শুক্রবার, ২৬শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১১ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বায়ুদূষণ: ঢাকাকে টপকালো গাজীপুর

বায়ুদূষণ ঢাকাকে টপকালো গাজীপুর
  • সারাদেশে গড়ে ১.৫৭ গুণ বেশি দূষণ
  • শীর্ষ তিন শহর ঢাকা, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জে আদর্শমানের চেয়ে দূষণ ৪-৫ গুণ বেশি
  • বায়ুদূষণ রোধে স্বল্পমেয়াদী, মধ্যমেয়াদী ও দীর্ঘমেয়াদী ১৫ দফা সুপারিশ

ঢাকা পৃথিবীর বসবাস অযোগ্য শহরগুলোর তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে বলে বিভিন্ন সময়ে দ্যা ইকোনোমিস্টসহ আন্তর্জাতিক প্রতিবেদনে ওঠে এসেছে। বিশ্বের রাজধানী শহরগুলোর মধ্যে দূষণের দিক থেকেও দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল ঢাকা শহর। তবে এবার বায়ুদূষণের দিক দিয়ে ঢাকাকে পেছনে ফেলে শীর্ষে উঠে এসেছে গাজীপুর শহর। দেশে প্রথমবারের মতো ৬৪ জেলার বায়ুমান গবেষণায় এমন তথ্য পাওয়া গেছে। গবেষণায় দেখা যায়, গাজীপুর জেলায় দূষণের মান ছিল প্রতি ঘনমিটারে ২৬৩.৫১ মাইক্রোগ্রাম। যেখানে বায়ুর আদর্শ মান থাকার কথা ৬৫ মাইক্রোগ্রাম।

সারাদেশের বায়ুমানের ওপর করা বেসরকারি স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটির বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্রের (ক্যাপস) গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশে সবচেয়ে কম দূষিত শহর মাদারীপুর। যার বায়ুমান প্রতি ঘনমিটাৱে ৪৯.০৮ মাইক্রোগ্রাম। ক্যাপস গত বছরের ৬ জানুয়ারি থেকে ৬ এপ্রিল পর্যন্ত দেশের ৬৪ জেলার ৩১৬৩টি স্থানের বস্তুকণার মান নিয়ে গবেষণা করে এ প্রতিবেদন তুলে ধরে।

গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘ক্যাপসের দেশব্যাপী ৬৪ জেলার বায়ু দূষণ সমীক্ষা ২০২১’ শীর্ষক প্রতিবেদনের মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটির পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের প্রধান ও ক্যাপস-এর প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার। বিশ্বব্যাপী অসংক্রামক রোগে যে পরিমাণ মানুষের মৃত্যু হয় এর চেয়ে বেশি মৃত্যু বায়ুদূষণের কারণে হয়ে থাকে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যমতে, বায়ু দূষণের কারণে প্রতিবছর ৪.২ মিলিয়ন বা ৪২ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়।

সাম্প্রতিককালে বাংলাদেশের পরিবেশ দূষণ এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে দেশের বিভিন্ন শহরে বসবাসের যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। এমন পরিস্থিতিতে প্রথমবারের মতো দেশব্যাপী ৬৪ জেলায় বায়ু দূষণের উৎস, পরিমাণ এবং ক্ষতিকারক দিকগুলা নির্ণয় করার জন্য স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটির পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান, ক্যাপসের প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক প্রফেসর ড.আহমদকামরুজ্জমান মজুমদারের নেতৃত্বে ৮১ সদস্যের একটি গবেষক দল বায়ুমানের বিজ্ঞানভিত্তিক গবেষণা করেন।

গবেষণা থেকে দেখা যায়, ২০২১ সালে বাংলাদেশের ৬৪ জেলার ৩১৬৩টি স্থানের গড় অতিক্ষুদ্র বস্তুকণা (২.৫) ছিল প্রতি ঘনমিটারে ১০২.৪১ মাইক্রোগ্রাম, যা দৈনিক আদর্শ মানের চেয়ে প্রায় ১.৫৭ গুণ বেশি। পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, ৬৪ জেলার মধ্যে গাজীপুর জেলায় সবচেয়ে বেশি দূষণ পরিলক্ষিত হয়। যার মান ছিল প্রতি ঘনমিটারে ২৬৩.৫১ মাইক্রোগ্রাম। গাজীপুরের পরের অবস্থানে রয়েছে পার্শ্ববর্তী জেলা ঢাকা (২য়) ও নারায়ণগঞ্জ (৩য়) যার বায়ুমান ছিল যথাক্রমে ২৫২.৯৩ এবং ২২২.৪৫ মাইক্রোগ্রাম।

আরও পড়ুনঃ  পাহাড়ে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের বিক্ষোভ

সবচেয়ে দূষিত উল্লেখিত তিনটি শহর গাজীপুর, ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জের বায়ুমান ছিল বাংলাদেশের আদর্শমানের চেয়ে প্রায় ৪-৫ গুণ বেশি। রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি ও সংস্কারকাজ, মেগা প্রকল্প, আশেপাশের ইটভাটা, ছোট-বড় কয়েক হাজার শিল্প কারখানা, ফিটনেসবিহীন যানবাহনের কালা ধোঁয়া এবং ময়লা-আবর্জনা পোড়ানো এই প্রধান তিনটি শহর দূষণের অন্যতম কারণ হিসেবে পরিলক্ষিত হয়। গবেষণার তথ্যানুযায়ী ৪র্থ, ৫ম, ৬ষ্ঠ, ৭ম, ৮ম, ৯ম এবং ১০ম অবস্থানে রয়েছে যথাক্রমে হবিগঞ্জ, নোয়াখালী, টাঙ্গাইল, কক্সবাজার, চাঁদপুর, চট্টগ্রাম এবং কিশোরগঞ্জ।

অন্যদিকে সবচেয়ে কম দূষিত শহরের মধ্যে রয়েছে মাদারীপুর। যার বায়ুমন ছিল প্রতি ঘনমিটাৱে ৪৯.০৮ মাইক্রোগ্রাম। মাদারীপুরের পরের অবস্থানে রয়েছে পটুয়াখালী এবং মেহেরপুর। বায়ু দূষণ কম হওয়ার কারণ হিসেবে সরেজমিনে এসব এলাকায় প্রচুর পরিমাণ গাছপালা এবং প্রাকৃতিক জলাধার লক্ষ্য করা গিয়েছে। এই ছাড়াও এইসব এলাকায় রাস্তা সংস্কার কাজের পরিমাণ খুব একটা চোখে পড়েনি বলে উল্লেখ করা হয়।

৭ ধরনের ভূমির ব্যবহারের উপর ভিত্তি করে, সবচেয়ে বেশি বায়ু দূষণ ছিল মিশ্র এলাকায় যার মান ছিল প্রতি ঘনমিটারে ১১১.৯০ মাইক্রোগ্রাম। পরবর্তী অবস্থানে রয়েছে যথাক্রমে বাণিজ্যিক (১১১.৪ মাইক্রোগ্রাম), রাস্তার সংযুক্তি (১১০.৮ মাইক্রোগ্রাম), আবাসিক শিল্প (১০৬.৭ মাইক্রোগ্রাম) এবং সংবেদনশীল এলাকা (১৭.৩ মাইক্রোগ্রাম)। এদিক থেকে তুলনামূলক কম দূষণ পরিলক্ষিত হয় গ্রামীণ এলাকায় যার মান ছিল প্রতি ঘনমিটারে ৯৪.০২ মাইক্রোগ্রাম।

অতিরিক্ত দূষিত জেলা
দেশের ৬৪টি জেলার মধ্যে ১৮টি (২৮.১৩ শতাংশ) জেলায় গড় অতিক্ষুদ্র বস্তুকণা ২.৫ এর পরিমাণ ছিল প্রতি ঘনমিটারে ১২১ মাইক্রোগ্রাম এর চেয়ে বেশি। অর্থাৎ অতিরিক্ত মানের দূষিত বায়ু পরিলক্ষিত হয়েছে। সর্বোচ্চ দূষণ পাওয়া যায় গাজীপুর ও ঢাকার পর তৃতীয় অবস্থানে থাকা নারায়ণগঞ্জ প্রতি ঘনমিটারে ২২২.৪৫ মাইক্রোগ্রাম। এছাড়াও অতিরিক্ত দূষণ পাওয়া যায়, হবিগঞ্জ (২২০.১১ মাইক্রোগ্রাম), নোয়াখালী (২০৪.০১ মাইক্রোগ্রাম), টাঙ্গাইল (১৮৬.৩২ মাইক্রোগ্রাম), কক্সবাজার (১৮৩.৪১ মাইক্রোগ্রাম), চাঁদপুর (১৭০.৪২ মাইক্রোগ্রাম), চট্টগ্রাম (১৬৫.৩১ মাইক্রোগ্রাম), কিশোরগঞ্জ (১৬৫.১৩ মাইক্রোগ্রাম), মৌলভীবাজার (১৫৪.৮১ মাইক্রোগ্রাম), লক্ষ্মীপুর (১৪৯.০২ মাইক্রোগ্রাম), পঞ্চগড় (১৯২.৩১ মাইক্রোগ্রাম), ময়মনসিংহে (১৩৮.১১ মাইক্রোগ্রাম), ব্রাহ্মণবাড়িয়া (১৩৪.৭২ মাইক্রোগ্রাম), ফেনী (১২৮.৪১ মাইক্রোগ্রাম), ঠাকুরগাঁও (১২৫৩২ মাইক্রোগ্রাম) এবং জামালপুর (১২১.৩১মাইক্রোগ্রাম)।

আরও পড়ুনঃ  গ্যাসখাতে আধুনিকায়ন

মধ্যম মানের দূষিত জেলা
দেশের ৩৬টি (৫৬.২৫ শতাংশ) জেলার বায়ুমান মধ্যম মানের দূষিত অবস্থানে ছিল। তাদের মধ্যে রয়েছে- যশোর (১১১.১২ মাইক্রোগ্রাম) , মুন্সিগঞ্জ (১০৩.৭২ মাইক্রোগ্রাম), মানিকগঞ্জ (১০১.৯১ মাইক্রোগ্রাম), শেরপুর (১০০.৪২ মাইক্রোগ্রাম), নেত্রকোনা (৯৯.৬৩ মাইক্রোগ্রাম), বরগুনা (৯৮.৫৮ মাইক্রোগ্রাম), খাগড়াছড়ি (৯৮.১৭ মাইক্রোগ্রাম), সিলেট (৯৭.০২ মাইক্রোগ্রাম), গোপালগঞ্জ (৯৪.৪৭ মাইক্রোগ্রাম), নরসিংদী (৯৩.৬৫ মাইক্রোগ্রাম), গাইবান্ধা (১৩.৩৩ মাইক্রোগ্রাম), রাঙামাটি (৯২.০৭ মাইক্রোগ্রাম), চুয়াডাঙ্গা (৯০.৩০ মাইক্রোগ্রাম), সুনামগঞ্জ (৮৯.০৫ মাইক্রোগ্রাম), পিরোজপুর (৮৭.৯৩ মাইক্রোগ্রাম), বগুড়া (৮৭.০২ মাইক্রোগ্রাম), কুমিল্লা (৮৬.৭৭ মাইক্রোগ্রাম), মাগুরা (৮৬.০১ মাইক্রোগ্রাম), লালমনিরহাট (৮৬.০১ মাইক্রোগ্রাম), বান্দরবন (৮৪.০৪ মাইক্রোগ্রাম), নওগাঁ (৭৯.৪৭ মাইক্রোগ্রাম), চাঁপাইনবাবগঞ্জ (৭৯.০৪ মাইক্রোগ্রাম), ঝালকাঠি (৭৭.০৫ মাইক্রোগ্রাম), ভোলা (৭৮ মাইক্রোগ্রাম), নীলফামারী (৭৬.৮৭ মাইক্রোগ্রাম), শরীয়তপুর (৭৬.৫০ মাইক্রোগ্রাম), দিনাজপুর (৭৪.৯৭ মাইক্রোগ্রাম), ঝিনাইদহ (৭৪.৫৮ মাইক্রোগ্রাম), বরিশাল (৭৩.৬৪ মাইক্রোগ্রাম), সাতক্ষীরা (৭২.৪৪ মাইক্রোগ্রাম), ফরিদপুর (৭২.২৪ মাইক্রোগ্রাম), বাগেরহাট (৭১.১১ মাইক্রোগ্রাম), রংপুর (৭০.১৩ মাইক্রোগ্রাম), নড়াইল (৭০.০৭ মাইক্রোগ্রাম), কুষ্টিয়া (৭০.০৩ মাইক্রোগ্রাম) এবং খুলনা (৬৭.০১ মাইক্রোগ্রাম)।

ভালো বায়ুর জেলা
দেশের ৬৪টি জেলার মধ্যে শুধুমাত্র ১০টি (১৫.৬২ শতাংশ) জেলায় বায়ুর মান ভালো পাওয়া যায় (প্রতি ঘনমিটারে ৬৫ মাইক্রোগ্রাম নিচে) এবং সেই জেলা গুলো হলো- কুড়িগ্রাম (৬৩.৩৩ মাইক্রোগ্রাম), নাটোর (৬৩.১৯ মাইক্রোগ্রাম), জয়পুরহাট (৫৮.২৪ মাইক্রোগ্রাম), রাজবাড়ী (৫৮.২২ মাইক্রোগ্রাম), রাজশাহী (৫৬.৪১ মাইক্রোগ্রাম), পাবনা (৫৬.২২ মাইক্রোগ্রাম), সিরাজগঞ্জ (৫৫.২০ মাইক্রোগ্রাম), মেহেরপুর (৫৩.৩৭ মাইক্রোগ্রাম), পটুয়াখালী (৫১.৪২ মাইক্রোগ্রাম) এবং মাদারীপুর (৪৯.০৮ মাইক্রোগ্রাম)।

ভৌগোলিকভাবে এসব জেলার অবস্থান নদীর পার্শ্ববর্তী এলাকায়। ফলে দূষণের বিস্তৃতি কম হওয়ার একটি কারণ হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। তাছাড়া রাজশাহী শহরে ভালো মানের বায়ু পরিলক্ষিত হওয়ার পেছনে রাজশাহী শহর কর্তৃপক্ষের অনেক বড় ভূমিকা রয়েছে বলে মনে করছে গবেষক দল।

বিভাগ ভিত্তিক দূষণ
২০২১ সালে বাংলাদেশের ৮টি বিভাগের গড় অতিক্ষুদ্র বস্তুকণা ২.৫ এর মান প্রতি ঘনমিটারে ১০৩.৬২ মাইক্রোগ্রাম ছিল। যা আদর্শ মানের চেয়ে প্রায় ১.৫৯ গুণ বেশি। পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, ঢাকা, চট্টগ্রাম এবং সিলেট বিভাগের গড় অতিক্ষুদ্র বস্তুকণা ২.৫ এর ঘনত্ব যথাক্রমে প্রতি ঘনমিটারে ১৩৩.৮৫, ১৩৬.০২ এবং ১৪০.২৪ মাইক্রোগ্রাম। যা বায়ুদূষণ শ্রেণী অনুযায়ী অতিরিক্ত মানের দূষিত বায়ু দূষণের পর্যায়ে রয়েছে।
অপরদিকে, রাজশাহী, বরিশাল, খুলনা, রংপুর, ময়মনসিংহ বিভাগের গড় অতিক্ষুদ্র বস্তুকণা ২.৫ এর পরিমাণ যথাক্রমে প্রতি ঘনমিটারে ৬৬.৮৪, ৬৮.৯৪, ৭৬.৫৯, ৯১.৫২ এবং ১১৪.৯৩ মাইক্রোগ্রাম। যা বায়ুদূষণ নির্দেশনা অনুযায়ী মধ্যম পর্যায়ের দূষণ এলাকার অন্তর্ভুক্ত।

আরও পড়ুনঃ  'দক্ষিণ এশিয়ায় করোনায় আক্রান্ত দেড় কোটি ছাড়িয়েছে'

দূষণরোধে সুপারিশমালা
বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্রের পক্ষ থেকে স্বল্পমেয়াদী, মধ্যমেয়াদী ও দীর্ঘমেয়াদী ১৫টি পদক্ষেপের সুপারিশ তুলে ধরা হয়। স্বল্পমেয়াদী পদক্ষেপ হিসেবে শুষ্ক মৌসুমে সিটি করপোরেশন, ফায়ার সার্ভিস, ওয়াসা এবং পরিবেশ অধিদপ্তরের সমন্বয়ে ঢাকা শহরে প্রতিদিন দুই থেকে তিন ঘণ্টা পর পর পানি ছিটানোর ব্যবস্থা করার কথা বলা হয়। এছাড়া নির্মাণ কাজের সময় নির্মাণ স্থান ঘেরাও দিয়ে রাখতে হবে ও নির্মাণ সামগ্রী পরিবহনের সময় ঢেকে নেয়ার ব্যবস্থাসহ বেশ কিছু পদক্ষেপের কথা বলা হয়।

মধ্যমেয়াদী পদক্ষেপ হিসেবে সরকারি ও বেসরকারি উদ্দ্যোগে প্রচুর পরিমাণ গাছ লাগানো এবং ছাদ বাগান করার জন্য সবাইকে উৎসাহিত করা সহ ঢাকার আশেপাশে জলাধার সংরক্ষণের কথা বলা হয়।

দীর্ঘমেয়াদী পদক্ষেপ হিসেবে নির্মল বায়ু আইন-২০১৯ যতদ্রুত সম্ভব বাস্তবায়ন করা। পরিবেশ সংরক্ষণ ও সচেতনতা তৈরির জন্য পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের বার্ষিক বাজেট বরাদ্দ বাড়ানো। নিয়মিত বায়ু পর্যবেক্ষন স্টেশনের (ক্যামস) ব্যাপ্তি বাড়িয়ে ঢাকা শহরের সব এলাকাকে এর আওতাধীন করতে হবে। এছাড়াও বায়ু দূষণের পূর্বাভাস দেওয়ার প্রচলনের কথা বলা হয়।

গবেষণায় ৬৪টি জেলা থেকে ৫৩১টি সংবেদনশীল এলাকা (১৬.৭৯ শতাংশ), আবাসিক এলাকা ৪৪০টি (১৩.৯১ শতাংশ), মিশ্র এলাকা ৪০৭টি (১২.৮৭ শতাংশ), বাণিজ্যিক এলাকা ৫৭৫টি (১৮.১৮ শতাংশ), রাস্তার সংযুক্তি এলাকা ৩৫৮টি (১১.৩২ শতাংশ), শিল্প এলাকার ৪৩২টি (১৩.৬৬ শতাংশ) এবং গ্রামীণ এলাকা থেকে ৪২০টি (১৩.২৮ শতাংশ) তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করা হয়। এই স্থানগুলো থেকে স্বয়ংক্রিয় এয়ার কোয়ালিটি মনিটর ব্যবহার করে উপাত্ত সংগ্রহ করা হয় এবং পরবর্তী সময়ে ‘এসপিএসএস’ ও ‘এআরসিজিআইএস’ সফটওয়্যার ব্যবহার করে বায়ুর মান বিশ্লেষণ করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে সভাপতি হিসেবে স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ আলী নকী উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও ছিলেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) সাধারণ সম্পাদক শরীফ জামিল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিদ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. লেলিন চৌধুরী প্রমুখ।

আনন্দবাজার/শহক

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন