রবিবার, ২২শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৭ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পোষ মানাতে ‘হাতি হাদানি’

পোষ মানাতে ‘হাতি হাদানি’
  • প্রশিক্ষণের নামে প্রাণিটিকে বেঁধে রাখা অমানবিক
  • সনাতনী পদ্ধতি পরিবর্তনের দাবি পশুপ্রেমিদের

বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে এসেছিলেন। তারা অমানবিক এ প্রশিক্ষণ পদ্ধতি বন্ধ করার কথা বলে গেছেন। তবে গতকাল দুপুর পর্যন্ত থামেনি অমানবিক ওই নির্যাতন।

চার বছর বয়সী বাচ্চা হাতিটির নাম ‘টাইগার’। এ বয়সে মায়ের সঙ্গে ঘুরে বেড়ানোর কথা তার। অথচ বাচ্চা হাতিটির সঙ্গে ঘটছে ঠিক উল্টো কাহিনী। চার বছর বয়সেই পোষ মানাতে পা মোটা দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে খুঁটির সঙ্গে। পোষ মানাতে তাকে এভাবে বেঁধে রাখা হয়েছে।

প্রশিক্ষকদের ভাষ্য, যতদিন না পোষ মানছে ততদিন তাকে এভাবেই রাখা হবে। এ সময়টা অন্তত তিনমাস দীর্ঘ হতে পারে। তবে তাদের আশা এর পূর্বেই পোষ মানবে এ বাচ্চা হাতিটি।

মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার লাটিটিলা এলাকার কুচাইতল গ্রামে বাচ্চা হাতিটি পোষ মানানোর চেষ্টা চলছে। স্থানীয় ভাষায় এ প্রশিক্ষণকে বলা হয় ‘হাতি হাদানি’। পোষ না মানা পর্যন্ত কমপক্ষে তিন মাস এভাবেই চার পা দড়ি দিয়ে  বেঁধে খুঁটিতে টানা দিয়ে রাখা হবে। গত সোমবার দুপুর থেকে সাত সদস্যের একটি দল এ প্রশিক্ষণ কাজ শুরু করে। প্রশিক্ষণের সময় শারীরিক কসরত, গাছ টানানোসহ মানুষের সঙ্গে সখ্য গড়তে দেওয়া হবে নানান তালিম। তবে এ প্রশিক্ষণ পদ্ধতি সহজ নয়। হাতি বাচ্চার জন্য এটি বেশ কঠিন ও কষ্টদায়ক।

পশুপ্রেমিরা বলেন, প্রশিক্ষণের নাম প্রাণিটিকে এভাবে বেঁধে রাখা অমানবিক। তারা হাতিটির পায়ের বাঁধন খুলে দিতে আহবান জানান। সেই সঙ্গে পোষের নামে এই সনাতনী পদ্ধতির পরিবর্তনের দাবি তাদের।

আরও পড়ুনঃ  ফ্ল্যাট কেনায় ঝুঁকছেন উচ্চবিত্তরাও

তবে স্থানীয়রা বলেন, বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে এসেছিলেন। তারা অমানবিক এ প্রশিক্ষণ পদ্ধতি বন্ধ করার কথা বলে গেছেন। তবে গতকাল দুপুর পর্যন্ত থামেনি অমানবিক ওই নির্যাতন।

প্রশিক্ষক আকবর আলী বলেন, বাপ-দাদার আমল থেকে এ পদ্ধতিতে হাতি বশে আনার প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। ১০ থেকে ১২ বছর ধরে আমি এ কাজ করে আসছি। এ পদ্ধতি ছাড়া হাতি পোষ মানে না।

জুড়ী বন বিভাগের ফরেস্টার মো. আলাউদ্দিন বলেন, যেহেতু বাচ্চা হাতিটি ব্যক্তি মালিকানাধীন। তাই আমাদের কিছু করার নেই। তবে বাচ্চা হাতিটির সঙ্গে এ এ ধরনের আচরণ দুঃখজনক বলেও উল্ল্যেখ করেন তিনি।

মৌলভীবাজার বিভাগীয় বন কর্মকর্তা রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, যেহেতু হাতির মালিকরা লাইসেন্স নিয়েই হাতি পোষেন। তারা হাতি বশে আনার জন্য প্রশিক্ষণ দিতে পারেন। তবে এ ধরনের প্রশিক্ষণ কর্মকান্ডের বিষয়টি দুঃখজনক। বিষয়টি জেনে হাতিশাবকের পায়ের বাঁধন খুলে দেওয়া জন্য বলেছি। আমরাও যোগাযোগ রাখছি। যদি তারা বাঁধন খুলে না দেয় তাহলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান এ কর্মকর্তা।

সংবাদটি শেয়ার করুন