বৃহস্পতিবার, ১৯শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৪ঠা আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঝাল রসগোল্লা, খেয়েছেন?

যারা কম মিষ্টির রসগোল্লা খেতে পছন্দ করেন, তারা মিষ্টির সঙ্গে ঝাল খেতে আপত্তি করবেন না নিশ্চয়ই। আর রসগোল্লা যদি হয় মরিচের তৈরি তাহলে কেমন হয়? এমন রাসগোল্লার কথা শুনে কেউ হয়তো অবাক হবেন, কেউ প্রশ্ন তুলবেন এটা কীভাবে সম্ভব?

যারা কম মিষ্টির রসগোল্লা খেতে পছন্দ করেন, তারা মিষ্টির সঙ্গে ঝাল খেতে আপত্তি করবেন না নিশ্চয়ই। আর রসগোল্লা যদি হয় মরিচের তৈরি তাহলে কেমন হয়? এমন রাসগোল্লার কথা শুনে কেউ হয়তো অবাক হবেন, কেউ প্রশ্ন তুলবেন এটা কীভাবে সম্ভব? তবে কুমিল্লা কিংবা নেত্রকোণায় কাঁচা মরিচের তৈরি রসগোল্লার কদর কিন্তু বাড়ছেই। নেত্রকোনায় বালিশ মিষ্টির পাশাপাশি বলা যায়, ঝড় তুলতে এসেছে সবুজ রঙের ঝাল রসগোল্লা। নেত্রকোণা পৌর শহরে আরামভাগ রোডে অতি পরিচিত দুর্গা কেবিন নামের একটি প্রতিষ্ঠান এই কাঁচা মরিচের গোল্লা তৈরি করে মানুষের নজর কেড়েছে।

রসগোল্লার ছানার সঙ্গে কাঁচামরিচ মিশিয়ে চিনির শিরায় ডুবিয়ে তৈরি করা হয় সবুজ রঙের রসগোল্লা। তবে এই রসগোল্লা যে ভীষণ ঝাল হয়, তা নয়। ছানার সঙ্গে কাঁচা মরিচ মিশিয়ে ছেনে গোল গোল করে গোল্লা বানিয়ে চিনির শিরায় ডুবানো হয় বিশেষ এ রসগোল্লাকে। তারপর কেজি বা পিস অনুসারে বিক্রি করা হয়। প্রতি কেজি ৫০০ টাকা ও প্রতি পিস ৫০ টাকায়। অভিনব এ রসগোল্লা মুখে দিলে প্রথমে মিষ্টি তারপর ঝাল স্বাদ পাওয়া যায়। সঙ্গে পাওয়া যায় কাঁচা মরিচের ফ্লেভার। আর এর স্বাদ নিতে প্রতিদিনই বাড়ছে ক্রেতাদের ভিড়। বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানাজানি হলে চাহিদা বাড়তে থাকে।

নেত্রকোণার কারিগর মাজহারুল জানান, গোল্লায় কোনো সবুজ রং ব্যবহার করা হয়নি। এক কেজি রসগোল্লা তৈরি করতে এক কেজি ছানার সঙ্গে ২০০ গ্রাম কাঁচা মরিচ পিষে মিহি করে মেশানো হয়। এতেই মিষ্টির সবুজ রংটা চলে আসে। ময়দা দেড়শ গ্রাম, সুজি ৫০ গ্রাম ও চিনি ৩ থেকে ৪ কেজি লাগে। আর একটি মিষ্টি বানাতে ৩০ গ্রামের মতো চিনি লাগে। দুর্গা কেবিনের ম্যানেজার ভজন বলেন, এই রসগোল্লা নেত্রকোণায় প্রথম আমরাই তৈরি করা শুরু করেছি। এক মাস পূর্বে ‘প্রথমে আমরা এই মিষ্টি পরীক্ষামূলকভাবে তৈরি শুরু করি। তবে এ কয়দিনে মিষ্টির চাহিদা বাড়ছে অনেক। এলাকায় ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। চাহিদা অন্য সব রসগোল্লার চেয়ে একটু বেশি। যতদিন যাচ্ছে এর চাহিদাও ধীরে ধীরে বাড়ছে।

আরও পড়ুনঃ  ভারতের চিনি উৎপাদনে ৩২% প্রবৃদ্ধি

ক্রেতা নেত্রকোণা পৌর শহরের মাহমুদপুর এলাকার বাসিন্দা হামিদুর রহমান বলেন, প্রথমে আমি কাঁচামরিচের রসগোল্লার নাম শুনে খেতে ভয় পেয়ে ছিলাম। প্রচণ্ড ঝাল হবে মনে হয়। কিন্তু না স্বাদ একটু আলাদা। আরেক জন ক্রেতা শান্তা চৌধুরী স্মৃতিমনি জানান, আমি ফেসবুকে একটা পেইজ থেকে জানতে পেরে মিষ্টিটা টেস্ট করতে গিয়েছিলাম। আমার কাছে খুব ভালো লেগেছে। দেখতে যেমন সুন্দর খেতেও অনেক মজার ছিলো।

অন্যদিকে, কুমিল্লার মাতৃভাণ্ডার রসমলাই ও খাদি কাপড়ের খ্যাতি দেশ ছাড়িয়ে বিদেশেও। এবার রেলিশ বেকারি এন্ড কনফেকশনারি মিষ্টির জগতে কাঁচা মরিচের সবুজ রঙেরর রসগোল্লা তৈরি করে মিষ্টি প্রেমীদের মধ্যে রীতিমত ঝড় তুলেছে। রসগোল্লাটির প্রধান ক্রেতারা হলেন, যারা কম মিষ্টি খেতে পছন্দ করেন। প্রতিষ্ঠানটি দেড় মাস আগে ১৫ কেজি দিয়ে শুরু করে বর্তমানে প্রতিদিন প্রায় ৪০০ কেজি মিষ্টি বিক্রয় করে থাকেন। এই রসগোল্লার দাম অন্যান্য রসগোল্লার চেয়ে একটু বেশি। কুমিল্লা নগরির বিভিন্ন স্থানে রেলিশের ৭টি শাখা রয়েছে এর মধ্যে সকল শাখাগুলোতেই রসগোল্লা কেনার ভিড় লেগে থাকে। তাছাড়া, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও এর ব্যাপক সাড়া রয়েছে।

কারিগর সজিব আহম্মেদ জানান, গত ১৪ বছর ধরে এখানে কাজ করছি। এর আগে গাজর, মসলা, হিমসাগর আমের রসে রসগোল্লা তৈরি করেছি। তবে এগুলো গ্রাহকদের তেমনভাবে আকৃষ্ট করেনি। এখন কাঁচা মরিচের ঝাল রসগোল্লাটি তৈরি করে দেশ জুড়ে অনেক সাড়া পাচ্ছি। রেলিশের বিশ্বরোড শাখার ব্যবস্থাপনা পরিচালক ওমর ফারুক বলেন, কাঁচা মরিচের সবুজ রঙের নতুন স্বাদের রসগোল্লাটি দেশে প্রথম আমরা কুমিল্লাত তৈরি করেছি। তাই এর চাহিদা সারা দেশ জুড়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে।

আরও পড়ুনঃ  সম্পদ বিক্রির চুক্তি করতে পারবে না তালিকাভুক্ত কোম্পানি

আনন্দবাজার/শহক

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন