রবিবার, ৮ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৪শে ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সাড়ে ১২ হাজার টন চিনি কিনছে টিসিবি

চিনিতে আমদানির সুনজর

চিনিতে আমদানির সুনজর

চিনির কেজি

বাজারে ১০৫-১১০ টাকা
টিসিবিতে বিক্রি ৫৫ টাকা

সরকার চিনির দিকে নজর দিয়েছে। আমদানির মাধ্যমের চিনির লাগাম ছেঁড়া দাম নিয়ন্ত্রণ করার উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। এ লক্ষ্যে সরকার বিপণনকারী সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে সাড়ে ১২ হাজার টন চিনি আমদানির অনুমোদন দিচ্ছে। এতে খরচ হবে প্রায় ৬৬ কোটি টাকা। প্রতিটন চিনির দাম পড়বে ৫২৪ ডলার। জেএমআই নামের প্রতিষ্ঠান ব্রাজিল থেকে এই চিনি আমদানি করবে।

অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির ২৫তম এবং সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির ৩৩তম সভায় গতকাল বৃহস্পতিবার এ অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা শেষে সভায় অনুমোদন পাওয়া প্রস্তাবগুলো সংবাদিকদের কাছে বিস্তারিত তুলে ধরেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সাঈদ মাহবুব খান।

বর্তমানে বাজারে এলাকাভেদে প্রতি কেজি চিনি ১০৫ টাকা থেকে ১১০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আর টিসিবি তার সুবিধাভোগীদের কাছে বিক্রি করছে ৫৫ টাকায়। বেসরকারি চিনিকলগুলো বিশ্ববাজার থেকে চিনির কাঁচামাল আমদানি করে দেশে নিয়ে আসে নিজেদের কারখানায় প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে বাজারজাত করে।

বর্তমানে দেশে বার্ষিক চিনির চাহিদা ১৮ থেকে ২০ লাখ টন। এর সিংহভাগই আমদানি করতে হয়। দেশীয় চিনিকলগুলো বছরে মাত্র এক থেকে দেড় লাখ টন চিনি উৎপাদন করতে পারে। বর্তমানে সরকারি পর্যায়ে ১৫টি চিনিকল আছে। এর মধ্যে গত দুই বছরে ৬টির উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টন চিনি উৎপাদন কমে গেছে। দেশে চিনির বাজার বেসরকারি খাতের ওপর নির্ভরশীল। গত অক্টোবরে সরকার প্রতি কেজি চিনির মূল্য ৯০ টাকা বেঁধে দিলেও তা কার্যকর হয়নি। ফলে চিনির বাজারে চলছে অস্থিরতা।

আরও পড়ুনঃ  ভারত থেকে ৬০ হাজার মেট্রিক টন ডিজেল কিনবে সরকার

চিনির বাজারে এই সংকটের মধ্যেই সম্প্রতি সরকারি কারখানায় উৎপাদিত চিনির দাম এক লাফে ১৪ টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফেকচারার্স এসোসিয়েশন। এছাড়া গত ৩ নভেম্বর বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশন এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে চিনির নতুন দাম কার্যকরের ঘোষণা দিয়েছে। তাতে বলেছে, আন্তর্জাতিক ও দেশীয় বাজারমূল্যের সঙ্গে ‘সামঞ্জস্য রেখে প্রতি কেজি দেশি চিনির সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ৮৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৯৯ করা হয়েছে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, করপোরেশনের উৎপাদিত প্রতি টন চিনির দাম মিল পর্যায়ে আগে ছিল ৭৪ হাজার টাকা। দাম বাড়িয়ে এখন তা ৮৫ হাজার টাকা করা হয়েছে। অর্থাৎ মিল পর্যায়ে প্রতি কেজি চিনির দাম পড়বে ৮৫ টাকা। ডিলার পর্যায়ে প্রতি টনের দাম ঠিক করা হয়েছে ৮৭ হাজার টাকা। অর্থাৎ প্রতি কেজি চিনি ডিলাররা কিনতে পারবেন ৮৭ টাকায়।

এ ছাড়া মিলগেটে ১ কেজির চিনির প্যাকেটের দাম ৭৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে করা হয়েছে ৯০ টাকা। আর ওই প্যাকেট করপোরেট সুপারশপ বা চিনিশিল্প ভবনের বেইজমেন্ট থেকে কিনতে লাগবে ৯২ টাকা। ডলারের দরের ঊর্ধ্বগতিতে আমদানি ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় ব্যবসায়ীদের দাবির মুখে এর আগে গত ৬ অক্টোবর চিনির দর কেজিতে ৬ টাকা বাড়ানোর ঘোষণা দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

তাতে খোলা চিনির বেড়ে দাঁড়ায় ৯০ টাকা কেজি, আর প্যাকেটজাত চিনি প্রতি কেজি হয় ৯৫ টাকা। তবে সরবরাহে ঘাটতি দেখা দেয়ায় কয়েক সপ্তাহের ব্যবধানে প্যাকেটজাত চিনি ১২০ টাকা কেজি দরেও বিক্রি হচ্ছে। কোনো কোনো এলাকায় দোকানে চিনি মিলছে না বলে অভিযোগ আসছে। টিসিবির বাজার দরের প্রতিবেদন অনুযায়ী, কয়েকদিন আগে প্রতি কেজি চিনি বিক্রি হয়েছে ১০৫ থেকে ১১৫ টাকায়, যা এক মাস আগে ৯০ থেকে ৯২ টাকা ছিল।

আরও পড়ুনঃ  ঘণ্টায় বিক্রি ৮ লাখ

আনন্দবাজার/শহক

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন