ঢাকা | শুক্রবার
২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

৫ মাসের লকডাউনে ওজন বাড়ল ১০০ কেজি!

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের উৎপত্তিস্থল চীনের উহান শহরের ২৬ বছর বয়সী যুবক জো। আগে যে খুব হালকা-পাতলা ছিলেন, তাও নয়; তবে পাঁচ মাসের লকডাউনে বাসায় থাকতে থাকতে সব তালগোল পাকিয়ে গেল! এই পাঁচ মাসের লকডাউনে পাঁচ-দশ নয়, ১০০ কেজি ওজন বেড়ে গেছে ২৬ বছর বয়সী এক চীনা যুবার!

ব্যক্তিগত গোপনীয়তার জন্য ওই যুবকের পুরো নাম প্রকাশ করেনি গণমাধ্যম। বাসায় থাকতে থাকতে কখন যে এত মোটা হয়ে গেলেন সে তা টেরই পাননি!

লকডাউন শেষে এখন তার অবস্থা শোচনীয়। অতিকায় বেলুনে পরিণত হয়েছেন। ওজন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৮০ কেজি।

জো’র এই পরিণতি প্রকাশ পায় জুনের শুরুর দিকে। উহান ইউনিভার্সিটি সেন্ট্রাল সাউথ হাসপাতালের এক চিকিৎসক এই ‘রোগী’র লকডাউনের আগের ছবি মিলিয়ে দেখেন, সর্বনাশ হয়ে গেছে! চিকিৎসককে জো জানান, লকডাউন শুরু হওয়ার পর তিনি বাসা থেকে একদমই বের হননি। এক সময় খেয়াল করেন, স্বাস্থ্যের কারণে ঠিকমতো ঘুমোতেও পারছেন না। তাই বাধ্য হয়ে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়েছেন।

সাউথ হাসপাতালের অবসিটি অ্যান্ড মেটাবলিক সার্জারি সেন্টারের ডেপুটি ডিরেক্টর ডা. লি জেনের কাছে জো মিনতি করে জানান, “গত ৪৮ ঘণ্টা আমি দু’চোখের পাতা এক করতে পারিনি। খুবই অস্বস্তি হচ্ছে। আমাকে একটু সাহায্য করবেন, প্লিজ?”

এর আগে তিনি আরও কিছু চিকিৎসকের সাথে যোগাযোগ করেছিলেন। কিন্তু তারা এত মোটা একটা লোককে কোনো রকম সাহায্য করতে অপারগতা জানান। খবর অডিটি সেন্ট্রালের।

এরপর করোনা মোকাবিলায় কাজ করা একটি টিম ১ জুন বহু কষ্টে জো’কে তার ঘর থেকে বের করে অ্যাম্বুলেন্সে তোলেন। তাকে সামলাতে বেশ হিমশিম খেতে হয়েছিল তাদের। সোজা হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করা হয় তাকে। প্রাথমিক কিছু পরীক্ষার পর ধরা পরে তার হার্ট ফেল ও শ্বাসকষ্টসহ নানা রকমের উপসর্গ।

দুর্ভাগ্যবশত তার ওজনের কারণেই ব্লাড প্রেসার ও ইইজি-সহ প্রয়োজনীয় আরও বেশ কিছু পরীক্ষা করতে পারেননি চিকিৎসকরা। তারপর ১০ দিন ধরে তারা নিরন্তর চেষ্টা চালান জো’র অবস্থা স্থিতিশীল রাখার। অবশেষে ১১ জুন তাকে আশঙ্কামুক্ত ঘোষণা করা হয়।

ডা. লি জেন জানান, মোটা হওয়া ওর জন্মসূত্রে। ‘আমার পক্ষে শুধু ওর খাদ্যাভ্যাস, বিশ্রাম ব্যবস্থা ও এ সংক্রান্ত অন্যান্য বিষয় ঠিকঠাক করে দেওয়ার আশা করাই সম্ভব। আগামী তিন মাসের মধ্যে যদি ওর ওজন অন্তত ২২-২৩ কেজি কমাতে পারি, তাহলে অতি প্রয়োজনীয় সার্জারিতে ওর ঝুঁকি কমবে।’

চিকিৎসকের এমন কথায় জো’ও আশাবাদী হয়ে উঠেছেন। আবারও হাঁটা-চলা করার মতো ‘হালকা-পাতলা’ জো হয়ে ওঠেন কি না, সেটা এখন সময়ের দাবী।

আনন্দবাজার/শাহী

সংবাদটি শেয়ার করুন