ঢাকা | শনিবার
২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মন্দাতেও সেরা ফরচুন সুজ

মন্দায় ফিরেছে দেশের প্রধানপুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই)। গতকাল বুধবার দুই পুঁজিবাজারে লেনদেন পরিমাণ কমেছে। এদিন কমেছে সূচকও। অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট দরেও পতন হয়েছে।

এদিন (বুধবার) ডিএসইর লেনদেন পরিমাণ কমে আটশত কোটি টাকার ঘরে চলে এসেছে। যদিও আগের কার্যদিবসে মঙ্গলবারের লেনদেন ছিল হাজার কোটি টাকার কাছাকাছি। অপরদিকে সিএসইর লেনদেন পরিমাণ কমে ২২ কোটি ঘরে চলে এসেছে। আগের কার্যদিবসে মঙ্গলবারের লেনদেন ছিল ৩১ কোটি টাকার ঘরে। দুই স্টক এক্সচেঞ্জ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

হঠাৎ করেই চলতি বছরের গত ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে ডিএসইর লেনদেন হাজার কোটি টাকার নিচে চলে এসেছিল। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি হাজার কোটি টাকায় লেনদেন ওঠলেও তা ধরে রাখতে পারেনি। পরের কার্যদিবস থেকে ফের হাজার কোটি টাকার নিচে নেমেছিল। লেনদেন কমে ৬ শত কোটি টাকার ঘরে চলে এসেছিল। সেখানে থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে ১০ মার্চ হাজার কোটি টাকা ঘরে চলে এসেছিল। এরপরের দিন লেনদেন ফের হাজার কোটি টাকার নিচে এসেছিল। সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে ১৫ মার্চ হাজার কোটি টাকার ঘরে লেনদেন ফিরে।

পরের দিনে সেই অবস্থান ধরে রাখতে পারেনি। ফের লেনদেন ৮ শত কোটি টাকার ঘরে অবস্থান ছিল। এরপর দুই কার্যদিবস ( সোমবার ও মঙ্গলবার) লেনদেন ৯’শত কোটি টাকার ঘরে এসেছিল। সেখান থেকে লেনদেন ফের একদিনের ব্যবধানে ১৮০ কোটি টাকা কমে বুধবার ৮’শত কোটি টাকার ঘরে অবস্থান চলে আসে। লেনদেন বাড়া-কমাকে স্বাভাবিক ভাবেই নিয়েছে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞ বিনিয়োগকারীরা।

এদিকে, পুঁজিবাজারে এসএমই প্লাটফর্মে লেনদেন সহজতর করতে বিনিয়োগকারীদের কোয়ালিফাইড ইনভেস্টর হওয়ার জন্য রেজিস্ট্রেশন জটিলতা সমাধান করার ঘোষণা দেয় গত সোমবার। ডিএসই স্বয়ংক্রিয়ভাবে রেজিস্ট্রেশন করে দেওয়ার ঘোষণার পর গত দুই কার্যদিবস এসএমই মার্কেট প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দর বাড়ছে। ঘোষণার কারণে গত মঙ্গলবার দশটির মধ্যে আট প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দর বাড়ে। একটি দর কমেছে এবং অপরিবর্তিত একটির।

এরপর বুধবারেও আটটি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দর বাড়ে। একটি দর অপরিবর্তিত এবং লেনদেন হয়নি একটির। গত মঙ্গলবার মূল্যসূচক বেড়েছে ১০ শতাংশ। আগের দিনের ৮০৬ পয়েন্টের সূচক মঙ্গলবার ৮৮৭ পয়েন্টে উঠে আসে। বুধবার মূল্যসূচক বেড়েছে ৭ শতাংশ। আগের দিনের ৮৮৭ পয়েন্টের সূচক এদিন ৯৪৯ পয়েন্টে উঠে আসে। গত মঙ্গলবার লেনদেন হয়েছে ৫ কোটি ২০ লাখ ৮৩ হাজার টাকা। বুধবার লেনদেন হয়েছে ৬ কোটি ৮ লাখ ৬২ হাজার টাকা।

দুই স্টকে (ডিএসই ও সিএসই) এদিন (বুধবার) ২৯ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ কোম্পানির শেয়ার দর উত্থান হয়েছে। এর মধ্যে ডিএসইর ২৮ দশমিক ৭৬ শতাংশ এবং সিএসইর ২৯ দশমিক ৩৫ শতাংশ কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট দর উত্থান হয়। এদিন পুঁজিবাজারে ৫৫ দশমিক ৫৯ শতাংশ কোম্পানির শেয়ার দর পতন হয়েছে। এর মধ্যে ডিএসইর ৫৪ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ এবং সিএসইর ৫৭ দশমিক ১০ শতাংশ কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট দর পতন হয়েছে।

এদিন (বুধবার) ডিএসইতে সিরামিক, আইটি এবং সেবা আবাসন খাতের শতভাগ কোম্পিানির শেয়ার দর কমেছে। এদিন ব্যাংক, সিমেন্ট, ইঞ্জিনিয়ারিং, খাদ্য আনুষঙ্গিক, জ্বালানি শক্তি, বিবিধ, পেপার, ওযুধ রসায়ন, চামড়া, টেলিকম এবং বস্ত্র খাতের অধিকাংশ কোম্পিানির শেয়ার দর কমেছে। অপরদিকে এদিন বিমা, পাট, ভ্রমণ অবসর এবং ফান্ড খাতের কোম্পানিগুলোর শেয়ার উত্থান পতনে মিশ্রাবস্থায় রয়েছে। কোম্পানিগুলোর শেয়ার দর এ ধরনের বাড়া-কমাকে স্বাভাবিক হিসেবে দেখছেন বিনিয়োগকারীরা বলে জানায় পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা।

ডিএসইতে এদিন লেনদেন হয়েছে ৮০১ কোটি ৩২ লাখ টাকার শেয়ার। আগের কার্যদিবস মঙ্গলবার ৯৮১ কোটি ৬১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছিল। সোমবার লেনদেন হওয়া ৩৭৯টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ার ও ইউনিটের দর বেড়েছে ১০৯টির, কমেছে ২০৫টির এবং পরিবর্তন হয়নি ৬৫টির। ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১১ দশমিক ৫৩ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৭৫৩ দশমিক ৭৬ পয়েন্টে। এছাড়া ডিএসই-৩০ সূচক ৫ দশমিক ৪৮ পয়েন্ট এবং ডিএসইএস সূচক ১ দশমিক শূন্য ৪ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ২ হাজার ৪৬৫ দশমিক ৫৯ পয়েন্টে এবং ১ হাজার ৪৬৩ দশমিক ৯৩ পয়েন্টে।

এদিন ডিএসইতে ফরচুন সুজের শেয়ার কেনাবেচায় কদর সবচেয়ে বেশি ছিল। ফলে লেনদেন শীর্ষে ডিএসইতে কোম্পানিটির শেয়ার স্থান পেয়েছে। এদিন ডিএসইতে ফরচুন সুজ ৮১ কোটি ৯৫ হাজার টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে। এদিন ডিএসইতে লেনদেনের শীর্ষ অবস্থানে থাকা অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে জেনেক্স ইনফোসিস ৩৩ কোটি ৬০ লাখ টাকা, বেক্সিমকো ২৬ কোটি ১০ লাখ টাকা, প্রভাতি ইন্স্যুরেন্স ২৫ কোটি ৩৩ লাখ টাকা, বিডি ল্যাম্পস ১৮ কোটি ৮৪ লাখ টাকা, সোনালি পেপার ১৭ কোটি ৪৬ লাখ টাকা, বিডি কম ১৫ কোটি ২৭ লাখ টাকা, নাহি এ্যালুমিনিয়াম ১৪ কোটি ৭১ লাখ টাকা, ওরিয়ন ফার্মা ১৪ কোটি ১৩ লাখ টাকা এবং লার্ফাজ-হোল্ডসিম ১৩ কোটি ৪৭ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে।

অপরদিকে সিএসইতে বুধবার লেনদেন হয়েছে ২২ কোটি ৯৭ লাখ টাকা। এর আগের কার্যদিবস মঙ্গলবার লেনদেন হয়েছিল ৩১ কোটি ৬৯ লাখ টাকা। এদিন সিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩১০টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ার ও ইউনিট দর বেড়েছে ৯১টির, কমেছে ১৭৭টির এবং পরিবর্তন হয়নি ৪২টির।

এদিন সিএসইর প্রধান সূচক সিএএসপিআই ২৯ দশমিক ১৭ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৯ হাজার ৭৭৫ দশমিক ৩৫ পয়েন্টে। সিএসই-৫০ সূচক ২ দশমিক ৮৮ পয়েন্ট, সিএসই-৩০ সূচক ৭৭ দশমিক ২৮ শতাংশ এবং সিএসসিএক্স সূচক ১৬ দশমিক ৭৫ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ১ হাজার ৪৫৮ দশমিক ৭৬ পয়েন্টে, ১৪ হাজার ১২৫ দশমিক ৯৩ পয়েন্টে এবং ১১ হাজার ৮৬৩ দশমিক ১০ পয়েন্টে। এছাড়া সিএসআই সূচক ১ দশমিক ২১ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ২৪৫ দশমিক শূন্য ৩ পয়েন্টে।

আনন্দবাজার/টি এস পি

সংবাদটি শেয়ার করুন