একটি কার্যক্রমের চিন্তা মাথায় এলো?

জেমস: মূলত লকডাউনে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় মননশীল তৈরিতে আমাদের অনলাইন ভিত্তিক ফ্রী ক্লাসের এই ভিন্ন প্রয়াস। আর যারা কোন টিউটরের কাছে পড়ার বা সমস্যা সমাধান করার সুযোগ পায় না ওই রকম সুবিধা বঞ্চিতদের কথা চিন্তা করেই আমাদের এই ভিন্ন উদ্যোগ।

আনন্দবাজার: এখন কীভাবে আপনাদের পাঠ কার্যক্রম পরিচালনা করছেন?

জেমস: বর্তমানে আমাদের এই প্রতিষ্ঠানে বিশ এর অধিক শিক্ষক এবং দশ থেকে পনের হাজারের অধিক শিক্ষার্থী রয়েছে। আর প্রতিনিয়ত উচ্চমাধ্যমিক এর ক্লাস এবং পরীক্ষা নেওয়া হলেও আমরা দ্রুতই মাধ্যমিক থেকেই সকল প্রকার কার্যক্রম শুরু করছি।

আনন্দবাজার: আপনাদের এই কর্যক্রম বা প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম নিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ?

জেমস: বর্তমানে আমরা ছোট পরিসরে শুরু করলেও ভবিষ্যতে আরও বিস্তৃত হয়ে কাজ করতে চা। এতে করে কেন পৃষ্ঠপোষক বা স্পন্সর পেলে আমাদের প্রতিষ্ঠান এবং প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা ব্যবস্থাকে আরও সমৃদ্ধ করে সকল বিষয়ে পরীক্ষা নেওয়া এবং শিক্ষার্থীদের কাছে বিনামূল্যে উন্নত শিক্ষা পৌঁছে দিতে সক্ষম হব।

এই প্রতিষ্ঠানটির মূল লক্ষ হচ্ছে দেশের সর্বস্তরের প্রতিভাবান সুযোগ না পাওয়া ছাত্র ছাত্রীদের সেবায় আত্মনিয়োগ করে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা শক্তিশালী করে ভিন্ন ধরনের এক নতুন মঞ্চ উন্মোচন করা।

আনন্দবাজার/শাহী/তানজীন

সংবাদটি শেয়ার করুন