রবিবার, ২২শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৭ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চলনবিলের মুক্ত ৯১টি পাখি

চলনবিলের মুক্ত ৯১টি পাখি

নাটোরের চলনবিল অধ্যুষিত এলাকা গুরুদাসপুরে পরিবেশকর্মীদের অভিযানে শিকারীর হাত থেকে উদ্ধার হওয়া ৯১টি পাখি অবমুক্ত করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সকালে পরিবেশকর্মীদের নিয়ে মুক্ত আকাশে পাখিগুলো অবমুক্ত করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার তমাল হোসেন। মঙ্গলবার ভোরে গুরুদাসপুর জীববৈচিত্র রক্ষা কমিটির সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হাসানের নেতৃত্বে পরিবেশকর্মী আবু হেনা মোস্তফা কামাল, মেহেদী হাসান তানিম ও রাসেল আহমেদ গুরুদাসপুর উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল ধারাবারিষা ইউনিয়নের চরকাদহ গ্রাম ও মশিন্দা ইউনিয়নের হাঁসমারি গ্রামের মাঠে স্থানীয়দের তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করেন।

এসময় চরকাদহ গ্রামের মাঠে জালে আটকে যাওয়া ১০টি শালিক পাখি, হাঁসমারি মাঠ থেকে শিকারীর তৈরি ফাঁদ থেকে ৭০টি ঘুঘু পাখি ও শিকারীর বাড়ি থেকে খাঁচা বন্দি শিকারি বক পাখি একটি, কোড়া পাখি একটি, ডাহুক পাখি দুইটি ও ঘুঘু পাখি ৭টি উদ্ধার করা হয়। মাঠ থেকে উদ্ধার হওয়া পাখি গুলো মাঠেই অবমুক্ত করা হয়। পরে ১১টি খাঁচা বন্দি শিকারী পাখিকে গুরুদাসপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের আম্রকাননে মুক্ত আকাশে অবমুক্ত করা হয়েছে। অভিযানে শিকারের জন্য ব্যবহার করা ৩০০ মিটার কারেন্ট জালের ফাঁদ, লোহার ৫০ মিটার ফাঁদ ও ১২টি খাঁচা ধ্বংস করা হয়েছে। তবে শিকারীরা পালিয়ে যাওয়ার কারণে আটক করা সম্ভব হয়নি।

গুরুদাসপুর জীববৈচিত্র রক্ষা কমিটির সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হাসান বলেন, এখন চলনবিলসহ গুরুদাসপুর উপজেলার নদী,নালা,খাল,বিলে পানি কমতে শুরু করেছে। এই সময় অতিথি পাখিদের বেশি চোঁখে পড়ে। আর এই সুযোগে কিছু অসাধু ব্যক্তি নিজেদের স্বার্থ হাছিলের জন্য অবাধে পাখি শিকার করে। এই পাখি গুলো উপজেলাব্যাপী বিক্রি হয়। এমনকি বিভিন্ন জায়গায় পাচারও করা হয়। আমরা পরিবেশকর্মীরা প্রতিদিন কাক ডাকা ভোরে উপজেলার বিভিন্ন মাঠে অভিযান পরিচালনা করি। জীববৈচিত্র রক্ষায় ও পাখি শিকার বন্ধে আমাদের এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।

আরও পড়ুনঃ  উৎপাদন ভালো হলেও বাজারে কাঁকড়া তুলছেন না চাষিরা

গুরুদাসপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ তমাল হোসেন বলেন, আমাদের একার পক্ষে আসলে শিকার রোধ করা সম্ভব নয়। চলনবিল একটি বৃহৎ এলাকা। সবগুলো এলাকায়  আমরা দেখভাল করতে পারিনা। এ জন্য স্থানীয় পর্যায়ে আমরা বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সহায়তা নিচ্ছি। এমন সংগঠন গড়ে তুলতে সহায়তা করছি প্রশাসনের পক্ষথেকে। তারা পাখি শিকার রোধে স্থানীয়ভাবে কাজ করছে। কোনো ক্ষেত্রে তারা না পারলে আমাদের জানায়। তখন আমরা যৌথভাবে কাজ করি। এভাবে বিভিন্ন জায়গায় আমরা পাখি শিকার বন্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলছি। পাখি শিকার বন্ধে আমরা ভালো সাড়া পেয়েছি। ব্যক্তি পর্যায় থেকে প্রশাসন সবাই মিলে একসঙ্গে কাজ করলে চলনবিলে পাখিসহ বন্যপ্রাণী রক্ষা করা সম্ভব হবে রক্ষা পাবে পরিবেশও।

সংবাদটি শেয়ার করুন