দেশে পরিবেশ দূষণ উদ্বেগজনক মাত্রার পৌঁছে গেছে যা পরিবেশগত মারাত্তক স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়িয়েছে। এমন দূষণ তুলনামূলক বেশি ক্ষতি করছে দরিদ্র জনগোষ্ঠী, পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশু, বয়স্ক পুরুষ ও নারীদের। বছরে দূষণের কারণে দেশে অকাল মৃত্যু হচ্ছে ২ লাখ ৭২ হাজারের বেশি মানুষের।
বিশ্ব ব্যাংকের ঢাকা অফিস থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) এমন তথ্য জানানো হয়েছে।
‘দ্য বাংলাদেশ কান্ট্রি এনভায়রনমেন্ট অ্যানালাইসিস’ শীর্ষক ওই প্রতিবেদনে দেখা গেছে, অকাল মৃত্যুর জন্য বায়ুদূষণ, অনিরাপদ পানি, নিম্নমানের স্যানিটেশন ও হাইজিন এবং সীসা দূষণ দায়ী। ২০১৯ সালে পরিবেশগত কারণে বাংলাদেশের জিডিপির ১৭ দশমিক ৬ শতাংশ সমপরিমাণ ক্ষতি হয়েছে। ঘর ও বাইরের বায়ুদূষণ স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে সর্বাধিক ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে এবং যা ৫৫ শতাংশ অকাল মৃত্যুর কারণ। আর এই হার ২০১৯ সালের জিডিপির ৮ দশমিক ৩২ শতাংশের সমপরিমাণ।
বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশ এবং ভুটানে নিযুক্ত বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদুলায়ে সেক বলেন, বাংলাদেশের জন্য পরিবেশের ঝুঁকি মোকাবিলা একসঙ্গে উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক অগ্রাধিকার। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দেখেছি আমরা- পরিবেশের ক্ষতি করে যদি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হয়, তাহলে টেকসই হতে পারে না তা।
উক্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, পরিবেশ দূষণ শিশুদের ওপর প্রবল প্রভাব ফেলছে। সীসা বিষক্রিয়া শিশুদের মস্তিষ্ক বিকাশে ব্যাপক ক্ষতি করছে। এ কারণে বছরে প্রাক্কলিত আইকিউ প্রায় ২০ মিলিয়ন পয়েন্ট পরিমাণ ক্ষতি হচ্ছে। এছাড়া বায়ুদূষণের জন্য অন্যতম কারণ হচ্ছে গৃহস্থালিতে কাঠের জ্বালানির মাধ্যমে রান্না এবং এ কারণে বেশি ক্ষতির শিকার হচ্ছেন নারী ও শিশুরা।
এছাড়া, শিল্পের বর্জ্য ও অনিয়ন্ত্রিত প্লাস্টিকসহ অন্যান্য সব বর্জ্য ও উৎস থেকে আসা অপরিশোধিত ময়লাযুক্ত পানির জন্য বাংলাদেশের নদী-নালার পানির গুণগত মানে ব্যাপক অবনতি হয়েছে। বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র পরিবেশ বিশেষজ্ঞ এবং এই রিপোর্টের সহ-প্রণেতা আনা লুইসা গোমেজ লিমা জানিয়েছেন, সময়মতো সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ এবং নীতি ও কার্যক্রমের মাধ্যমে পরিবেশ দূষণের ধারা বদলে ফেলতে পারে বাংলাদেশ। পরিবেশ সুরক্ষার জন্য জোর পদক্ষেপ এবং রান্নায় সবুজ জ্বালানিতে বিনিয়োগ ও অন্যান্য প্রণোদনা এবং সচেতনতা বৃদ্ধির ফলে দূষণ কমানো সম্ভব হতে পারে।