বাংলাদেশ জুট মিলস করপোরেশনের (বিজেএমসি) কাছে পাট সরবরাহ বাবদ দেশের প্রান্তিক চাষী এবং পাট ব্যবসায়ীদের প্রায় ২৬৫ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে। বর্তমানে করোনাকালে নানা খাতের জন্য সরকারের বিভিন্ন প্রণোদনা থাকলেও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের প্রণোদনা তো নয়ই, পাওনাই পরিশোধ করা হচ্ছে না। বিজেএমসির কাছে ২৬৫ কোটি টাকা পাওনা আদায়ে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ দাবি করা হয়েছে।
গতকাল রবিবার ( ১৬-০৮-২০২০ ) জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে পাট ব্যবসায়ী সমিতি এ দাবি জানায়।
সংবাদ সম্মেলনে সমিতির আহ্বায়ক শামীম আহমেদ মোড়ল এবং কার্যকরী সদস্য মো. সিয়াম হোসেনসহ অন্যান্য নেতা বক্তব্য রাখেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন মো. টিপু সুলতান, আবদুল হাই, নজরুল ইসলাম, মোস্তাক ভূঁইয়া, এহতেসাম খান, হাসান আলি, মুজিব হোসেন চৌধুরী তুরান, নাদেম দত্ত, মধুসূদন দে, মো. সোহেল মিয়া এবং শামিনুল ইসলাম শাওন।
ওই সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বাংলাদেশের রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলগুলোর কাছে গত ২০১৬-১৭ অর্থবছর থেকে ২০১৯-২০ অর্থবছর পর্যন্ত পাট সরবরাহ বাবদ দেশের প্রান্তিক চাষী ও পাট ব্যবসায়ীদের প্রায় ২৬৫ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে। অথচ সেই টাকা পরিশোধের ব্যাপারে দুঃখজনকভাবে উদাসীন হয়ে আছে বিজেএমসি। পরিণতিতে ব্যবসা হারিয়ে পুঁজিশূন্য এবং সর্বস্বান্ত হয়ে পথে বসার উপক্রম ঘটেছে এ মানুষগুলো ও তাদের পরিবারের। মরিয়া হয়ে তাই দেশের ব্যবসায়ী নেতারা এর আশু প্রতিকার ও পাওনা টাকা আদায়ে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে গত ২০ জুলাই প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি পেশ করেন।
এই ব্যাপারে পাট ব্যবসায়ী সমিতির নেতারা বলেন, জাতীয় সংসদে শাজাহান খান এমপি প্রশ্নোত্তর পর্বে পাটমন্ত্রীর কাছে জানতে চেয়েছিলেন, পাট ব্যবসায়ীদের পাওনা টাকা কবে পরিশোধ হবে। উত্তরে পাটমন্ত্রী বলেন, পাটকলগুলোয় পাটপণ্য মজুদ রয়েছে। সেগুলো বিক্রি করে ব্যবসায়ীদের টাকা পরিশোধ করা হবে। কিছুদিন আগেই ৩৩২ কোটি টাকায় এসব পাটপণ্য বিক্রিও করেছে বিজেএমসি, যা দিয়ে পাট ব্যবসায়ীদের এ পাওনা টাকা পরিশোধ করা সম্ভব। অথচ এ পাওনা পরিশোধের ব্যাপারে বিজেএমসির কাছ থেকে আজ পর্যন্ত কোনো ধরনের আশ্বাস পাওয়া যায়নি।
পাট ব্যবসায়ী নেতারা জানান, সরকার সম্প্রতি দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত ২৫টি পাটকল বন্ধ ঘোষণা করেছে। এ সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে সরকারের মন্ত্রী পর্যায়ে শ্রমিক নেতাসহ সংশ্লিষ্টদের সাথে দফায় দফায় বৈঠক করা হলেও পাট ব্যবসায়ীদের সাথে কোনো আলোচনা করা হয়নি। অথচ দেশের সুসময় এবং দুঃসময়ে বিজেএমসির পাটকলগুলোয় নিয়মিত পাট সরবরাহ করে তারাই কিন্তু মিলের চাকা সচল রেখেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে পাট ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে ১৮ আগস্ট সকাল ১০ টায় রাজধানীর মতিঝিলে বিজেএমসি প্রধান কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
আনন্দবাজার/এইচ এস কে