বিপর্যয়ে রয়েছে দেশের তৈরি পোশাক খাত। প্রতিদিনই বন্ধ হচ্ছে কোনও না কোনও পোশাক কারখানা। যার ফলে চাকরি হারাচ্ছেন শত শত পোশাক শ্রমিক। তাই অর্থনীতির চাকার গতিহারার পাশাপাশি ধস নেমে এসেছে রফতানিতে।
বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি রুবানা হক বলেন, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত আর্থিক সমস্যার কারণে ৬০টি (বিজিএমইএ’র সদস্যভুক্ত) পোশাক কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। যার ফলে চাকরি হারিয়েছেন ২৯ হাজার ৫৯৪ জন পোশাক শ্রমিক।
তিনি বলেন, আর্থিক সংকট যেভাবে বাড়ছে, তাতে মনে হচ্ছে আগামী দিনে তৈরি পোশাক খাত তথা রফতানি খাত আরও খারাপ অবস্থার দিকেই যাবে। ভালো হওয়ার কোনও লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।
তবে বিজিএমইএ’র সদস্যের বাইরে আরও ৪০টির মতো কারখানা বন্ধ হয়েছে। এতে চাকরি হারিয়েছেন ৬০ হাজারেরও বেশি শ্রমিক। রফতানিতে বড় ধরনের যে ধস নেমে এসেছে তার প্রমাণ পাওয়া বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনেও।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বছরের অক্টোবরে তুলানায় এ বছরের রফতানি কমেছে ১৭ দশমিক ১৯ শতাংশ। যেখানে ২০১৮ সালে রফতানি আয় হয়েছিল ৩৭১ কোটি ১১ লাখ ডলার। আর ২০১৯ সালে রফতানি আয় হয়েছে ৩০৭ কোটি ৩২ লাখ ডলার। অর্থাৎ গত বছরের অক্টোবরের তুলনায় এই বছরের রফতানি আয় কমেছে প্রায় ৬৪ কোটি ডলার।
পোশাক খাতের ব্যবসায়ীরা বলছেন, ক্রয় আদেশ (অর্ডার) কমে যাওয়ার কারণে মূলত তৈরি পোশাকের রফতানি আয় কমছে। এছাড়া, কিছু নতুন প্রতিযোগী দেশও (মিয়ানমার, ভারত, পাকিস্তান ও ভিয়েতনামে) তৈরি হয়েছে।
রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য বলছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে ৮৩ শতাংশের বেশি আয় হয় পোশাক রফতানিতে। এ সময় তৈরি পোশাক রফতানি করে বাংলাদেশ আয় করেছে এক হাজার ৫৭ কোটি ৭৩ লাখ ৮০ হাজার ডলার।
আনন্দবাজার/এম.কে