শুক্রবার, ২৬শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১১ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণে উদযাপন কাল

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে বাংলাদেশকে স্বপ্লোন্নত থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের সুপারিশের স্বীকৃতির বিষয়টি উদযাপন করবে সরকার। এ জন্য আগামীকাল রবিবার রাজধানী ঢাকার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি)।

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামাল, এফসিএ, এমপি সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, এমপি। এ ছাড়াও জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, মন্ত্রিসভার অনান্য সদস্য, বাংলাদেশের উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাগুলোর প্রতিনিধিসহ রাজনীতিকরা অংশ নেবেন।

আজ শনিবার দুপুরে ভার্চ্যুয়াল প্রেস ব্রিফিংয়ে বিষয়টি জানান অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এ সময় উপস্থিত ছিলেন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন।

অর্থমন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে আগামীর বাংলাদেশের উন্নয়ন সংক্রান্ত দিক নির্দেশনা দেবেন। স্বাধীনতার পর জাতীয়ভাবে এটি আমাদের সবচেয়ে বড় অর্জন। এ অর্জন দেশের সাধারণ মানুষের।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে সা¤প্রতিক বছরগুলোতে যে অভাবনীয় আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন সাধিত হয়েছে-স্বল্পোন্নত দেশ হতে উত্তরণ সেই অর্জনেরই একটি বিশেষ স্বীকৃতি। এ অনুষ্ঠানটির মাধ্যমে ঐতিহাসিক জাতীয় অর্জন সম্পর্কে জনমনে ব্যাপক সচেতনতা সৃষ্টি হবে যা জাতি হিসেবে অদূর ভবিষ্যতে আমাদের চলার পথে অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করবে।

বাংলাদেশ ২০২১ সালের ফেব্রæয়ারিতে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসি (সিডিপি)- এর ত্রিবার্ষিক পর্যালোচনা সভায় দ্বিতীয়বারের মত স্বল্পোন্নত দেশ হতে উত্তরণের সবগুলো সূচকে উত্তীর্ণ হতে সক্ষম হয়। একই সঙ্গে বাংলাদেশকে ২০২১ থেকে ২০২৬ সাল পর্যন্ত পাঁচ বছরব্যাপী প্রস্তুতিকাল প্রদানেরও সুপারিশ করে।

আরও পড়ুনঃ  গরুর দাম কম, লোকসানে খামারি

গতবছরের ৮ জুন জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদ (ইকোসক) সিডিপি’র উল্লিখিত সুপারিশ অনুমোদন করে। সবশেষে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৬তম অধিবেশন গত ২৪ নভেম্বর ৫ বছরের প্রস্তুতিকালসহ স্বল্পোন্নত দেশ হতে বাংলাদেশের উত্তরণের সুপারিশ চূড়ান্ত অনুমোদন করে। ২৩ নভেম্বর ২০২৬ এ বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে যাত্রা শুরু করবে।

উল্লেখ্য বাংলাদেশই একমাত্র দেশ যেটি জাতিসংঘ কর্তৃক নির্ধারিত উত্তরণের তিনটি মানদÐের সবগুলোই পূরণ করে উত্তরণের যোগ্যতা অর্জন করেছে।

বাংলাদেশ এমন একটি সময়ে স্বল্পোন্নত দেশ হতে উত্তরণের চূড়ান্ত যোগ্যতা অর্জন করল যখন সমগ্র দেশ স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন করছে।

এদিকে মূল্যস্ফীতি বিষয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, মূল্যস্ফীতি সারা বিশ্বেই আছে। বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতি নেই। গত ১৫ বছরে মূল্যস্ফীতির হার গড়ে ৫ থেকে সাড়ে ৫ শতাংশের মধ্যে ওঠা-নামা করেছে। এই সময়ে বিশ্বের অন্যান্য দেশে আরও বেশি মূল্যস্ফীতি ছিল। কাজেই আমি বলব, বাংলাদেশ একটি অসাধারণ দেশ। আমাদের এখানে মূল্যস্ফীতি নেই।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) ২৬ ডিসেম্বর মূল্যস্ফীতির পয়েন্ট টু পয়েন্ট (মাসওয়ারি) তথ্য প্রকাশ করে। এতে দেখা যায়, মূল্যস্ফীতির পারদ চড়ছেই। চলতি অর্থবছরে টানা পাঁচ মাস ধরেই বাড়ছে মূল্যস্ফীতি। মাসওয়ারি মুদ্রাস্ফীতি প্রায় ৬ শতাংশে উঠেছে।

আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে নভেম্বরের শুরুতে দেশে লিটার প্রতি ডিজেলের দাম ১৫ টাকা বাড়িয়ে করা হয় ৮০ টাকা। এর চাপ পড়েছে সাধারণ মানুষের খরচায়।

ডিজেলের দাম সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, আমি সকল বিষয়ে হস্তক্ষেপ করি না। সব কিছু দেখি না। যারা এ বিষয়ে দেখেন তাদের কাছে প্রশ্ন করুন। বলেন, আমদানি বাড়া ভালো। আমদানি বাড়লে রপ্তানিও বাড়ে। রপ্তানি খাতে ইনসেনটিভ দেয়া হয়েছে। এজন্য রপ্তানি বাড়ছে। দেশের টাকা দেশের মধ্যেই থাকুক। এজন্য যা যা কিছু দরকার, তাই করা হবে।

আরও পড়ুনঃ  রাজশাহীতে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা

আনন্দবাজার/ টি এস পি

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন