যুদ্ধবিদ্ধস্ত গাজায় তিন দিনের একটি যুদ্ধবিরতি কার্যকর করার জন্য মিসর, কাতার, ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে দেন-দরবার চলছে। মূলত হামাসের কাছে জিম্মি হয়ে থাকা কয়েকজনের মুক্তির বিনিময়ে এই যুদ্ধবিরতি কার্যকর হতে পারে।
যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলে ওই তিন দিনে গাজায় জ্বালানিসহ মানবিক সাহায্য পাঠানো হবে। মিসরীয় একটি সূত্রের বরাত দিয়ে বৃহস্পতিবার (০৯ নভেম্বর) এই খবর জানিয়েছে আমিরাতভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য ন্যাশনাল।
সংবাদমাধ্যমের ওই সূত্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতি কার্যকরের নিশ্চয়তা ও রক্ষণাবেক্ষণ করবে যুক্তরাষ্ট্র। আর রাফাহ সীমান্ত দিয়ে গাজায় ত্রাণসামগ্রী পাঠানোর বিষয়টি সমন্বয় করবে মিসরীয় কর্তৃপক্ষ। চার সপ্তাহ ধরে গাজায় ইসরায়েলের টানা বোমাবর্ষণে অন্তত সাড়ে ১০ হাজার মানুষ নিহত হয়েছে। চলমান সংঘাতের মধ্যে সেখানে জ্বালানি, পানি ও তীব্র খাদ্য সংকটের ফলে মানবিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে।
এছাড়াও, মিসরীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ইসরায়েল নীতিগতভাবে গাজায় জ্বালানি প্রবেশের বিরোধিতা থেকে সরে আসতে রাজি হয়েছে। তবে দেশটি শর্ত দিয়েছে, পুরো বিষয়টি জাতিসংঘ এবং মার্কিন প্রতিনিধিরা পর্যবেক্ষণ করবে। ঠিক কতজন জিম্মির বিনিময়ে যুদ্ধবিরতি কার্যকরের আলোচনা চলছে সে বিষয়ে স্পষ্ট কোনো ধারণা দিতে পারেননি মিসরীয় কর্মকর্তারা। তবে ধারণা করা হচ্ছে, মার্কিন নাগরিকসহ ২০ থেকে ৫০ জন জিম্মির মুক্তির বিষয়ে আলোচনা চলছে। সবকিছু ঠিক থাকলে আজ কিংবা আগামীকাল শুক্রবার চুক্তিটি হতে পারে।
দ্য ন্যাশনালের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আলোচনায় অংশ নেওয়া চারটি দেশের মধ্যে কোনোটিই হামাসের পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য প্রকাশ করা হয়নি। বিষয়টি অত্যন্ত গোপনীয়তার সঙ্গে সমন্বয় করা হচ্ছে। তিন দিনের যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলে গাজার যুদ্ধবিধ্বস্ত মানুষ কিছু সময়ের জন্য হলেও মুক্ত বাতাসে নিশ্বাস নেওয়ার সুযোগ পাবে। শহরটির ২৩ লাখ মানুষের দুর্ভোগ সাময়িকভাবে হ্রাস পাবে।
প্রসঙ্গত, গত ৭ অক্টোবর গাজা নিয়ন্ত্রণ করা ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী হামাস যোদ্ধারা ইসরায়েলে হামলা করলে চলমান সংঘাতের সূত্রপাত হয়। হামাসের হামলায় সেদিন ইসরায়েলের ভেতরে ১ হাজার ৪০০ জন মানুষ প্রাণ হারায়। এ ছাড়া অন্তত ২২৪ জনকে জিম্মি করে হামাস যোদ্ধারা গাজায় নিয়ে এসেছিল বলে দাবি করে আসছে ইসরায়েল।