সারা জীবন দুটি মানুষ একই ছাদের নিচে থাকার জন্য শুধুমাত্র ‘ভালোবাসা’ই যথেষ্ট নয়—কথাটি ব্যক্তিগত জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে শিখেছেন হলিউড তারকা অ্যাঞ্জেলিনা জোলি। সেজন্যই ‘হলিউড রিপোর্টার’ আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে নারীর স্বাধীনতা নিয়ে কথা বলতে গিয়ে ঘুরেফিরে এসেছে বিয়ের প্রসঙ্গও। তিন তিনবার ‘আই ডু’ বলার পর অবশেষে অস্কারজয়ী জোলির এই উপলব্ধি হয়েছে, জীবনের জন্য বিয়ে জরুরি নয়। জরুরি হচ্ছে স্বস্তিতে থাকা, নিজের স্বাধীনতার বলয়ে স্বাচ্ছন্দ্যে থাকা।
বিয়ের ব্যাপারে জোলি বলেছেন, বিয়ে হতে পারে জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল সিদ্ধান্ত। আবার হতে পারে জীবনের সবচেয়ে আনন্দদায়ক ঘটনা। তাই সতর্ক হয়ে বিয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। দীর্ঘ বক্তব্যের এক অংশে জোলি জানান, বিয়ে করার আগে কিছু বিষয়ে আলাপ করে নেওয়া জরুরি। সেই কিছু বিষয়ের তালিকাও একেবারে ছোট নয়। সেই বিষয়গুলোয় একমত না হলে কিছুটা সময় পেরোলে দেখবেন, কেবল ভালোবাসা যথেষ্ট নয়; এর সঙ্গে আরও নানা কিছু জরুরি।
তিনি আরও বলেন, বিয়ের পর আপনারা কোথায় থাকবেন? ঘরের বিভিন্ন খরচ কোনটা কে দেবে? কবে সন্তান নিতে চান? কীভাবে তাকে বা তাদের বড় করতে চান? দুজন ভিন্ন ধর্মের হলে সন্তানের ধর্ম কী হবে? একজনের আরেকজনের কাছ থেকে প্রত্যাশা কী? দুজনের অতীত। দুজনের শৈশব ট্রমা। দুজনের রাজনৈতিক মতাদর্শ। পরিবারের স্বাস্থ্যের খবর (বাত, ক্যানসার, ডায়াবেটিস ইত্যাদি), পরিবারের মানসিক স্বাস্থ্যের ইতিহাস, বাকেট লিস্ট, ক্যারিয়ার, এমনকি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যক্তিগত ও পারিবারিক তথ্য কতটা শেয়ার করেন বা করেন না। কেবল পরিবারের চাপে বিয়ে করবেন না। আপনার মন যখন আপনাকে বিয়ের জন্য অনুপ্রাণিত করবে, তখনই কেবল সঙ্গীকে “হ্যাঁ” বলুন। জীবনের জটিলতার শেষ নেই। অযথা জটিলতা বাড়াবেন না। বিশেষ করে আমার মতো। আমাকে দেখে শিখুন।
১৯৯৬ সালে অভিনেতা জনি লি মিলারকে বিয়ে করেছিলেন অ্যাঞ্জেলিনা জোলি। সেটি ছিল তার প্রথম বিয়ে। টিকে ছিল ২০০০ সাল পর্যন্ত। তারপর দ্বিতীয়বার ‘ভুল’ করতে এক বছরও সময় নেননি তিনি। ২০০০ সালে বিলি বব থর্নটনকে বিয়ে করেন। সেই বিয়ে আরও কম সময় টিকেছে। ওই বিয়ে ২০০৩ সালেই ভেঙে যায়। তারপর আর বিয়ে না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তিনি। এরপর দীর্ঘ ১০ বছর প্রেম করেন ব্র্যাড পিটের সঙ্গে। পরে সন্তানদের চাপে পড়ে ২০১৪ সালে ব্র্যাড পিটকে বিয়ে করে সংসারী হন জোলি। তবে তাও ভেঙে যায় ২০১৬ সালে। জোলি এখন ‘সিঙ্গেল’, ছয় সন্তানের মা এবং মানবাধিকারকর্মী! নিজেকে পরিচিত করাতে এই তিন বিশেষণেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছেন তিনি।
আনন্দবাজার/টি এস পি