শুক্রবার, ২০শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৫ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পেঁয়াজু বেচেই কোটিপতি

পেঁয়াজু বেচেই কোটিপতি

গাজীপুরের কালিয়াকৈর বাজারে প্রতিদিন ফুটপাতেই দেড় লাখ টাকার পেঁয়াজুসহ ইফতারি বিক্রি করেন এক ব্যবসায়ী। ফুটপাতে পেঁয়াজু বিক্রি করেই কোটিপতি বনে যাওয়া ওই ব্যবসাযীর নাম মাসুদ খাঁন। মাসুদ খানের তৈরি পেঁয়াজুর সুনাম রয়েছে এলাকাজুড়ে। পেঁয়াজুর সঙ্গে রয়েছে সুস্বাদু ও মজার ইফতারির অয়োজন। এজন্য ইফতারি কিনতে বিকেল থেকে দোকানে ভিড় করে সাধারণ মানুষ। শুধুমাত্র পেঁয়াজু বিক্রি করেই মাসুদ এখন কোটিপতি।

দৈনিক সকাল ৮টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত চলে পেঁয়াজু বিক্রি। তবে বিকেল ৩টা থেকে শুরু হয় ইফতার সামগ্রী বিক্রি। জেলার আশপাশের কয়েকটি জেলা থেকেও পেঁয়াজু এবং ইফতারি কিনতে মানুষজন ভিড় করেন মাসুদের দোকানে। মাসুদসহ ৪ জন বিরতিহীনভাবে বিক্রি করেন ইফতারি।

দোকানের পাশেই আরো ১৫ জন কর্মচারি কাজ করছেন। কেউ পেঁয়াজ কাটছে, কেউবা আলু, বেগুনী চপ বানাচ্ছেন। আবার কেউ বড় পাত্রে করে ইফতারি নিয়ে আসছে দোকানে।

জানা যায়, মাসুদ খানের বাবা মারা যাওয়ার পর ৬ বোন, ২ ভাই ও মাসহ ৯ জনের দায়িত্ব পড়ে মাসুদের ওপর। কারণ তার বাবাই ছিলেন পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। তাই তিনি সংসারের হাল ধরতে কোনো উপায় না পেয়ে ফুটপাতেই শুরু করেন পেঁয়াজু বিক্রি। তার এ সুস্বাদু পেঁয়াজু খেতে ছুটে আসে গাজীপুরসহ আশপাশের জেলার হাজারো মানুষ। পেঁয়াজু বিক্রি করে সম্পত্তির পাশাপাশি নির্মাণ করেছেন নিজের বাড়ি। বোনদেরও দিয়েছেন বিয়ে। বর্তমানে তার দোকানে কাজ করেন প্রায় ২০ থেকে ২৫ জন কর্মচারি।

আরও পড়ুনঃ  আবারও অস্থিতিশীলতার মুখে পণ্যবাজার

তার দোকানে ১০ বছর যাবত পেঁয়াজু বিক্রি করছেন বাবু। তিনি বলেন, দৈনিক সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত কাজ করি। এখানে কাজের বিনিময়ে ১৮ হাজার টাকা বেতন পাই। সেই বেতনে ভালোভাবেই চলে আমার পরিবার।

দোকানের ম্যানেজার ওমর উদ্দিন বলেন, ২০ বছর ধরে এই দোকানে কাজ করছি। দৈনিক ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা বিক্রি হয়। তবে রোজার মধ্যে দেড় লাখ টাকার বেশি বিক্রি হয় দিনে। এখানে কাজ করে তিন মেয়ে বিয়ে দিয়েছি। মাসে এখান হতে ৪৫ হাজার টাকা বেতন পাই।

স্থানীয় চা বাগান এলাকার বাসিন্দা সুলতানা খাতুন বলেন, এখানে তৈরি চা ও ইফতার সামগ্রী ভালো। কোনো ধরনের ময়দা বা ভেজাল কিছু দেয় না। যার কারণে আমরা দূর থেকে এখানে আসছি ইফতারি কিনতে।

মাসুদ খান জানান, দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে ফুটপাতে পেঁয়াজু বিক্রি করি। পেঁয়াজুর সুনাম ছড়িয়ে পড়ায় এখন আমার দোকানে প্রায় ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা বিক্রি হয়। তবে রমজানে এ বিক্রি বেড়ে যায় অনেক। দৈনিক এক থেকে দেড় লাখ পর্যন্ত পেঁয়াজু বিক্রি হয় সাথে ইফতার সামগ্রী।

তিনি আরো জানান, বাবা মারা যাওয়ার পর জীবনে অনেক কষ্ট করেছি, তবে হাল ছাড়িনি। এ ব্যবসা করে বোনদের বিয়ে দিয়েছি, হোটেল করেছি, বাড়িতে বিল্ডিং করেছি। এখন আমার দোকানে ২০ থেকে ২৫ জন কর্মচারী কাজ করে। আল্লাহর রহমতে বেশ ভালো আছি এখন।

সংবাদটি শেয়ার করুন