আজিজুর রহমান
১৯৭১ ও ২০২১ সাল! মাঝে অর্ধশতক বছরের ব্যবধান। কিন্তু একই দিনে দুটি বছরেরই শুরু এবং শেষ। একই রয়েছে বার, সপ্তাহ, মাস। ৫০ বছর ব্যবধানে একাত্তর বর্ষপঞ্জিকা ফিরে এসেছে একুশে। এবার একাত্তরের চেতনাই হবে একুশের শক্তি।
দীর্ঘ ঔপনিবেশিক শাসনসহ নানা জাতি-গোষ্ঠী দ্বারা হাজার বছরের নির্যাতিত নিপীড়িত পরাধীন বাঙালি জাতি ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর নেতৃত্বে পাকিস্থানের শোষণ-নির্যাতনের শৃঙ্খল থেকে মুক্ত হয়েছিল। বঙ্গবন্ধুর ডাকে সারা দিয়ে ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চে দেশের মুক্তিকামী মানুষ মহান মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণার মধ্য দিয়ে বিশ্বের মানচিত্রে স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হয়।এরপর দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মধ্যদিয়ে বাঙালি জাতির স্বাধীন বাংলাদেশের বিজয় অর্জিত হয়!
সামাজিক নিরাপত্তা, অর্থনৈতিক স্বয়ংসম্পূর্ণতা, শ্রেণী বৈষম্যহীন এবং শোষণমুক্ত সমাজ গঠনই মুক্তিযুদ্ধের প্রধান লক্ষ্য ছিল। চার দশকে মধ্যম আয়ের দেশ হয়েও আমরা এখনো অর্থ-সামাজিক নিরাপত্তা, শোষণ, স্বজনপ্রীতি এবং দুর্নীতি থেকে মুক্ত হতে পারিনি। বঙ্গবন্ধু ও একাত্তরের চেতনায় একুশে অর্থ-সামাজিক নিরাপত্তা এবং দুর্নীতি মুক্ত সমাজ গড়ে তুলতে হবে।
বিগত কয়েক বছরে বাজার অর্থনীতিতে সিন্ডিকেটের প্রভাব প্রকট হছে। চাল, ডাল, তেল সহ মশলা জাতীয় খাবার পণ্যের দাম অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে।কিন্তু সে তুলনায় কৃষকরা ন্যায্য মূল্য পাচ্ছে না। এতে করে ভোগান্তিতে পড়ছে কৃষকসহ শ্রমজীবী মানুষ। সাধারণ মানুষের কাছে ব্যবসা-বানিজ্যে সিন্ডিকেট এক আতঙ্কের নাম। এই সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রণ শুধু বাজার পণ্যের দামের কারসাজীতেই সীমাবদ্ধ নয়; এই সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি হয়ে পড়ছে সরকারও!
দুর্নীতি, লুটপাট, ধর্ষণ, গুন্ডাবাজির কারণে সমাজ আজ ক্ষতিগ্রস্ত। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়তে হলে একাত্তরের চেতনাকে ধারণ করে রুখে দিতে হবে দুর্নীতি, লুটপাট, ধর্ষণ, গুন্ডাবাজি। গড়তে হবে অর্থ-সামাজিক নিরাপত্তা, শোষণ মুক্ত, দারিদ্র্য মুক্ত অসাম্প্রদায়িক বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ।
লেখক: আজিজুর রহমান
শিক্ষার্থী,
হাজী মোহাম্মাদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (হাবিপ্রবি)