না ফেরার দেশে চলে গেলেন অস্কারজয়ী প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ অভিনেতা সিডনি পটিয়ার। বাহামার প্রধানমন্ত্রী ফিলিপ ডেভিসকে উদ্ধৃত করে রয়টার্স জানিয়েছে, শুক্রবার ৯৪ বছর বয়সে মারা যান এই অভিনেতা।
ফিলিপ ডেভিস শুক্রবার ফেইসবুকে এক বিবৃতিতে বলেছেন, অত্যন্ত দুঃখের বিষয় যে আমি আজ সকালে স্যার সিডনি পটিয়ারের মৃত্যুর খবর পেয়েছি। তবে আমরা তার মৃত্যুতে শোক পালন করার পাশপাশি আমরা একজন মহান বাহামিয়ানের জীবন উদযাপনও করছি।
তিনি বলেন, স্যার সিডনি পটিয়ার ছিলেন একজন সাংস্কৃতিক আইকন, একজন অভিনেতা, চলচ্চিত্র পরিচালক, নাগরিক ও মানবাধিকার কর্মী, এবং পরবর্তীতে তিনি হয়েছিলেন একজন কূটনীতিক।
হলিউডে বর্ণবাদের মূলোৎপাটনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা পটিয়ারের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন অনেক খ্যাতিমান ব্যক্তিত্ব। তার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা, অস্কার বিজয়ী ভিওলা ডেভিস, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব অপরাহ উইনফ্রে ।
১৯৬৩ সালে বাহামার নাগরিক পটিয়ার ‘লিলিস অব দ্য ফিল্ড’ সিনেমায় মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করে সেরা অভিনেতার অস্কার পুরস্কার জেতেন।
এছাড়া, ২০০৯ সালে ওবামা প্রেসিডেন্ট থাকাকালে পটিয়ারকে যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান প্রেসিডেন্সিয়াল মেডেল অফ ফ্রিডম দেওয়া হয়েছিল।
সিডনি পটিয়ার আমেরিকার মিয়ামিতে ১৯২৭ সালে একটি দরিদ্র পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তবে তিনি তার ছেলেবেলা কাটান বাহামা দ্বীপপুঞ্জে।
মাত্র ১৬ বছর বয়সে নিউ ইয়র্কে পাড়ি জমান পটিয়ার। এর আগে সেনাবাহিনীতে একটি কাজ নেওয়ার জন্য তাকে বয়স সম্পর্কে মিথ্যা তথ্য প্রদান করতে হয়েছিল। অভিনয়ের শিক্ষানবিশ সময়ে থালাবাসন ধোয়াসহ অনেক ছোটখাটো কাজ করেছেন তিনি।
১৯৪৮ সালে পটিয়ার অভিনীত ‘অ্যানা লুকাস্টা’ ব্রডওয়েতে সাফল্য অর্জন করার দুই বছর পর রিচার্ড উইডমার্কের সাথে ‘নো ওয়ে আউট” চলচ্চিত্রে অভিনয়ের সুযোগ পেয়ে যান পটিয়ার। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে।
১৯৭৪ সালে ব্রিটেনের রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ সিডনি পটিয়ারকে নাইট উপাধিতে ভূষিত করে। জাপান এবং জাতিসংঘের সাংস্কৃতিক সংস্থা ইউনেস্কোতে বাহামিয়ান রাষ্ট্রদূত হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন এই অভিনেতা।
১৯৯৪ থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত ওয়াল্ট ডিজনি কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদে দায়িত্ব পালন করেছেন কিংবদন্তি পটিয়ার।
আনন্দবাজার/ টি এস পি