ঢাকা | শুক্রবার
২রা মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ,
১৯শে বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কর্মহীন সময়ে জেলেরা পাবেন সহায়তা

কর্মহীন সময়ে জেলেরা পাবেন সহায়তা

মাছ আহরণ বন্ধ থাকাকালে জেলেদের ভিজিএফ দেয়াসহ বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করছে সরকার। বিকল্প হিসেবে তাদের রিকশা, ভ্যান, গরু, হাঁস-মুরগির বাচ্চা পালনের জন্য দেয়া হচ্ছে।

ইলিশের প্রজনন মৌসুমসহ জাটকা ধরা নিষিদ্ধ করার কারণে বছরে কয়েক ধাপে প্রায় তিন মাস সারাদেশে ইলিশ আহরণ নিষিদ্ধ থাকে। নিরাপদ প্রজনন স্বার্থসহ জাটকা বড় হবার সময় ইলিশ সংরক্ষণ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হয়ে থাকে। এতে বছরের বড় একটা সময় ধরে শিকারী ও জেলেরা কর্মহীন হয়ে পড়েন। বন্ধ হয়ে যায় তাদের আয়। মানবেতর জীবন যাপন করতে হয় তাদের। এমন পরিস্থিতিতে জেলেদের পাশে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে সরকার। কর্মহীন এই সময়ে জেলেদের রিকশা ভ্যান চালনা, গরু ও হাঁস-মুরগি পালন বিষয়ে সহায়তা দেয়া হবে।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেছেন, ইলিশ ধরা বন্ধ থাকাকালে জেলেদের বিকল্প কর্ম ব্যবস্থার সুযোগ থাকবে। মাছ আহরণ বন্ধের সময় নির্ধারণের যৌক্তিক, গবেষণালব্ধ ও বাস্তবতাসম্পন্ন কারণ রয়েছে। মাছ আহরণ বন্ধ থাকাকালে জেলেদের ভিজিএফ দেয়াসহ বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করছে সরকার। জেলেদের বিকল্প কাজের জন্য রিকশা, ভ্যান, গরু, হাঁস-মুরগির বাচ্চা দেয়া হচ্ছে। যাতে মাছ ধরা বন্ধ থাকার সময় তারা কর্মহীন না হয়।

রাজধানীর একটি হোটেলে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিএফআরআই) বাস্তবায়নাধীন ইলিশ গবেষণা জোরদারকরণ প্রকল্পের আওতায় বলেশ্বর নদীতে ইলিশের প্রজনন ক্ষেত্র সংরক্ষণ বিষয়ক অংশীজন কর্মশালায় গতকাল সোমবার প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এ কথা বলেন।

বর্তমানে সাড়ে ৮ লাখ টন ইলিশ আহরণ সম্ভব জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, এক সময় শঙ্কা তৈরি হয়েছিল যে, নতুন প্রজন্মকে বলতে হবে ইলিশ জাতীয় এক প্রকার মাছ ছিল। তার গায়ের রং এমন ছিল, স্বাদ এমন ছিল। একটা সময় একেবারেই ইলিশ হারিয়ে যাচ্ছিল। সেই জায়গা থেকে ইলিশের উৎপাদন এমন জায়গায় আনা হয়েছে যে, বিজ্ঞান সম্মতভাবে সাত লাখ মেট্রিক টন আহরণের পর আরো দেড় লাখ মেট্রিক টন ইলিশ আহরণ করা সম্ভব।

প্রবণতা আছে যতক্ষণ নদীতে মাছ আছে, ততক্ষণ আমরা সব মাছ তুলবো এমন মন্তব্যে করে মন্ত্রী বলেন, এ ধারণাটা মৎস্যখাতে ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। একটা পরিমাণ মাছ নদী বা জলাশয়ে থাকতে হবে। নদী থেকে কতটা মাছ তোলা যাবে তার বিজ্ঞান সম্মত অভিজ্ঞতা ও রিপোর্ট রয়েছে। সার্বক্ষণিক আমরা যদি মাছ আহরণ করতে দেই, তাহলে এক সময় পানি থাকবে কিন্তু মাছ থাকবে না।

ইলিশের প্রজনন ক্ষেত্র ও অভয়াশ্রম সংরক্ষণ অত্যন্ত জরুরি উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, নদী দূষণ, অপরিকল্পিত বালু উত্তোলন, নদীর গভীরতা কমে যাওয়া, অভয়াশ্রমে অবৈধ মাছ আহরণ, অপরিকল্পিত মাছ আহরণ, নদীতে ডিম ছাড়ার পরিবেশ বিঘ্নিত করাসহ নানা কারণে কারণে ইলিশের উৎপাদন কমে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়। তখন ইলিশ উৎপাদনে শীর্ষ দেশের পরিচয় আমাদের আর থাকবে না।

আনন্দবাজার/শহক

সংবাদটি শেয়ার করুন