রবিবার, ২২শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৭ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পর্যটনে বৌদ্ধ নিদর্শন সমন্বয়ে কাজ হচ্ছে

পর্যটনে বৌদ্ধ নিদর্শন সমন্বয়ে কাজ হচ্ছে

-আবু তাহের মোহাম্মদ জাবের, নির্বাহী পরিচালক, পর্যটন বোর্ড

ভারত, নেপাল, ভুটান ও বাংলাদেশের বৌদ্ধ নিদর্শনস্থানগুলোকে সমন্বয় করে কাজ করা যায় কিনা তা নিয়ে ভাবা হচ্ছে। যাতে পূর্ব এশিয়া, চীন থেকে কোনো পর্যটক এলে এসব স্থানগুলো একসঙ্গে দেখতে পান। এ ব্যাপারে থাইল্যান্ডের সঙ্গে কিছু কাজ হয়েছে। শুধু বৌদ্ধদের জন্য একটি টিভিসি বানিয়ে বিভিন্ন দেশে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ পর্যটন বোর্ডের নির্বাহী পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) আবু তাহের মোহাম্মদ জাবের। একান্ত স্বাক্ষাৎকারে দৈনিক আনন্দবাজারকে এসব কথা বলেন।

সম্প্রতি (১৩-১৪ সেপ্টেম্বর) ভুটান ও বাংলাদেশ পর্যটন নিয়ে একটি চুক্তিতে ঐক্যমত হয়েছে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশে ভুটানের পর্যটকদের আনতে কী ধরনের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে? এই প্রশ্নের জবাবে আবু তাহের মোহাম্মদ জাবের বলেন, ভুটান ও বাংলাদেশের পর্যটনশিল্প বিকাশে ২০১৯ সালে একটি সমঝোতা স্বারক স্বাক্ষরিত (এমওইউ) হয়েছে। সেখানে দুটি কাজ করা হয়েছে। প্রথমত আমাদের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ট্যুরিজম এন্ড হসপিটালিটি, এটি রাজধানী ঢাকার হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের অফিস ব্লকে। সেখানে চার মাস মেয়াদী প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা রয়েছে।

পর্যটন বোর্ডের নির্বাহী পরিচালক বলেন, প্রথম ব্যাচটি শুরু হয়েছে। চারটি বিষয়ে সার্টিফিকেট কোর্স এটি। এই ইনস্টিটিউটের সঙ্গে রয়েল ভুটান একাডেমি অব ট্যুরিজম প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে এই ইনস্টিটিউটের সংযোগস্থাপনে কাজ করা হচ্ছে। এতে উভয় দেশের শিক্ষার্থীদের একে অপরের দেশে পাঠানো ও প্রচার চালানো। এসবের প্রাথমিক কিছু কাজ হয়েছে।

আবু তাহের মোহাম্মদ জাবের বলেন, দ্বিতীয়ত ভুটানের কিছু ট্যুর অপারেটরকে এ দেশে নিয়ে এসে আমাদের ট্যুর অপারেটর সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেয়া। এর মধ্যে ভারতের ত্রিপুরা, আসাম, মেঘালয় ও ওয়েস্ট বেঙ্গল এবং ভুটান, নেপাল ও শ্রীলঙ্কা থেকে ১০জন ট্যুর অপারেটরকে এনে আমাদের ট্যুর অপারেটর সঙ্গে বসিয়ে দেব। এদের কাজ হবে যদি ভুটানে কোন পর্যটক আসে তাদের বাংলাদেশে বা এসবস্থানগুলোতে আসতে উদ্বুদ্ধ করা। ইতোমধ্যে নেপালের ১০ জন ট্যুর অপারেটরকে জুলাই মাসে বাংলাদেশে নিয়ে এসেছিলাম। শ্রীলঙ্কা, ভুটান ও মেঘালয়ের সঙ্গে কথা প্রায় চূড়ান্ত হয়েছে। ধীরে ধীরে অন্যান্য দেশের সঙ্গেও তা করা হবে।

আরও পড়ুনঃ  সীতাকুণ্ডে অগ্নিকাণ্ড : নিহতদের ২ লাখ, আহতদের ৫০ হাজার টাকা সহায়তা

আবু তাহের মোহাম্মদ জাবের বলেন, ভুটানের পর্যটনস্থানগুলো গুছানো, পরিপাটি ও সুশৃঙ্খল কিন্তু আমাদের দেশে তা নয়। যদি বলি আমাদের পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত ও ম্যানগ্রোব বন সুন্দরবন আছে। শুধু বললেই ত কেউ আসবে না। সেখানে যাতায়াত ও থাকার ব্যবস্থা ভালো হতে হবে। তা ছাড়া অন্যান্য দেশের তুলনায় আমাদের দেশে ভাড়া বেশি। খাবার ব্যয় বেশি। প্রশ্ন করলে বলে আমার হোটেল তো খালি থাকে না। আবার অনেকে বলছেন কক্সবাজারে যে ব্যয় তা থেকে সিঙ্গাপুরে কম। সেক্ষেত্রে পর্যটকরা অন্য দেশে চলে যায়।

পর্যটন বোর্ডের নির্বাহী পরিচালক বলেন, গত ১৯ সেপ্টেম্বর বেসামরিক বিমান পরিহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটি থেকে একটি নির্দেশনা এসেছে আমাদের দেশের হোটেলগুলোর ভাড়া-খাওয়া যৌক্তিক পর্যায়ে নিয়ে আসা। তবে এসব আমাদের নিয়ন্ত্রণের মধ্যে নেই। কেননা তৃতীয়, চতুর্থ ও পাঁচ তারকা হোটেলগুলো মন্ত্রণালয় তদারকি করে। তার নিচেরগুলো জেলাপ্রশাসন নিয়ন্ত্রণ করে। আমরা একটি সুপারিশমালা তৈরি করছি কোন হোটেলের ভাড়া ও খাবার মূল্য কত হতে পারে? পরবর্তীতে মন্ত্রণালয় কী করা যায় তা সিদ্ধান্ত নেবে।

গৌতম বুদ্ধের পরে অতীশদীপংকরকে বৌদ্ধধর্মের লিজেন্ট হিসেবে মূল্যায়ন করা হয়। যার বাড়ি মুন্সিগঞ্জ জেলায়। আবার এদেশে প্রচুর বৌদ্ধ মন্দির ও স্থাপত্য রয়েছে। এসব নিয়ে বিশেষ কোন পর্যটনের উদ্যোগ নিবেন কিনা? এ প্রশ্নের উত্তরে বাংলাদেশ পর্যটন বোর্ডের নির্বাহী পরিচালক বলেন, ২০১৬ সালে এসব বিষয়ে একটি সমাবেশ হয়েছিল। সেখানে বেশকিছু সুপারিশ ছিল। তার বেশিরভাগই বাস্তবায়ন হয়নি। এখন চিন্তা করছি নেপাল, ভুটান ও ভারতের বুদ্ধিস্ট ডেসটিনেশনগুলো আছে তাতে সমন্বয় করা যায় কিনা। পূর্ব এশিয়া, চীন থেকে কোন মানুষ আসলে তারা যেন এসব স্থানগুলো একসাথে দেখতে পায়। এ ব্যাপারে থাইল্যান্ডের সঙ্গে কিছু কাজ হয়েছে। তবে লোকবল কম থাকায় এগিয়ে যেতে পারছি না। শুধু বৌদ্ধদের জন্য একটি টিভিসি বানিয়ে বিভিন্ন দেশে পাঠানো হয়েছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন