শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সস্তা সিগারেট বাড়াচ্ছে মৃত্যু

সস্তা সিগারেট বাড়াচ্ছে মৃত্যু

তামাকের ব্যবহারে দেশে প্রতিবছর মৃত্যু হচ্ছে এক লাখ ৬১ হাজার মানুষের। পঙ্গুত্ব বরণ করছেন আরও কয়েক লাখ মানুষ। কারণ হিসেবে কম দামে সিগারেটের প্রাপ্তির বিষয়ে ইঙ্গিত দেন তামাকবিরোধী সংগঠনের নেতারা। তারা জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় বাজেটে তামাকের ওপর কর ও মূল্যবৃদ্ধির দাবি জানান।

গতকাল শনিবার ‘তামাক কর ও মূল্য পদক্ষেপ: কোম্পানির কূটকৌশল ও আমাদের করণীয়’ শীর্ষক ওয়েবিনারে এসব কথা বলা হয়। এসময় তামাকের ভয়াবহতা তুলে ধরেন তামাক নিয়ন্ত্রণবিষয়ক প্রকল্প প্রধান হাসান শাহরিয়ার।

ওয়েবিনারে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২০২১ সালের তথ্য তুলে ধরে তামাকবিরোধী সংগঠনের নেতারা বলেন, সবচেয়ে কম দামে সিগারেট পাওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থান ১৬৫টি দেশের মধ্যে ১০৭তম। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে সবচেয়ে কম দামি সিগারেটের দাম বাংলাদেশের কম দামি সিগারেটের চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশি। কার্যকর করারোপের অভাবেই দেশে সিগারেট সস্তা থেকে যাচ্ছে।

ওয়েবিনারে বিশ্বব্যাংকের ২০১৯ সালের প্রতিবেদন উল্লেখ করে বলা হয়, দেশে সিগারেটের অবৈধ বাণিজ্য ২৭টি দেশের মধ্যে সবচেয়ে কম, মাত্র ১ দশমিক ৮ শতাংশ। সে কারণে সিগারেটের রাজস্ব ফাঁকি তথা অবৈধ বাণিজ্য নিয়ে যে প্রচারণা তা নীতিনির্ধারকদের বিভ্রান্ত করার প্রচেষ্টা মাত্র। সিগারেট থেকে যে রাজস্ব আসে তার প্রায় পুরোটাই (৯৬ শতাংশ) ভোক্তা প্রদান করে পরোক্ষ কর হিসেবে। কাজেই সিগারেট কোম্পানিগুলো সবচেয়ে বেশি কর দেয় এটি মোটেও সত্য নয়।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) তথ্য তুলে ধরে বক্তারা বলেন, দেশের বিড়িশিল্পে কর্মরত নিয়মিত-অনিয়মিত এবং চুক্তিভিক্তিক মিলিয়ে পূর্ণ সময় কাজ করার সমতুল্য শ্রমিক সংখ্যা মাত্র ৪৬ হাজার ৯১৬ জন। বিড়ি শ্রমিকদের সংখ্যা নিয়ে মালিকপক্ষ এ ধরনের অসত্য তথ্য প্রচার করে নীতিনির্ধারকদের কাছ থেকে সুবিধা আদায়ের চেষ্টা করেন।

আরও পড়ুনঃ  ডিএনসিসির ৪৫০০ কোটি টাকার বাজেট অনুমোদন

ওয়েবিনারে আরও জানানো হয়, কর-প্রণেতাদের প্রভাবিত করতে সংসদ সদস্যদের মাধ্যমে ডিও লেটার প্রদান, সুবিধাভোগী অর্থনীতিবিদদের দিয়ে পত্রিকায় কলাম প্রকাশ, মিডিয়া ক্যাম্পেইন, বিড়ি শ্রমিকদের ব্যবহার করে দেশব্যাপী তথাকথিত আন্দোলন, বিদেশি কূটনীতিকদের দিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ে চিঠি প্রেরণ এবং বিভিন্ন ব্যবসায়িক সংগঠনের মাধ্যমে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে বৈঠক প্রভৃতি কার্যক্রম করে তামাক কোম্পানিগুলো।

ওয়েবিনারে অংশ নেওয়া তামাকবিরোধী সংগঠনসমূহের নেতারা জানান, তামাক কোম্পানিগুলো নীতিনির্ধারকদের বিভ্রান্ত করতেই কর ও মূল্যবৃদ্ধির বিপক্ষে বিভিন্ন যুক্তি তুলে ধরে।

ওয়েবিনারে আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন, ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডস (সিটিএফকে) বাংলাদেশের লিড পলিসি অ্যাডভাইজর মো. মোস্তাফিজুর রহমান, ভাইটাল স্ট্রাটেজিস’র বাংলাদেশ কান্ট্রি অ্যাডভাইজার মো. শফিকুল ইসলাম, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের ইপিডেমিওলজি অ্যান্ড রিসার্চ বিভাগের অধ্যাপক ডা. সোহেল রেজা চৌধুরী।

আনন্দবাজার/শহক

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন