কলকাতার বহুতল ফ্ল্যাটে বসবাসরত করোনয় আক্রান্ত দম্পতিকে জুতোপেটা করলেন তাদেরই প্রতিবেশীরা। এমনকি ছাড় দেওয়া হয়নি গর্ভবতী স্ত্রীকেও। তাঁদের অপরাধ, স্বামী কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত। তাই ফ্ল্যাটে আর বসবাস করা যাবে না। পরে পাটুলি থানায় ইমেলে অভিযোগ দায়ের করেন ওই দম্পতি। ইতোমধ্যে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। কলকাতা ছাড়াও করোনা রোগীদের সাথে দুর্ব্যবহারের ঘটনা ঘটেছে বেঙ্গালুরুতেও।
গত ১৭ জুলাই কলকাতার দক্ষিণ-পূর্ব প্রান্তে পাটুলি অঞ্চলের কেন্দুয়া পাড়ায় এক মধ্যবয়সের ব্যক্তি কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হন। এলাকায় একটি বহুতলে স্ত্রী ও ছেলেকে নিয়ে থাকেন তিনি। স্ত্রী গর্ভবতী। স্ত্রী জানিয়েছেন, স্বামী করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর থেকে ঘরেই আইসোলেশনে রয়েছেন। তাঁর শরীরে দুর্বলতা থাকলেও অন্য কোনও রোগের উপসর্গ নেই। এরই মাঝে দিন কয়েক আগে ছাদে গিয়েছিলেন স্ত্রী। সেখানে তাঁকে দেখে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকেন ফ্ল্যাটের অন্য বাসিন্দারা। তিনি এর প্রতিবাদও করেন। তারপরেই প্রতিবেশীরা বাড়িতে চড়াও হন বলে অভিযোগ। তাঁদের ফ্ল্যাটে ঢুকে করোনা রোগীকে ছেলের সামনেই জুতো পেটা করা হয় বলে অভিযোগ। আক্রমণকারীদের আটকাতে গেলে গর্ভবতী নারীও আক্রমণে শিকার হন বলে থানায় অভিযোগ করেছেন ওই দম্পতি। একই সাথে তাঁদের অভিযোগ, প্রতিবেশীরা বার বার তাঁদের বাড়ি ছড়ার জন্য চাপ দিচ্ছেন।
পাটুলি থানার পুলিশ বলেন, তদন্ত শুরু হয়েছে। ওই বহুতলের অন্যান্য নাগরিকদের সাথে কথা বলা হয়েছে। প্রতিবেশীরা অবশ্য বলেছেন, কোনোরকম শারীরিক নির্যাতন করা হয়নি। কিন্তু কথা কাটাকাটি হয়েছে। তাঁদের অভিযোগ, করোনা হওয়া সত্ত্বেও নিয়মিত ছাদে যাচ্ছেন ওই দম্পতি। ব্যবহার করছেন লিফটও। ওই দম্পতির নামে পাল্টা এফআইআর দায়ের করেছে ফ্ল্যাটের অন্য বাসিন্দারা।
অপরদিকে বেঙ্গালুরুতে করোনা আক্রান্ত রোগীর সাথে অমানবিক আচারণের অভিযোগ উঠেছে পুরসভা কর্মীদের বিরুদ্ধেই। অভিযোগ, একটি ফ্ল্যাটে করোনা রোগী রয়েছে শুনে টিনের শিট নিয়ে গিয়ে সেই ফ্ল্যাট এবং পাশের ফ্ল্যাট সিল করে দিয়ে এসেছিলেন ওই পুরসভার কর্মীরা। প্রতিবাদ করেন করোনা রোগীর পাশের ফ্ল্যাটের বাসিন্দা। পুরসভায় ফোন করে তিনি গোটা ঘটনার কথা জানান এবং বলেন, এরপর কোনও কারণে বাড়িতে আগুন লাগলে পালানোও সম্ভব নয়।
বেঙ্গালুরু পুরসভা কর্তৃপক্ষ অবশ্য দ্রুত ওই টিনের শিট খোলার ব্যবস্থা করেছেন। করোনা রোগী এবং তাঁর প্রতিবেশীর কাছে ক্ষমাও চাওয়া হয়েছে।
আনন্দবাজার/এফআইবি