চলতি বছর আর্থিক লাভের আশায় অতিরিক্ত আলু চাষ করছেন সব কৃষকরা। কিন্তু লাভের আশায় অতিরিক্ত আলু চাষ করা ঠিক হবে না বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, আলুর দাম ভালো থাকলেও যে কোন সময়ে মূল্য বিপর্যয় ঘটতে পারে। ফলে এতে কৃষকরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে।
রংপুরের পীরগাছা উপজেলার কৃষক আমজাদ হোসেন, চলতি বছর ক্ষতি পুষিয়ে নিতে নতুন করে দুই বিঘা জমিতেই আলু চাষ করছেন। বাজারে এবার আলুর মূল্য ভালো থাকায় তিনি আলু চাষে ঝুঁকেছেন। আশা করছেন আলু বিক্রি করে বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবেন।
শুধু আমজাদ হোসেন নন, তার মতো অনেক কৃষক বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে ও বেশি লাভের আশায় নতুন করে সবজি চাষে মাঠে নেমেছেন। আলুসহ নানা রবিশস্যের চাষ শুরু করেছেন।
চলতি বছর উপজেলায় ১০ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে আলুসহ রবিশস্য আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। গেল বছরের তুলনায় এবার প্রায় এক হাজার ৮০০ হেক্টর জমিতে বেশি আলুর আবাদ করা হয়েছে। তবে বাস্তবে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাওয়ার অনেক সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু যে আশায় কৃষকরা আলু চাষে ঝুঁকছে তা পূরণ নাও হতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন অনেকে।
স্থানীয় কৃষি বিভাগ থেকে চাহিদার অতিরিক্ত আলু উৎপাদনে নিরুৎসাহিত করা হলেও কৃষকরা টা মানছেন না। তারা বাজারে মূল্য ভালো থাকায় আলু চাষে কোমর বেঁধে মাঠে নেমেছেন সব কৃষকরা।
শিবদেব চরের কৃষক আতাউর রহমান বলেন, সকল ধরনের আবাদ করা সম্ভব হয় না। তবে চরের জমিতে আলু বেশি চাষ হয়। তাই সকলে আলু চাষের দিকে ঝুঁকছে। চলতি বছর কৃষকদের স্বপ্ন আলু চাষের মাধ্যমে বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শামিমুর রহমান জানান, চরের মাটি আলু চাষের জন্য ব্যাপক উপযোগী। আলুর ফলনও অনেক ভালো হয়। এবার বাজারে আলুর মূল্য ভালো থাকায় চাষাবাদে কৃষকদের আগ্রহ অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে বেশি দাম পাওয়ার আশায় অধিক আলু চাষ করা মোটেই ঠিক হবে না।
রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. সারোয়ারুল হক জানান, চলতি বছর আলুর মূল্য ভালো হলেও কতদিন স্থির থাকবে তা নিশ্চিত করে কেউ বলতে পারবে না। তাই চাহিদার অতিরিক্ত আলু উৎপাদনের প্রয়োজন নেই। আমরা কৃষি অধিদপ্তর থেকে কৃষকদের অতিরিক্ত আলু চাষে নিরুৎসাহিত করছি। তাদের ভুট্টাসহ বিকল্প ফসল চাষে উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছি।
আনন্দবাজার/ এইচ এস কে