বৃহস্পতিবার, ১৯শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৪ঠা আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পাহাড়ে অর্কিডে বাণিজ্যের সম্ভাবনা

পাহাড়ে অর্কিডে বাণিজ্যের সম্ভাবনা
  • আভিজাত্য-সৌন্দর্যের প্রতীক অর্কিডের চাষ বাড়ছে বান্দরবানে

ভালোবাসা, আভিজাত্য এবং সৌন্দর্যের প্রতীক অর্কিড। পার্বত্য জেলা বান্দরবানে দিন দিন বাড়ছে অর্কিড চাষ। অর্কিড ফুল চাষের মাধ্যমে কর্মসংস্থান বাড়ানো এবং গাছ-ফুল রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের সম্ভাবনা তৈরী হওয়ায় এবং চাহিদা থাকায় পাহাড়ে দেখা দিয়েছে অর্কিডের বাণিজ্যিক সম্ভাবনা। শুরুর দিকে শখের বসে অনেকে সংগ্রহ করলেও বর্তমানে অনেকে বাণিজ্যিকভাবে শুরু করেছে অর্কিড চাষ। বান্দরবানে ক্রাইটোক্সাম, ডেন ফার্মেরী, ডেন এগ্রাগেটাম, ডেন ক্রিপিডেটাম, পিয়ারেড্ডী, ডেন প্রিমুলিনাম, বাল্বোফাইলাম’সহ প্রায় ৪৯ প্রজাতির অর্কিড রয়েছে। পাহাড়ের বিভিন্ন বড় বড় গাছের মগ ডাল থেকে এসব অর্কিড সংগ্রহ করে পরিচর্যার মাধ্যমে বাগানে সংরক্ষণ করে অর্কিড চাষিরা।

বান্দরবান পৌরসভার কালাঘাটা এলাকার নয়ন মাস্টার নামে এক অর্কিড চাষি বলেন, তিনি নেট এবং বিভিন্ন ইউটিউবে ভিডিও দেখে অর্কিড সম্পর্কে জেনেছেন। পরবর্তীতে তিনি তার ভাইয়ের মাধ্যমে থাইল্যান্ড থেকে কিছু অর্কিড চারা সংগ্রহ করেন। মূলত এ অর্কিড দিন দিন হারিয়ে যাওয়ার কারণে সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে এ অর্কিড বাগান করেছেন বলে জানান তিনি। পাহাড়ে অপরিকল্পিত জুমচাষ, বনাঞ্চল উজাড় এবং পরিবেশ ধংসের কারণে ক্রমশ হারিয়ে যাচ্ছে মূল্যবান অর্কিড গাছ। তাই সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় ক্লোনিং করে অর্কিড গাছ সংরক্ষণের জন্য ল্যাব স্থাপনের দাবি জানান এ চাষি।

কালাঘাটার আরেক বাসিন্দা প্রিয়া বড়ুয়া বলেন, আমরা আগে জানতাম না নয়ন ভাইয়ের এত সুন্দর অর্কিড বাগান রয়েছে। যখন দেখি বিভিন্ন এলাকা থেকে এমনকি ঘুরতে আসা পর্যটকরাও নয়ন ভাইয়ের অর্কিড বাগান দেখতে আসছে। এর পরে জানতে পারি সুন্দর অর্কিড বাগান করেছে নয়ন ভাই। নয়ন ভাইয়ের এ অর্কিড বাগানের মাধ্যমে সারাদেশে বান্দরবানের নাম ফুটে উঠবে।

আরও পড়ুনঃ  কাপাসিয়ায় ব্যাপক সাড়া ফেলেছে ‘জামাল আহমেদ পাঠাগার’

বান্দরবান সদর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা ওমর ফারুক বলেন, পাহাড়ি জেলা বান্দরবানে দিন দিন বাড়ছে অর্কিড চাষ। আকর্ষণীয় রং, বিভিন্ন ধরনের গড়ন, ঔষধি গুণাগুণ, সুগন্ধি, দীর্ঘ স্থায়িত্বকাল বিভিন্ন বৈশিষ্টের কারণে বাড়ির ছাদে, বারান্দায় এবং ঘরের উঠানে সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য অনেকেই অর্কিড গাছ সংরক্ষণে আগ্রহী হয়ে উঠছে। তিনি আরও বলেন, কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে সৌখিন মানুষ ও চাষিদেরকে অর্কিড চাষ সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা দেয়া হচ্ছে। কিভাবে সংগ্রহ এবং পরিচর্যা করবে। পাহাড়ে অর্কিড চাষের বাণিজ্যিক সম্ভাবনা দেখা দেয়ায় সরকারি সহযোগিতার কথা জানান এ কর্মকর্তা।

কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, পার্বত্য জেলা বান্দরবানের আবহাওয়া অর্কিড চাষের জন্য বেশ উপযোগী। বর্তমানে বান্দরবানের বিভিন্ন বাগানীর সংগ্রহে প্রায় ১০০ প্রজাতির অর্কিড রয়েছে। জাত ভেদে সারাবছরই অর্কিডের ফুল ফোটে। তবে মার্চ এবং মে মাসে দেশীয় অর্কিড সর্বাধিক পাওয়া যায়। আবার কিছু কিছু অর্কিড বছরে দু-তিনবার ফোটে। প্রতি গাছে জাতভেদে দু-চারটি স্টিক পাওয়া যায়। 

সংবাদটি শেয়ার করুন