ফুয়াদ আদনান বিন জামাল
অনেকেই রাজনৈতিক, সামাজিক ও বিভিন্ন দায় থেকে বর্তমান টাউন হল পুন:নির্মাণ, প্রতিস্থাপন, ভেঙ্গে ফেলা, গণশুনানি ইত্যাদি নিয়ে সরব আলোচক ও আমাদের কথা বলতে বলছেন। হাস্যকর একটা পরিস্থিতি তথা লজ্জাজনক এই যে, বর্তমান প্রজন্ম যেখানে বিভ্রান্ত সেখানে এক পক্ষ আধুনিকায়নের পক্ষে আরেক পক্ষ ইতিহাস ঐতিহ্য আর সংস্কৃতির পক্ষে। এখন আপনি যে পক্ষেই কথা বলবেন প্রতিপক্ষ তার দালাল বানিয়ে ছাড়বে।
আমি ইতিহাস, ঐতিহ্য আর সংস্কৃতির নগর মস্কোতে দেখেছি আধুনিকায়নের এ সময়ে তারা তাদের ঐতিহ্যকে আগে ধারণ করেছে তারপর বাকি সমস্ত কিছু। ছুটে চলা সে শহরে পুরাতন ইমারতগুলোর আধুনিকায়নের ছোঁয়াই যেন তাদের ইতিহাস, ঐতিহ্যের, ঐশ্বর্যের জানান দেয়। বেশ কিছু মানুষ কুমিল্লার টাউন হল ভাঙ্গা নিয়ে এমনও তীর্যক মন্তব্য করছেন যে অদূর ভবিষ্যতে আধুনিকায়নের দায় দিয়ে আমাদের না আবার ধর্মসাগরকে মাটি ভরাট করে জাপান গার্ডেন সিটির মত করতে হয়! আসলে সবই বিজ্ঞ নগরবিদ বিশিষ্ট নাগরিক সুশিল সমাজ ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দদের উপর নির্ভর করে।
কারণ তাঁরাই এ সমাজের কর্তা। তাদের নির্দেশিত পথেই ইতিহাস, সংস্কৃতি ও ভবিষ্যত প্রজন্ম হাঁটবে।অনেকে আমার ভুল ধরতেও পারেন। তবে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়ে যদি কষাঘাত হয় তাহলে বীরচন্দ্র নগর পাঠাগার ও মিলনায়তন আমাদের জন্য অভিশপ্ত বার্তা নিয়ে আসবে। এই বীর চন্দ্র পাঠাগার ও মিলনায়তন কুমিল্লার ইতিহাস, ঐতিহ্যের ধারক তথা বাহক। এর সংস্কারের অবশ্যই প্রয়োজন আছে তথা তা জনতার ব্যবহারেরও উপযোগী রাখতে হবে। এখানে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর পদধূলি থেকে শুরু করে বহুগুণী জনের পদধূলি রয়েছে। উনবিংশ শতাব্দির সংগ্রামের বহু ইতিহাস, সংস্কৃতি এ মিলনায়তন আকড়ে আছে।
আমি আশা রাখবো, কুমিল্লার বিজ্ঞ অভিভাবকরা এই বীরচন্দ্র নগর পাঠাগার ও মিলনায়তন নিয়ে ভবিষ্যত প্রজন্মের ইতিহাস ও সংস্কৃতি তথা আধুনিকায়নের কথা চিন্তা করে একটি সঠিক সিদ্ধান্ত নিবেন। যা আমাদের প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে ইতিহাসের স্বর্নালী অক্ষরে চিরভাস্বর থাকবে।
জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু
লেখক :
ফুয়াদ আদনান বিন জামাল
সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক, কুমিল্লা সরকারী কলেজ ছাত্রলীগ
সাবেক সাধারণ সম্পাদক, রাশিয়া ছাত্রলীগ