মহামারি করোনাভাইরাসের তাণ্ডবে বিপর্যস্ত সারাবিশ্ব। প্রতিদিনই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে মৃত্যু ও আক্রান্তের সংখ্যা। দেশে দেশে চলছে লকডাউন। এখনো আবিষ্কার হয়নি এই মহামারির কোনও প্রতিষেধক। আপাতত প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধই একমাত্র পন্থা এই ভাইরাস থেকে বাঁচার।
এরই মধ্যে জানা গেল আরও একটি আতঙ্কের খবর। তা হচ্ছে, ঘরে থাকা ফ্রিজটিও নাকি বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে। এমনই তথ্য দিয়ে সতর্ক করেছেন বিশ্ববিখ্যাত ভাইরোলজিস্ট ডক্টর ওয়ার্নার গ্রিন।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম এনবিসি বে এরিয়ারকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ সতর্কতার কথা জানিয়েছেন। আমেরিকান সোসাইটি ফর মাইক্রোবায়োলজির ২০১০ সালের একটি গবেষণার ভিত্তিতে ওয়ার্নার গ্রিন জানান, সার্স-কভ ভাইরাসের সাথে কোভিড-১৯ বা সার্স-কভ-২ ভাইরাসের খুবই মিল রয়েছে। আর ওই সার্স-কভ ভাইরাসটি কম আর্দ্রতা এবং ৪.৪ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডের কম তাপমাত্রায় আরও সতেজ হয়ে ওঠে। ২০১০ সালের ওই গবেষণায় দেখা গেছে, ফ্রিজের ভেতরে এসব ভাইরাস অন্তত ২৮ দিন জীবন্ত টিকে থাকতে পারে।
প্রতিকারের উপায়
১. প্রথমেই মাথায় রাখতে হবে, বাজার করা জিনিসপত্র ভালো করে জীবাণুমুক্ত করেই ফ্রিজে ঢোকাতে হবে। এ ছাড়াও আপনার ফ্রিজে যাতে কোনো ভাবে করোনাভাইরাস আসন গাড়তে না পারে, তার বেশ কিছু উপায় বাতলে দিলেন ডক্টর গ্রিনে।
২. একটি বালতিতে অ্যালকোহল যুক্ত কোনো স্যানিটাইজারের সাহায্যে জীবাণুমুক্ত করার তরল তৈরি করতে হবে। গ্রিনের কথায়, ‘করোনাভাইরাস সম্পূর্ণরূপে দ্রবীভূত করতে প্রয়োজন অ্যালকোহল বা সাবান এবং জল।’
৩. বাড়িতেই জল এবং ব্লিচের সংমিশ্রণে জীবাণুনাশক তৈরি করে নিতে বলছেন ডক্টর গ্রিনে। তিনি আরও জানান, ৪ লিটার পানির সাথে ১/৩ কাপ ব্লিচ মিশিয়ে মিশ্রণটি তৈরি করে নিন। এই উপায় না পেলে গরম জলে কিছুটা সাবান ফেলে দেওয়ার কথাও বলছেন গ্রিনে। এবার এই মিশ্রণে একটি শুকনো তোয়ালে ভালো করে ভিজিয়ে নিতে হবে।
৪. এরপর ফ্রিজে যে খাবারের বাক্স বা প্যাকেটগুলো রাখবেন খুব ভালো করে সেগুলোকে ওই তোয়ালে দিয়ে বেশ ভালো করে কয়েকবার পরিষ্কার করতে হবে।
৫. তি আরও জানান, ‘যেভাবে টেবিল বা অন্য কোনও তল জীবাণুমুক্ত করা হয়, সেই ভাবেই জীবাণুমুক্ত করতে হবে এই খাবারের প্যাকেটগুলোর তল।’
৬. শুধু এখানেই শেষ নয়। প্রতিনিয়ত নিয়ম করে ফ্রিজের কন্টেইনারগুলোকে জীবাণুমুক্ত করে যেতে হবে এই পদ্ধতিতেই। প্রতিবার জীবাণুমুক্ত করার পর ভালো করে ধুয়ে ফেলতে হবে হাত। ধুয়ে ফেলতে হবে বাজারের থলিও।
আনন্দবাজার/শাহী