৫০ শয্যা বিশিষ্ট ডিমলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স
- দশ বছর ধরে বন্ধ অপারেশন থিয়েটার
- অযত্নে নষ্ট লাখ টাকার যন্ত্রপাতি
হাসপাতালে ২১ জন ডাক্তারের বিপরীতে কাগজে কলমে ১৪ জন থাকলেও একজন দন্ত চিকিৎসকসহ মাত্র ৬ জন কর্মরত আছেন। বাকি ৮ জন সংযুক্তিতে দায়িত্ব পালন করছেন অন্যান্য জেলা উপজেলায়
সংকটের আরেক নাম ৫০ শয্যা বিশিষ্ট ডিমলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। মাত্র ৬ জন ডাক্তার দিয়ে চলছে এ উপজেলার প্রায় সাড়ে তিন লাখ মানুষের স্বাস্থ্যসেবা। পাশাপাশি রয়েছে চতুর্থ শ্রেণির জনবল সংকট।
অপরদিকে দীর্ঘ একদশকে চালু হয়নি হাসপাতালটির অপারেশন থিয়েটার। এছাড়া সার্জারি, অ্যানেসথেশিয়া ও গাইনী ডাক্তারের অভাবে অকেজো পড়ে আছে অপারেশন থিয়েটার (ওটি বিভাগ)। বন্ধ রয়েছে সিজারিয়ান অপারেশনসহ জটিল অপারেশন। এতে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন এ উপজেলার দরিদ্র রোগীরা। সরকার লাখ লাখ টাকা ব্যয়ে স্বয়ংক্রিয় আধুনিক অপারেশন থিয়েটার স্থাপন করলেও তা সেবা প্রত্যাশীদের কাজে আসছে না। দীর্ঘদিন অব্যবহৃত থাকায়, নষ্ট হওয়ার উপক্রম অপারেশন থিয়েটারের দুটি অ্যানেসথেশিয়া মেশিনসহ অন্যান্য সরঞ্জামাদি।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ২০১২ সালে নতুন করে আধুনিক ভবন, পোস্ট অপারেটিভ রুমসহ তৈরি করা হয় অত্যাধুনিক ওটি বিভাগ। সেই সঙ্গে অপারেশন চালুু করতে সকল যন্ত্রপাতি সরবরাহ করলেও কার্যক্রম ও পদায়ন করেনি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ। জনবল না থাকায় অপারেশন থিয়েটারের কার্যক্রমও চালুু করতে পারছেনা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ । প্রয়োজনীয় সকল যন্ত্রপাতি থাকলেও কেবল সার্জারি, অ্যানেসথেশিয়া ও গাইনী কনসালটেন্ট না থাকার কারণে এক দশক ধরে বন্ধ রয়েছে অপারেশন।
এছাড়াও হাসপাতালে ২১ জন ডাক্তারের পদসংখ্যার বিপরীতে কাগজে কলমে ১৪ জন থাকলেও বর্তমানে কর্মরত ডাক্তার একজন দন্ত চিকিৎসকসহ মাত্র ৬ জন। বাকি ৮ জন ডাক্তার সংযুক্তিতে দায়িত্ব পালন করছেন অন্যান্য জেলা উপজেলায়।
সরেজমিনে দেখা যায়, গড়ে প্রতিদিন ৫৫০ থেকে ৬০০ জন রোগী দেখছেন মাত্র ৫ জন ডাক্তার। করোনার নমুনা সংগ্রহ, মা ও শিশু পরিচর্যা কেন্দ্রে সেবা দিতে গিয়ে বিপাকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ৫০ শয্যার এ হাসপাতালে গড়ে ৮৫ থেকে ১০০ জন রোগী প্রতিদিন ভর্তি হয়। তবুও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সেবা প্রদানে অবিচল থেকে কাজ করে গেলেও জরাজীর্ণ ভবন ও ছাদ চুইয়ে পানি পড়ায় চিকিৎসা সেবা ব্যাহত হচ্ছে। ভবনের ভেতরেও ছাদের পলেস্তার খসে পড়ছে। এরপরও ঝুঁকি নিয়ে চলছে চিকিৎসাসেবা। এতে হাসপাতালের চিকিৎসক ও রোগীরাও আতঙ্কে রয়েছেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সারোয়ার আলম জানান , ৫০ শয্যার ক্যাটাগরিতে ব্যাপক জনবল ঘাটতি রয়েছে। অনেকগুলো মেডিকেল অফিসারের পদ ফাঁকা। দীর্ঘদিন ধরে অপারেশনের জন্যে তিনটি পদ (সার্জারি, অ্যানেসথেশিয়া ও গাইনী) শূণ্য। পর্যাপ্ত যন্ত্রপাতি থাকলেও জনবলের কারণে ওটি চালু করা যাচ্ছে না। অপারেশন থিয়েটার চালু করতে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত আছে।