মঙ্গলবার, ১৭ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২রা আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
আনন্দবাজারে সংবাদ প্রকাশের পর

মা’হারা চার শিশুর পাশে উপজেলা প্রশাসন

মা’হারা চার শিশুর পাশে উপজেলা প্রশাসন

অসহায় চার শিশুর নিরাপদ আবাসস্থল, ভিজিএফ কার্ডসহ বিভিন্ন সরকারি সেবা প্রদানের ব্যবস্থা করবো

সাইয়েদা ফয়জুন্নেসা, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা চিতলমারী

ক্যান্সারের কাছে পরাজিত সেই মায়ের হতভাগ্য চার সন্তানেরা পেলো সরকারি সহায়তা। গত ৫ সেপ্টম্বর  ‘মা হারিয়ে নির্বাক ৪ শিশু সন্তান’ শিরোনামে দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়। সেই সংবাদ মুহূর্তের মধ্যেই গণমাধ্যম, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। যার দরুন এলাকায় সমাজসেবী ও বিত্তবানেরা সহযোগিতার হাতে বাড়িয়েছে এ অসহায় পরিবারের দিকে। যে যার অবস্থান থেকে সহযোগিতা করেছেন।

ভুক্তভোগী ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য গৌতম মন্ডল বলেন, সংবাদ শুনে ওই পরিবারের কাছে ছুটে যাই। সেখানের বাস্তবতা দেখে আমি সত্যিই নির্বাক। তিনি তার ব্যক্তিগত তহবিল থেকে এক হাজার টাকা প্রদান করেন। এছাড়া এলাকার বিত্তবানদের থেকে সংগ্রহ করা নগদ পাঁচ হাজার টাকা সংশ্লিষ্ট পরিবারের কাছে তুলেদেন তিনি।

প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর সহযোগিতার নানান আশ্বাস দিলেও গতকাল তার প্রতিফলন ঘটে। শনিবার সকালে চিতলমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইয়েদা ফয়জুন্নেসা, সদর ইউপি চেয়ারম্যান শেখ নিজাম উদ্দিন, ওয়ার্ড মেম্বার গৌতম মন্ডলসহ অনেকেই অসহায় পরিবারটির মাছে ছুটে যান। ইউএনও এবং চেয়ারম্যানকে দেখে চোখের পানি ধরে রাখতে পারেনি সুদাস ব্রহ্ম। এসময় মা’হারা হতভাগ্য নিষ্পাপ শিশুদের মুখে অসহায়ত্বের ছাপ ছিল স্পষ্ট। তাদের এ করুণ পরিণতি উপস্থিত সবাইকে ভাবিয়ে তুলেছে। এসময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সদর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান এর পক্ষ থেকে অসহায় পরিবারকে নগদ দুই হাজার টাকাসহ, ৫০ কেজি চাল, ৫ লিটার তেল, ২ কেজি ডাল, ২ কেজি গুড়া দুধ, ২ কেজি লবন প্রদান করা হয়।

আরও পড়ুনঃ  অস্ট্রেলিয়ার বিজ্ঞানীদের দাবি : সুতির মাস্কই সবচেয়ে ভালো

এসময় সুদাস ব্রহ্ম আবেগ আপ্লুত হয়ে বলেন, আমার স্ত্রী ক্যান্সারে মারা যাওয়ার পর থেকে এ সন্তানদের নিয়ে খুব কষ্টে দিন কাটাচ্ছি। কাজ না করলে পেটে খাবার যায় না। এ ছোট্ট বাচ্চাদের রেখে মন দিয়ে কাজও করতে পারি না। শত কষ্টের মাঝেও আজ আমি খুশি। আশায় ছিলাম হয়তো কোনো সাহায্য পাবো। অবশেষে সরকারি সহায়তা পেয়ে আমি খুব খুশি।

সদর ইউপি চেয়ারম্যানকে শেখ নিজাম উদ্দিন বলেন, আমরা সংবাদ শুনে ভুক্তভোগী পরিবারটিকে দেখতে এসেছি। বাস্তবচিত্র দেখে আমরা সত্যিই মর্মাহত। আমরা সবাই এ পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাসও দেন তিনি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইয়েদা ফয়জুন্নেসা আনন্দবাজারকে বলেন, গণমাধ্যমে ঘটনাটি জানতে পেরে আমি তৎক্ষনাৎ ওখানে লোক পাঠিয়েছি। অসহায় পরিবারটির খোঁজ-খবর নিয়েছি। আজ অসহায় কোমলমতি শিশুদের পাশে দাড়াতে পেরে খুব ভালো লাগছে। তাদের নিরাপদ আবাসস্থল, ভিজিএফ কার্ডসহ বিভিন্ন সরকারি সেবা প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন