রবিবার, ২২শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৭ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ফুলচাষে সহায়তা করুন

ফুলচাষে সহায়তা করুন

এমনিতেই বাঙালির অনুষ্ঠানের শেষ নেই। নানা শিল্প-সংস্কৃতি লালন করতে গিয়ে বাঙালি সারাবছরই ব্যস্ত থাকে। প্রবাদ আছে বাঙালির ১২ মাসে ১৩ পার্বণ। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সাথে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশের এই উৎসব, পার্বণের ক্ষেত্র গত কয়েক বছরে আরও বেড়ে হয়েছে কয়েক গুণ। এই উৎসব-পার্বণ পালনেও বাঙালিয়ানার সাথে যুক্ত হয়েছে বিশ্বের নানা দেশের নানান আয়োজন। যেসব আয়োজনের মূল হয়ে দাঁড়িয়েছে ফুল।

আর সেসব ফুলের মধ্যে কাঁচা ফুলের ব্যবহারই হয়ে উঠেছে মূখ্য। ফলে দেশের বিভিন্ন এলাকায় ফসলি জমিতে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে গড়ে উঠেছে নানান জাতের ফুলের ক্ষেত। যা সারাবছরই চাষ হচ্ছে। আর বাণিজ্যিকভাবে এই ফুল চাষ লাভজনক। সে কারণে অনেক এলাকায় ফসল চাষ বন্ধ করে ফুল চাষে ঝুকে পড়েছে চাষিরা। ঢাকার পাশেই সাভার থেকে শুরু করে দেশের বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক ফুল চাষ শুরু হয়েছে। গোলাপ, গাদা, রজনীগন্ধা থেকে শুরু করে হাল সময়ের বিদেশি জনপ্রিয় ফুল টিউলিপ পর্যন্ত বাংলাদেশে উৎপাদন হচ্ছে। আরও আনন্দ সংবাদ হচ্ছে এই ফুল দেশের চাহিদা পূরণ করে বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে।

বিশেষ করে দিবসকেন্দ্রিক এই ফুলের চাহিদা খুব বেশি। আগে আমাদের দেশে দুই ঈদ, একুশে ফেব্রুয়ারি, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, পহেলা ফাল্গুন, পহেলা বৈশাখেই ফুলের চাহিদা ছিল। এরসাথে পর্যায়েক্রমে যুক্ত হয়েছে -বিশ্বের অন্যান্য দেশের মত ক্রিসমাস ডে, ইংরেজি নতুন বছর, ভালোবাসা দিবস, মা দিবসসহ নানান দিবস। এসবের মধ্যে অনেকগুলো দিবস বাংলাদেশেও ঘটা করে পালিত হওয়ায় দিবসগুলোতে ফুলের চাহিদা থাকে প্রচুর। একদিনেই কোটি কোটি টাকার ফুল কেনাবেচা হয়ে থাকে। এছাড়া বিয়ে বাড়িসহ বাঙালির নিজস্ব কিছু আচার অনুষ্ঠান তো আছেই। যেসবে ফুলের ব্যবহার হয়ে থাকে। এসব কারণে ইদানীংকালে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাণিজ্যিকভিত্তিতে ফুলের চাষ বেড়েছে আশাতীত।কৃষকদের আয়ের একটা বিশাল জায়গা জুড়ে আছে এখন ফুল। বিশেষ করে পহেলা ফাল্গুন আর ভ্যালেন্টাইন্স ডে যেন ফুলচাষিদের ঈদ বাণিজ্য। হাল সময়ে ফুল চাষিরা অধির আগ্রহে অপেক্ষা করতে থাকে এই দিন দু’টির জন্য। এরমধ্যে করোনা মহামারিতে ফুলচাষিদের ভাগ্যে নেমে আসে দূর্যোগের ঘনঘটা। ফুলের সৌন্দর্য আর সৌরভ যেন তাদের কাছে মনে হতে থাকে অভিশাপ। চোখে দেখতে থাকে সরষে ফুল। সেই করোনার মাঝেই আবার ভাগ্য বদলের দিন এসেছে। আজ সেই দিন-ভ্যালেন্টাইন্স ডে, পহেলা ফাল্গুন। এই দিনকে কেন্দ্র করে ২৫ কোটি টাকার ফুল কেনাবেচার প্রত্যাশা ফুলচাষিদের।

আরও পড়ুনঃ  বাছিরের আপিল শুনানি গ্রহণ, জরিমানা স্থগিত

চাষিদের সেই প্রত্যাশাও পূরণের পথে। আর বাদ বাকিটা নির্ভর করবে আগামী একুশে ফেব্রুয়ারি আর মহান স্বাধীনতা দিবসের দিনটিকে ঘিরে। এরমাঝে ফুলচাষিদের যা সহায়তা প্রয়োজন তা দিতে সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলোর কৃষি বিভাগ থেকে শুরু করে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোকে তৎপর থাকতে হবে। সারাদেশে যেভাবে বিভিন্ন জাতের ফুল চাষ শুরু হয়েছে তাতে ঠিকমতো সহায়তা পেলে দেশের অর্থনীতিতে এই ফুলও বড় ধরনের  অবদান রাখতে সক্ষম হবে। রাজস্ব আয়ে বিশাল ভূমিকা রাখবে। রপ্তানি বাণিজ্যেও বৈদেশিক আয় বাড়ানো সম্ভব হবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন