- প্রতি হালি (৬) আম বিক্রি হচ্ছে ৫-১০ টাকায়
- আমভিত্তিক কারখানা স্থাপনের দাবি
কুড়িগ্রামের উলিপুরে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামীণ বাজারগুলোতে খিলি পানের দামে প্রতিহালি আম বিক্রি হচ্ছে। আমের বাজার জমজমাট ভাবে শুরু হয়েছে। বাজারে আম ক্রেতা কম থাকায় কেউ কেউ আম ফিরে নিয়ে যাচ্ছে বাড়িতে।
উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের গ্রামীণ বাজারগুলোতে গিয়ে দেখা যায়, দেশীয় আমে কানায় কানায় ভরে গেছে বাজার। তবে ক্রেতা অনেক কম চোখে পড়ছে। বিক্রেতারা সামনে আম সাজিয়ে বসে আছেন ক্রেতার অপেক্ষায়। বাবুরহাট, জুম্মাহাট, বজরা, নাগড়াকুড়া, সাতদগাহ, বাজার, থেতরাই, দলদলিয়া, কাল্পনিবাজার, গাবের তল, মাড্ডাইর বাজার, বামনের হাট, ফাঁসিদাহ বাজারসহ আরও অনেক গ্রামীণ বাজারে ভরে গেছে নানা মৌসুমী ফলে। এসব ফলের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় আমের সরবরাহ অনেক বেশি। তবে চাহিদা খুবই কম।
গ্রামীণ বাজারগুলোতে আম বিক্রি হচ্ছে হালি হিসেবে। এক হালিমে ৬টি আম ধরা হচ্ছে। আর হালিপ্রতি দাম ৫ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত। এত কম দাম থাকার পরেও ক্রেতার দেখা মিলছে না। বর্তমান আমের মৌসুম হওয়ায় গাছে গাছে প্রচুর আম দেখা যায়। এখন গ্রামের প্রায় প্রত্যেক গাছে আম পাকা শুরু হয়েছে। প্রতিদিন পাকা আম নিয়ে বাজারে এসে কম দামে বিক্রি করছেন বিক্রেতারা।
বিক্রেতা হোসেন আলী বলেন, আমার বাড়িতে ৪টি থেকে ৬টি আম গাছ আছে। এবারে প্রচুর আম ধরেছে। বাড়ির চাহিদা মেটার পরেও ৪০ হালি আম বাজারে নিয়ে এসেছি। তবে বাজারে এনে বিপাকে পড়েছি। আম কেউ নিতে চায় না। তিনি বলেন, শেষ পর্যন্ত ৫ টাকারও কম দরে প্রতি হালি আম বিক্রি করেছি। তিনি বলেন, ৪০ হালি আম মাত্র ১০০ টাকায় বেচলাম। খিলিপানের দামেই বেচতে হচ্ছে আম।
ক্রেতা রকিবুল হাসান গোলজার, সামছুল, সোহাগ, সাহালম, জহুরুলসহ আরও অনেকে বলেন, আমাদের বাড়িতে আমের গাছ না থাকার কারণে কিনতে বাজারে এসেছি। দেখে শুনে সস্তা দরে কিনলাম। তারা আরও বলেন, এখন আমের মৌসুম। বাজারে অনেকেই আম নিয়ে আসায় বেশ সস্তায় পাওয়া যাচ্ছে। তারা আরও বলেন, আমের হালি প্রতি ৫ থেকে ১০ টাকা দরে আম কিনেছি।
আম বিক্রেতা ফুলবাবু, আবু তাহের, সওকত, ইউনুছ আলী, সজিব, বাতেন, রহমান, বাতেন, জব্বার, জয়নালসহ আরও অনেকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, আমের বাজার জমজমাট। বাড়িতে আমের গাছ বেশি থাকায় পরিবারের চাহিদা মিটিয়েই তারা বাজারে তুলেছেন। দাম কম হলেও কিছু দাম পাচ্ছেন। তবে তারা জানান, বড় কোম্পানিগুলো সস্তায় এসব আম কিনে সংরক্ষণ কিংবা প্রসেস করলে চাষিরাও দাম পেতেন কোম্পানিও লাভবান হতো। এলাকায় কৃষিভিত্তিক কারখানা থাকলে এত আম পানির দামে বিক্রি করতে হতো না।
আমের ব্যাপারী ফুলবাবু বলেন, বেশি আম কিনলে তা বাজারে বিক্রি করতে না পারলে পচে যায়। তাতে ব্যবসায় অনেক ক্ষতি হয়। তিনি আরও বলেন, যদি এসব আম সংরক্ষণ করার ব্যবস্থা থাকতো তাহলে দাম পেত সবাই। কিংবা আম থেকে যদি অন্য কোনো খাবার তৈরি করা যেত তাহলেও এত লোকসান হতো না। কিংবা আম নষ্ট হতো না।
আনন্দবাজার/শহক