শুক্রবার, ২৬শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১১ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

যশোরে আক্রান্ত ১৬ শিক্ষক

যশোরে আক্রান্ত ১৬ শিক্ষক

যশোরে প্রাথমিকের ১৬ শিক্ষক করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে এক স্কুলেই ৬ শিক্ষক রয়েছেন। আক্রান্ত শিক্ষকরা বর্তমানে বাসায় আইসোলেশনে রয়েছেন। গত বৃহস্পতিবার জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস থেকে জানা গেছে, সংক্রমিত ১৬ শিক্ষকের মধ্যে যশোর সদর উপজেলায় ১৪ জন। অন্য দুই জনের বাড়ি শার্শা ও অভয়নগর উপজেলায়। একস্কুলে সবচেয়ে বেশি ৬ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন যশোর শহরতলীর বালিয়াডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।

এ বিদ্যালয়ে প্রথমে করোনা আক্রান্ত হন সহকারি শিক্ষক তানিয়া জামান তমা। তিনি চলতি মাসের ১০ জানুয়ারি যশোর জেনারেল হাসপাতালে নমুনা দেন। ১৩ জানুয়ারি খবর পান তিনি করোনা পজিটিভ। এরপর একই স্কুলের ৫ শিক্ষক কানিজ ফাতেমা, হোসনে আরা, সুতপা রাণী, সামছুন্নাহার সালমা ও জিনজিরা খাতুন নমুনা দেন। তাদের সবারই করোনা শনাক্ত হয়।

এছাড়া ১৭ জানুয়ারি থেকে ১৯ জানুয়ারি পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত হয়েছেন সদর উপজেলার শহীদ স্মরণী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক দিল আফরোজ নার্গিস, হালসা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মিতা রাণী মজুমদার, মেঘলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নুর জাহান আক্তার, নালিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ওয়ালিউর রহমান, মনোহরগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নুসাইরা সোহেলী, নুতন উপশহর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শারমিনা জেসমিন, নিমতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক জাহিদ হাসান হিরা, চাঁচড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আফরোজা সুলতানা। অভয়নগর উপজেলার মধ্যপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক জাহানারা শিউলী ও শার্শা উপজেলার যাদবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শামীমা আক্তার। করোনা আক্রান্তরা সবাই বাড়িতে আইসোলেশনে রয়েছে।

আরও পড়ুনঃ  ডাক্তারের ভুল চিকিৎসায় চোখ হারালো শাহিনুর

সদরের বালিয়াডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক জেসমিন আক্তার বলেন, তার বিদ্যালয়ের ৬ জন শিক্ষক করোনায় আক্রান্ত। আক্রান্তদের মধ্যে তিন শিক্ষকের অবস্থা কিছুটা খারাপ। অন্যরা সুস্থ আছেন। শিক্ষকরা করোনা আক্রান্ত হওয়ার খবরে ইতোমধ্যে শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের মাঝে ভীতির সৃষ্টি হয়েছে। উপজেলা ও জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাদের বিষয়টি জানিয়েছি। তারা কেউ প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখতে বলেনি। শিক্ষকদের করোনা আক্রান্ত হওয়ার খবরে ক্লাসে উপস্থিতির হার কমে নেমে এসেছে ১৫-২০ শতাংশে।

করোনা আক্রান্ত শার্শার যাদবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শামীমা আক্তার বলেন, আমি কিছুটা সুস্থ আছি। আমার স্কুলে ৪ জন সহকারী শিক্ষকদের মধ্যে একজন মাতৃত্বকালীন ছুটিতে আর একজন সম্প্রতি অবসরে গেছেন। অন্য দুই জন শিক্ষক প্রায় আড়াইশ’ শিক্ষার্থীদের ক্লাস নিচ্ছেন। আমি করোনা আক্রান্ত হওয়ার খবরে ক্লাসে কিছুটা উপস্থিতির হার কমেছে।

এদিকে, যশোরে এক স্কুলেই ৬ জন শিক্ষক করোনা আক্রান্ত হওয়ায় শিক্ষার্থীদের সংক্রমণের ভয় করছেন অভিভাবকরা। ফলে স্কুল খোলার পর উপস্থিতি ৯০-৯৫ শতাংশ থাকলেও এখন অনেক স্কুলে ৫০ শতাংশ নেমে এসেছে।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার শেখ অহিদুল আলম বলেন, জেলায় ইতোমধ্যে ১৬ জন শিক্ষকের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। যেসকল শিক্ষক করোনা আক্রান্ত হয়েছে; সবারই করোনা ভাইরাসের দুই ডোজ টিকা নিয়েছেন। শিক্ষকরা করোনা আক্রান্ত হওয়ার তথ্য মিললেও কোন শিক্ষার্থীদের আক্রান্ত হওয়ার খবর পায়নি।

আনন্দবাজার/এম.আর

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন