শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আধুনিকতার ছোয়ায় বিলুপ্ত খেজুর পাটি

আধুনিকতার ছোয়ায় বিলুপ্ত খেজুর পাটি

লক্ষ্মীপুরে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য হাতে তৈরি খেজুর পাতার পাটি। এক সময় এ অঞ্চলের মানুষের কাছে খেজুর পাতার পাটির ব্যাপক চাহিদা থাকলেও সময়ের পরিক্রমায় তা বিলুপ্তির পথে।

৮০ থেকে ৯০ দশকে খেজুর পাতার পাটি জেলার সাধারণ মানুষের ঘরে ঘরে নিত্যপ্রয়োজনে ব্যবহার হতো। খেজুর পাটিতে ধান শুকানোর কাজ করতো অনেকে। মসজিদে নামাজ পড়তে ও শিশুরা মক্তবে যেতে নিয়ে যেত খেজুর পাতার ছোট বিছানা। এছাড়াও খেজুর পাতার পাখাও বেশ জনপ্রিয় ছিলো। আধুনিকতার ছোঁয়ায় মানুষের জীবনমানের পরিবর্তনের ফলে হারিয়ে গেছে খেজুর পাটি।

মানুষের পারিবারিক ব্যবহার্য উপকরণ ঐতিহ্যবাহী খেজুর পাটির স্থান দখল করে নিয়েছে আধুনিক শীতলপাটি, নলপাটি, পেপসি পাটি, চট-কার্পেট, মোটা পলিথিনসহ বিভিন্ন ধরণের উপকরণ। এ উপকরণগুলো সহজেই বাজারে পাওয়া যাওয়ায় মানুষ খেজুর পাতার পাটির পরিবর্তে এসব আধুনিক উপকরণ ব্যবহারে দিন দিন অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে। এতে হারিয়ে গেছে খেজুর পাটির কদর।

সদর উপজেলার বয়োবৃদ্ধা হালিমা বেগম জানান, একসময় নিজ হাতে খেজুর পাতার পাটি বানাতাম। নিজেদের ব্যবহার ছাড়াও বিক্রি করে বাড়তি আয় করতাম। যুগের পরিবর্তনে খেজুর পাতার ব্যবহার বন্ধ হয়ে গেছে। আগের মত চোখে দেখিনা, না হয় এখনো বানাতে মন চায় খেজুরপাতার পাটি ও পাখা।

স্থানীয়রা জানান, এক সময় এ অঞ্চলে খেজুরপাতার পাটিসহ অন্যান্য সামগ্রীর ব্যাপক ব্যবহার ছিলো। কিন্তু বর্তমানে এটি নেই বললেই চলে। এটি আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতি। এ সংস্কৃতিকে টিকিয়ে রাখতে সরকার খেজুর গাছ লাগানোর জন্য জনসাধারণকে উদ্বুদ্ধ করলে এক দিকে যেমন বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া খেজুর গাছ রক্ষা পাবে। অপরদিকে পাটি তৈরির সাথে জড়িত হয়ে অনেকের কর্মস্থানের সৃষ্টি হতে পারে।

আরও পড়ুনঃ  একদিনে মৃত্যু ৩৩, নতুন আক্রান্ত ৩৫৩৩ জন

জেলা কৃষি অধিদপ্তর জানায়, প্রতিটি মানুষের উচিৎ নিজেদের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে টিকিয়ে রাখার জন্য কাজ করা। আধুনিকতার উপর নির্ভর হওয়ায় আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতি প্রতিনিয়ত হারিয়ে যাচ্ছে। এক সময় বহুল ব্যবহৃত খেজুর পাতার পাটি আমাদের সংস্কৃতির অংশ ছিলো।

আনন্দবাজার/এম.আর

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন