- জুনে ছিল ১৫.১৮, আগস্টে ১৫.৬২
- একই সময়ে জাতীয় মূল্যস্ফীতি ৫.৫৪
- সংকট দেখিয়ে দাম বৃদ্ধি অব্যাহত
সরকারি পর্যায়ে চাল সংগ্রহের দাম বৃদ্ধি, জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর প্রভাব পড়েছে দেশের চালের বাজারে। তবে পাইকারি ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, সংকট দেখিয়ে বাজারকে চাঙ্গা রাখতে কৃত্রিমভাবে দাম বাড়ানো হচ্ছে। গত তিন মাসে চালের দাম দুবার বেড়ে যাওয়ায় নাগরিক, বিশেষ করে নিম্ন আয়ের মানুষরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন সবচেয়ে বেশি।
জুন মাস থেকে দেশের বাজারে চালের দাম মাত্রাতিরিক্তভাবে বাড়তে থাকে। জুন মাসে চালের মূল্যস্ফীতির হার ছিল ছিলো ১৫ দশমিক ১৮ শতাংশ। যা আগস্ট মাসে ১৫ দশমিক ৬২ ছিলো। অথচ একই সময়ে জাতীয় মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৫ দশমিক ৫৪।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জুলাই-এ পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে চালের গড় মূল্যস্ফীতির হার ছিলো ১৫ দশমিক ৮২ শতাংশে, যা সাম্প্রতিক সময়ের সর্বোচ্চ। অথচ এপ্রিল ও মে মাসে চালের মূল্যস্ফীতির হার ছিল যথাক্রমে ১২ দশমিক ৪৫ ও ১২ দশমিক ৭৮ শতাংশ।
দেশে ভোগ্যপণ্যের সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জ। সেখান থেকে গত এক সপ্তাহ ধরে দেশের বিভিন্ন মোকাম থেকে চাল সরবরাহ কমিয়ে দেয়া হয়েছে। এমনিতে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধিজনিত কারণে পরিবহন খরচ বেড়ে যাওয়ায় চালের বাজার কিছুটা ঊর্দ্ধমুখী ছিল। কিন্তু নতুন মৌসুমের চাল সরবরাহ শুরু হলে বাজারে সংকট দেখানো হচ্ছে মোকামগুলো থেকে।
গত তিনমাসে মাসে চালের দাম বেড়েছে দুই দফায়। এর আগের ছয়মাসে (এপ্রিল-সেপ্টেম্বর) জাতীয় মূল্যস্ফীতির চেয়ে চালের মূল্যস্ফীতি ছিল দ্বিগুণেরও বেশি। এতে সবচেয়ে বেশি নাজুক অবস্থায় আছেন স্বল্প আয়ের মানুষ। তাদের চাল ভোগের পরিমাণ মধ্যবিত্ত ও উচ্চবিত্তের চেয়ে অনেক বেশি। সর্বশেষ এক সপ্তাহের ব্যবধানে চালের দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি দুই থেকে চার টাকা। পাইকারি বাজারে দাম বেড়ে যাওয়ার প্রেক্ষিতে খুচরা বাজারেও চালের দাম কেজিপ্রতি ৩ থেকে ৪ টাকা করে বেড়েছে।
এদিকে চলতি খাদ্য সংগ্রহ মৌসুমে সরকার ৩ লাখ টন ধান ও ৫ লাখ টন সিদ্ধ চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। ধান-চাল সংগ্রহের এই কর্মসূচি চলবে ২০২২ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। এরমধ্যে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে ৬৫ শতাংশ, চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারির মধ্যে ৮৫ শতাংশ এবং ২০২২ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে ধান-চাল সংগ্রহের শতভাগ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে চায় খাদ্য বিভাগ।
গত ৮ নভেম্বর খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মোছাম্মৎ নাজমানারা খাতুন স্বাক্ষরিত এক পরিপত্রে অভ্যন্তরীণ খাদ্য সংগ্রহ নীতিমালা-২০১৭ অনুসারে খাদ্য নিরাপত্তা ও কৃষকের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে বিশেষ নির্দেশনা জারি করা হয়। নির্দেশনার আলোকে ইতোমধ্যে মিলারদের সঙ্গে চুক্তির মাধ্যমে আমন ধানের সরকারি ক্রয়মূল্য প্রতিকেজি ২৭ টাকা, চালের মূল্য ৪০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
আনন্দবাজার/শহক