- দূষণ ও স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে স্থানীয়রা
কোনো ধরনের নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করেই চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের জনবসতিতে পোড়ানো হচ্ছে কয়েল তৈরির কাঁচামাল। এতে করে পরিবেশ দূষণের পাশাপাশি কালো ধোঁয়ায় অতিষ্ঠ এখানকার বাসিন্দারা। উপজেলার জোরারগঞ্জ ইউনিয়নের চৌধুরীহাট সোনাপাহাড় এলাকায় তিনতলা বিশিষ্ট বসতঘরের পেছনে কারখানায় কয়েল তৈরির কাঁচামাল পোড়ানো হয়।
কাঁচামাল হিসেবে পোড়ানো হয় কাঠ। ১২ ফুট বাই ৮ ফুটের প্রতিটি চুল্লিতে গড়ে প্রতিদিন ৫০-৬০ মণ কাঠ পোড়ানো হয়। পোড়ানোর জন্য ব্যবহৃত হয় কাঠের গুঁড়ি। বনাঞ্চল ধ্বংস করে এভাবে কাঠ পোড়ানো পরিবেশের উপর কী ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে, সে বিষয়ে পরিবেশ কর্মকর্তারা কতটুকুইবা সচেতন সেটিই এখন প্রশ্ন হয়ে দেখা দিচ্ছে জনগণের মনে।
কারখানার শ্রমিক মো. খলিল ও শাকিব খান জানান, ওই কারখানাটিতে মশার কয়েল এবং আগরবাতির কাঁচামাল উৎপাদন করা হয়। আমরা ১২-১৩ হাজার টাকা মাসিক বেতনে চাকরি করি। কারখানার কাঁচামাল ও তৈরিকৃত পণ্য কোথায় যায় তারা জানেন না বলে জানান।
সরেজমিনে দেখা যায়, ৫-৬ জন শ্রমিক কারখানায় বড় পাঁচটি চুল্লিতে মিয়ানমার থেকে আমদানিকৃত গোন্ডি (এক ধরনের পাহাড়ি কচু) বড় বড় কাঠের টুকরা দিয়ে পোড়ানো হচ্ছে। এতে করে ধোঁয়ার কুণ্ডলীতে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। কাঁচামাল পোড়ানোর দুর্গন্ধ নাকে লাগছে। কারখানার কাজে ঝুঁকি থাকলেও শ্রমিকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়ে কোনো কিছুই করা হয়নি। এমনকি তারা মাস্ক ও হ্যান্ড গ্লাফসও পরেননি।
কারখানার জায়গার মালিক মোহাম্মদ দাউদ বলেন, কারখানা স্থাপনের বৈধ কাগজপত্র আছে জেনে ভাড়া দিয়েছি, তবে কাগজপত্র দেখিনি।
এ বিষয়ে কারখানার ম্যানেজার বাবলু দে জানান, কারখানাটি আমার বড় ভাইয়ের। মা ট্রেডার্স নামে মিয়ানমার থেকে কয়েল তৈরির কাঁচামাল গোন্ডি সংগ্রহ করে এখানে শুকানো হয়। এই শুকানো কাঁচামাল পরে ঢাকায় ও অন্যান্য স্থানে বিভিন্ন কয়েল ও আগরবাতি কারখানায় পাঠানো হয়। বৃষ্টির কারণে কাঁচামালগুলো আগুনে শুকানো হচ্ছে। পরিবেশ দূষিত হলে আমরা বন্ধ করে দেবো।
পরিবেশ দূষণের ব্যাপারে জানতে চাইলে কারখানার মালিক ছোটন চন্দ্র দে জানান, আমরা এখানে ইউনিয়ন পরিষদের ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে কাজ করছি। আমরা নিয়মিত আয়কর পরিশোধ করি। কিন্তু পরিবেশ অধিদফতরের কোনো ছাড়পত্র নেই।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিনহাজুর রহমান বলেন, কারখানা স্থাপনের তথ্যটি আমার জানা নেই। তবে জনবসতিতে পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্র ছাড়া এভাবে কাঠ পোড়ানো অবৈধ। আমরা শিগগিরই এ ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
আনন্দবাজার/শহক