রবিবার, ২২শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৭ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

লকডাউনঃ প্রসূতিকে হাসপাতালে নিয়ে গেলেন পুলিশ

অঘোষিত লকডাউনের কবলে চট্টগ্রাম। করোনা ভাইরাসের কারণে যখন সবকিছু বন্ধ, তখনই গতকাল মঙ্গলবার রাত ২টার নাগাদ অসহ্য প্রসব যন্ত্রণা ওঠে চট্টগ্রাম নগরীর ব্রিকফিল্ড বাইলেইন এলাকার শিপন সেনের স্ত্রী প্রান্তি সেনের।

অঘোষিত লকডাউনের কারনে রাস্তায় নেই কোন গাড়িও। রাত আড়াই টার দিকে বেড়ে যায় স্ত্রী প্রান্তি সেনের প্রসব যন্ত্রণা। এমতাবস্থায় অসহায় পরিস্থিতিতে পড়েেন শিপন সেন।কীভাবে স্ত্রীকে হাসপাতালে নেবেন তা নিয়ে শুরু হয় দুঃচিন্তা। অনেক ভেবে-চিন্তে ফোন করেন নগরীর কোতোয়ালি থানায়।

মঙ্গলবার দিবাগত রাত ৩টায় ফোন পেয়ে শিপনের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করলো কোতোয়ালি থানা পুলিশ।

জানা যায়, মঙ্গলবার দিবাগত রাত ৩ টার দিকে কোতোয়ালির ব্রিকফ্রিল্ড এলাকার আশরাফ আলী রোড থেকে একটা কল আসে। প্রসব বেদনা উঠেছে শিপন সেনের স্ত্রীর। রাস্তায় নেই কোন গাড়ি। ওসির নির্দেশে থানা থেকেই গাড়ি নিয়ে ছুটে যান যান এএসআই আজিজুল ইসলাম ও সুকুমার। পুলিশের গাড়িতে চড়েই আন্দরকিল্লা জেমিসন রেড ক্রিসেন্ট মাতৃসদন হাসপাতালে নিয়ে আসা হয় প্রসূতিকে। এবং হাসপাতালে ভর্তি থেকে শুরু করে, ওষুধ ক্রয় সব করেছেন পুলিশ।
হাসপাতালে ভর্তির এক ঘন্টা পর ফুটফুটে এক কন্যা সন্তানের জন্ম দেন শিপনের স্ত্রী।

পুলিশের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে শিপন সেন বলেন, ‘স্ত্রীর যন্ত্রণা দেখে নিজেকে খুব অসহায় লাগছিল। রাত ৩টায় কী করবো বুঝতে পারছিলাম না। কোনো গাড়ি নেই, অ্যাম্বুলেন্সের নম্বর নেই। পুরোপুরি অসহায় ছিলাম। পরে নিরুপায় হয়ে কোতোয়ালী থানার ওসিকে ফোন করেছিলাম। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ সদস্যরা এসে আমার স্ত্রীকে হাসপাতালে নিয়ে গেছেন। ভর্তি থেকে শুরু করে, ওষুধ ক্রয় সব তারা করেছেন। আমি অসহায়ের মতো দেখছিলাম।

আরও পড়ুনঃ  পর্যটকের ভিড়ে বাড়ছে রাজস্ব

তিনি আরো বলেন, হাসপাতালে আনতে দেরি হলে হয়তো আমার স্ত্রী সন্তান দুইজনকেই হারাতাম আমি। পুলিশ সদস্যদের প্রতি কৃতজ্ঞতা।

কোতোয়ালি থানার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ মহসিন জানান, করোনাভাইরাসের কারণে যানবাহন নেই। অ্যাম্বুলেন্সের ডিউটিও বেড়ে গেছে। তার স্ত্রী প্রসব বেদনা ওঠায় কোতোয়ালি থানার হেল্প চাইলো সে। আমরা তাৎক্ষণিক গাড়ি পাঠাই। প্রসূতিকে আন্দরকিল্লা জেমিসন রেড ক্রিসেন্ট মাতৃসদন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এর এক ঘন্টা পরই কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। বর্তমানে মা ও সন্তান দুইজনই সুস্থ রয়েছেন বলে জানান তিনি।

আনন্দবাজার/শহক/এম

সংবাদটি শেয়ার করুন