শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রাজবাড়ীর হাটে ঐতিহ্যবাহী গুড়ের জিলাপি

ইতিহাস ও ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ পদ্মা নদী তীরবর্তী জেলা রাজবাড়ী। বিশেষ করে এ জেলার গুড়, মিষ্টি, তিলের মটকা, জিলাপিসহ প্রসিদ্ধ বেশ কয়েকটি খাবার রয়েছে। তবে কালের পরিক্রমায় অনেক খাবারই বিলুপ্ত হয়েছে। তবে গ্রামীণ হাট-বাজারে মাঝে মাঝে দেখা মেলে গুড়ের জিলাপির।

জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলার নারুয়াহাটে এখনো বিক্রি হয় গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী গুড়ের জিলাপি। বেশ সুনাম থাকায় নারুয়া ছাড়াও বিভিন্ন এলাকাসহ আশপাশের জেলা থেকেও অনেকে খেতে আসে মজাদার এ জিলাপি।

সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার নারুয়াহাটে তিন জন ময়রা এখনও ঐতিহ্যবাহী মিষ্টি খাবার গুড়ের জিলাপি তৈরি করে বিক্রি করছেন। ক্রেতারা দোকানের বেঞ্চে আবার কেও দাঁড়িয়ে গুড়ের জিলাপি খাচ্ছেন। আবার অনেকই বাড়িতে নেবার জন্য ক্রয় করে প্যাকেটে মোড়াচ্ছে। জিলাপি বিক্রেতা হারেজ আলি মন্ডল বলেন, ৩০ বছর যাবত মিষ্টির ব্যবসা করছি। প্রতিকেজি জিলাপি ১০০ টাকা দরে বিক্রি করি। প্রতিহাটে ২৫ থেকে ৩০ কেজি বিক্রি হয়।

অপর বিক্রতা গফুর মন্ডল বলেন, পারিবারিকভাবে আমরা প্রায় ৫০ বছর ধরে এ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত আমিও ২০ বছর যাবত গুড়ের জিলাপি বিক্রয় করে আসছি। আমার দোকানে প্রতিহাটে প্রায় ৪০ কেজি জিলাপি বিক্রি হয়। বালিয়াকান্দির বিভিন্ন এলাকা ছাড়াও রাজবাড়ীর আশপাশের অনেক জেলা থেকে লোকজন কিনতে আসে আমার এ জিলাপি।

সেলিম মন্ডল বলেন, জিলাপি তৈরি করতে তেল, ময়দা, গুড় সংগ্রহ করে  বেলা ১১ টার পর থেকে জিলাপি বানানো শুরু করি। আর রাত ৭টা থেকে ৮ টা পর্যন্ত  বিক্রি চলে। প্রতিহাটে আমার চার-পাঁচ হাজার টাকা বেচাকেনা হয়। কর্মচারি ও অন্যান্য সব খরচ বাদ দিয়ে প্রতিদিন প্রায় এক হাজার টাকা থাকে। কাস্টমার ধরে রাখার জন্য জিলাপির মান ভালো করার চেষ্টা করি। প্রতিসপ্তাহে প্রায় দেড় থেকে দুই মণ জিলাপির অর্ডার থাকে। আমার  গুড়ের জিলাপি ১০০ থেকে ১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করি।

আরও পড়ুনঃ  হারিয়ে যাচ্ছে সেচযন্ত্র দোন

ক্রেতা আব্দুল ওহাব বলেন, আমার কাছে গুড়ের জিলাপি খুব প্রিয়। সবখানে এ জিলাপি পাওয়া যায় না। নারুয়া হাটের গুড়ের জিলাপির অনেক সুনাম আছে। তাই আমি মাঝে মাঝেই কিনতে আসি।

নারুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক কবির বলেন, বাঙালীরা ঐতিহ্যগত ভাবেই ভোজন রসিক। নিজে খেতে ও অন্যকে খাওয়াতে পছন্দ করে। গুড়ের জিলাপি একটি ঐতিহ্যবাহী খাবার। গুড়ের জিলাপি খেতে ভালোবাসেনা এমনলোক খুব কমই আছে। যদি তা গরম হয় তা হলেতো কথাই নেই। অনেকেই আত্নীয়ের বাড়িতে নেওয়াসহ নববর্ষ, মিলাদ মাহফিল ও পূজাতে জিলাপি মিষ্টি খাবার হিসেবে ব্যবহার করে থাকে।

আনন্দবাজার/এম.আর

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন