অবশেষে আন্তর্জাতিক বাজারে কমতে শুরু করেছে দুগ্ধপণ্যের দাম। করোনাভাইরাসের কারণে চলতি বছরের শুরু থেকে দীর্ঘদিন আন্তর্জাতিক বাজারে দুগ্ধপণ্যের দামে টালমাটাল অবস্থা ছিল। তবে মে মাসের শেষ নাগাদ দুগ্ধপণ্যের গড় দাম বাড়তে শুরু করে। এবার কমতে শুরু করেছে সেই দাম।
দুগ্ধপণ্যের আন্তর্জাতিক নিলাম গ্লোবাল ডেইরি ট্রেড অকশনের (জিডিটি) সর্বশেষ আয়োজনে মূল্যসূচক আগের নিলামের তুলনায় ৫ দশমিক ১ শতাংশ কমে গেছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চীনসহ এশিয়ার বাজারে চাহিদা হ্রাস পাওয়ায় দুগ্ধপণ্যের দাম কমতে শুরু করেছে।
চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকের (জানুয়ারি-মার্চ) পুরোটাই নিউজিল্যান্ডে অনুষ্ঠিত জিডিটি অকশনে দুগ্ধপণ্যের মূল্যসূচক নিম্নমুখী ছিল। স্থবির ছিল আমদানি-রফতানিসহ সামগ্রিক অর্থনীতি ও বাণিজ্যের গতি। ফলে অন্যতম প্রধান বাজারগুলোর টালমাটাল পরিস্থিতি দীর্ঘদিন দুগ্ধপণ্যের চাহিদায় পতন ঘটিয়ে দাম কমিয়ে রেখেছিল।
এপ্রিল নাগাদ চীনে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। ধীরে ধীরে বাড়তে শুরু করে দুগ্ধপণ্যের চাহিদাও। এ অবস্থায় দুগ্ধপণ্যের গড় দাম বাড়তে শুরু করে, যা জুলাইয়ের শুরু অবধি অব্যাহত ছিল।
৭ জুলাই অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক নিলামে দুগ্ধপণ্যের বৈশ্বিক গড় মূল্যসূচক আগের নিলামের তুলনায় ৮ দশমিক ৩ শতাংশ বেড়েছিল। এটাই দুগ্ধপণ্যের মূল্যসূচকে সর্বশেষ উত্থান।
৪ আগস্ট নিউজিল্যান্ডে সর্বশেষ জিডিটি অকশন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সর্বশেষ নিলামে দুগ্ধপণ্যের বৈশ্বিক গড় মূল্যসূচক আগের নিলামের তুলনায় ৫ দশমিক ১ শতাংশ কমে গেছে। এ নিলামে বিক্রির জন্য সর্বোচ্চ ৩৭ হাজার ২৫ টন দুগ্ধপণ্য সরবরাহ হয়েছিল। বিক্রি হয়েছে ৩২ হাজার ৬৯৬ টন দুগ্ধপণ্য। প্রতি টন দুগ্ধপণ্যের গড় দাম দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৪৫ ডলার।
দুগ্ধপণ্যের দরপতনের পেছনে চীনসহ এশিয়ার দেশগুলোয় চাহিদা কমে আসাকে চিহ্নিত করছেন খাতসংশ্লিষ্টরা। তাদের মতে, চীন, ভিয়েতনাম, দক্ষিণ কোরিয়া, অস্ট্রেলিয়াসহ দূরপ্রচ্যের দেশগুলোয় করোনা মহামারীর দ্বিতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এ পরিস্থিতি দুগ্ধপণ্যের চাহিদা কমিয়েছে। এর প্রভাব পড়েছে বাজার পরিস্থিতিতে।
এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক রাবোরিসার্চের দুগ্ধপণ্যবিষয়ক বাজার বিশ্লেষক থমাস বেইলি বলেন, এশিয়ার বাজার পরিস্থিতি নিয়ে ব্যবসায়ীরা ভীষণ উদ্বেগের মধ্যে রয়েছেন। তারা পরিস্থিতি কোন দিকে যায়, তা দেখার জন্য অপেক্ষা করছেন। এজন্য পর পর দুই নিলামে দুগ্ধপণ্যের দাম কমেছে। এখন আগামী দিনগুলোয় দুগ্ধপণ্যের বাজার পরিস্থিতির ভবিষ্যৎ নির্ভর করবে করোনা মহামারীর গতিপ্রকৃতির ওপর।
আনন্দবাজার/ডব্লিউ এস