সম্প্রতি ভারতের আসামে জাতীয় নাগরিকপঞ্জি শুরু হওয়ার পর থেকেই ব্যাপারটি নিয়ে বিভিন্ন ধরনের বিতর্ক উঠেছে। ভারতের নাগরিকত্ব আইন পাশ হওয়ার পরে এই বিরোধ আরও কয়েক গুণ বৃদ্ধি পায়। এর মধ্যে তৈরি হয়েছে ডিটেনশন ক্যাম্পও। কিন্তু এসবের মধ্যেই ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়েছে, ১৫ হাজার বাংলাদেশি নাগরিককে ভারতের নাগরিকত্ব দেওয়া হয়েছে গত ৫ বছরে।
জানা গেছে, গতকাল রবিবার ভারতের লোকসভায় এই পরিসংখ্যান দেয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। একটি লিখিত উত্তরে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিত্যানন্দ রাই বলেন, গেল ৫ বছরে ১৫ হাজার বাংলাদেশি নাগরিককে ভারতের নাগরিকত্ব দেওয়া হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে ৮৩ হাজার ৮ জনকে ‘সন্দেহজনক ভোটার’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। তাদের অসমের ফরেনারস ট্রাইবুনালে রাখা হয়েছে। সেই সাথে গত ৫ বছরে মোট ৮৬ হাজার ৭৫৬ জনকে বিদেশি বলে চিহ্নিত করা হয়েছে।
নিত্যানন্দ রাই আরও জানান, আসাম সরকার কেন্দ্রকে জানিয়েছে, আসামের ফরেনারস ট্রাইবুনালে সন্দেহজনক ভোটার হিসেবে ৮৩ হাজার ৮ জনের মামলা এখনও বাকি রয়েছে। ২০১৫ সাল থেকে ২০২০ সালের জুন মাস পর্যন্ত আসামে মোট ৮৬ হাজার ৭৫৬ জনকে বিদেশি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
এই ট্রাইবুনাল ভারতের মধ্যে একমাত্র আসামে কাজ করছে। এই ব্যাপারে বিস্তারিতভাবে নিত্যানন্দ জানান, ইতোমধ্যে বিদেশিদের রাখার জন্য ডিটেনশন সেন্টার তৈরি করার কাজ বিভিন্ন রাজ্য সরকার ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলি করছে। বেআইনিভাবে ভারতে থাকা মানুষদের সংখ্যার ওপর নির্ভর করে এই ডিটেনশন সেন্টার তৈরি করা হচ্ছে। একটা নির্দিষ্ট সময় সেইসব সেন্টারে থাকার পরে তাদের নিজেদের দেশে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
ডিটেনশন সেন্টার তৈরি এবং কোথায় কতজনকে রাখা হচ্ছে সেই ব্যাপারে পুরো সিদ্ধান্তই রাজ্যগুলি নিচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রতিমন্ত্রী বলেন, বিভিন্ন রাজ্য সরকার ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলি কত ডিটেনশন সেন্টার তৈরি করছে ও তাতে কত বিদেশি নাগরিক রয়েছে সে সম্পর্কে কেন্দ্র কোনো সিদ্ধান্ত নেয় না। রাজ্যই সেটা দেখে।
আসামে নাগরিকপঞ্জী শুরু হওয়ার পরেই বিরোধী দল দাবি করে, ইচ্ছাকৃতভাবে নাগরিকদের মধ্যে বিভেদ তৈরির চেষ্টা করা হচ্ছে। বয়স্ক অনেক মানুষেরই জন্মের পরিচয়পত্র নেই। তাহলে কি তারা ভারতীয় নাগরিক নন।
আনন্দবাজার/এইচ এস কে