শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

উত্তরে হাড় কাঁপানো শীত

উত্তরে হাড় কাঁপানো শীত
  • কাহিল পশুপাখি, হ্রাস পাচ্ছে প্রজনন ক্ষমতা

রংপুর অঞ্চলে হাড় কাঁপানো শীতে মানুষের পাশাপাশি পশুপাখির অবস্থাও কাহিল হয়ে পড়েছে। প্রচন্ড ঠান্ডায় জ্বর, খাবার অরুচিসহ নানা রোগে ভুগছে এই অঞ্চলের গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগিসহ বিভিন্ন প্রাণি। অব্যাহত শীতে এসব প্রাণিকুলের অবস্থা সঙ্কটাপন্ন। নানা রোগ বালাইয়ের কারণে হ্রাস পাচ্ছে এদের প্রজনন ক্ষমতাও।

জানুয়ারি মাসের শুরুতে এ অঞ্চলে বেড়েছে শীতের তীব্রতা। এতে মানুষের পাশাপাশি প্রণিকূলেও দেখা দিয়েছে চরম সংকট। শীতের দাপট থেকে বাঁচাতে অনেক খামারি গরম কাপড় বা চটের বস্তা দিয়ে গবাদিপশুর দেহ ঢেকে রাখছেন।

বিভিন্ন এলাকায় শীতের কারণে গরু-ছাগলের মৃত্যুর ঘটনা ঘটলেও প্রাণি সম্পদ বিভাগের দাবি, এ পর্যন্ত তারা কোনো প্রাণির মৃত্যুর খবর পাননি। তবে শীতে গামবোরো জাতীয় রোগে প্রচুর পরিমাণে ব্রয়লার, কক, সোনালি ও লেয়ার মুরগি মারা যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এছাড়া গরু-ছাগল, ভেড়া, মহিষের গলাফুলা, তড়কা, বাদলা রোগে প্রাণহানি ঘটতে পারে। শীতের কারণে হাঁস-মুরগির খাদ্য গ্রহণের ক্ষমতা কমে যাচ্ছে। এতে ডিম উৎপাদন কমে যাওয়ার আশঙ্কাসহ পরিমিত খাদ্য গ্রহণ করতে না পারায় গরুর খামারগুলোতে দুগ্ধ উৎপাদন হ্রাসের শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

রংপুর নগরীর উত্তম এলাকার আহাম্মদ আলী জানান, শীতের কারণে তার গরুর খাবার রুচি কমে গেছে এবং জ্বর জ্বর ভাব দেখা দেওয়ায় তিনি চিকিৎসকের পরামর্শমত ওষুধ খাওয়াচ্ছেন। গঙ্গাচড়া উপজেলার চেংমারী এলাকার নওশা মিয়া জানান, তার একটি গরু শীতে কাহিল হয়ে পড়েছে। শীতের হাত থেকে বাঁচার জন্য গরুকে কম্বল দিয়ে ঢেকে রেখেছেন তিনি।

আরও পড়ুনঃ  জরুরি টিকিটে শঙ্কা

রংপুর প্রাণি সম্পদ অফিস জানায়, প্রত্যেক জেলায় গড়ে ৩৫ থেকে ৪০ লাখ গবাদিপশু রয়েছে। সেই হিসেবে উত্তরাঞ্চলের ১৬ জেলায় গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগিসহ বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণি রয়েছে প্রায় ছয় কোটি। অব্যাহত শীতে এসব প্রাণির অবস্থা কাহিল হয়ে পড়েছে। নানা রোগ বালাইয়ের কারণে এদের প্রজনন ক্ষমতাও হ্রাস পাচ্ছে। শীতে এখন পর্যন্ত কোনো প্রাণির মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি উল্লেখ করে সূত্র জানায়, প্রচন্ড শীতের কারণে গরু-ছাগলের জ্বর-সর্দিসহ নানা রোগে আক্রান্তের আশঙ্কা রয়েছে। প্রাণি সম্পদ বিভাগের কর্মকর্তারা প্রতিটি উপজেলায় মনিটরিং করছে।

রংপুর আবহাওয়া অফিস জানায়, উত্তরাঞ্চলের ওপর দিয়ে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। গতকাল রোববার রংপুরে সর্বনিম্ন তাপমাত্র রেকর্ড করা হয় ১২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে বাতাসের সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ আর্দ্রতা কাছাকাছি আসায় শীত অনুভূত হচ্ছে বেশি।

আনন্দবাজার/এম.আর

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন