শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভোটে হেরে মাছ নিধন!

ভোটে হেরে মাছ নিধন!
  • ক্ষতি ৩০ লাখ টাকা

নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলার সুন্দলপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট দ্বন্দ্বের জেরে পুকুরে বিষ প্রয়োগে ৩০ লাখ টাকার মাছ নিধন করা হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিজয়ী চেয়ারম্যানের মাছের খামারে বিষ প্রয়োগ করে এ মাছ নিধনের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

মৃত মাছগুলোতে পচন ধরায় দুর্গন্ধে পুুরো এলাকার পরিবেশ ভারি হয়ে উঠেছে। পুকুরের পাশে অবস্থিত মসজিদের মুসুল্লিরা সেই পুকুরে ওযু, গোসল কিছুই করতে পারছেন না, ব্যবহারের অনুপযোগি হয়ে পড়েছে পুকুরের পানি। এ বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি বলেও অভিযোগ রয়েছে। ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে প্রশাসন বলছে বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

গতকাল শুক্রবার সকালে এ ঘটনায় একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন কবিরহাট থানার ওসি টমাস বড়ুয়া।

ইউপি নির্বাচনে জয়ী প্রার্থী মোহাম্মদ ইলিয়াছ অভিযোগ করে বলেন, গত ২৬ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে তিনি চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেন। নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার রাতে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী নুরুল আমিন রুমির লোকজন বাড়ি পুকুর এলাকার আমার দুই একর আয়তনের মাছের খামারে বিষ প্রয়োগ করে। এতে পুকুরে থাকা মাছ মরে আমার প্রায় ২৫ থেকে ৩০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। গত তিন বছর এ পুকুর থেকে কোনো মাছ ধরা হয়নি। এ বিষয়ে প্রথমে মৌখিকভাবে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনকে জানালেও এখনো তাঁরা কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি, এমনকি পুলিশ পরিদর্শনেও আসেনি।

স্থানীয় বাসিন্দা অলিউল্যাহ জানান, নির্বাচনের দিন ভোরে মসজিদে ফজরের নামাজ পড়তে এসে দেখি ৮ থেকে ১০ কেজি ওজনের মাছ থেকে শুরু করে পুকুরের ছোট বড় সব মাছ মরে ভেসে আছে। পুকুরে ওযু করার মত কোনো অবস্থা নেই। প্রথমে এলাকার লোকজন বড় বড় মরা মাছগুলো নিয়ে গেছে। যদি তা না নিত তাহলে পরিবেশ আরও খারাপ হতো।

আরও পড়ুনঃ  রাশেদুল এনজিও ব্যুরোর নতুন মহাপরিচালক

পুকুরপাড়ে অবস্থিত বায়তুল হাবিব জামে মসজিদের মুসুল্লি আবদুল্যাহ সৈকত জানান, গত কয়েকদিন ধরে পুকুরের মাছ মরে ভেসে আছে। এখন পঁচা দুর্গন্ধে এলাকার পরিবেশ ভারি হয়ে উঠেছে। আমরা এখানে ওযু গোসল কিছুই করতে পারছি না। ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে পানিগুলো।

অভিযোগের বিষয়টি অস্বীকার করে নুরুল আমিন রুমি বলেন, এ পুকুর নিয়ে স্থানীয় দু’টি পক্ষের মধ্যে বিরোধ রয়েছে। এ ঘটনার সঙ্গে আমার কোনো নেতাকর্মী জড়িত নেই। মাছ মারার মত ঘটনাটি যারা ঘটিয়েছে প্রশাসনের কাছে দাবী থাকবে বিষয়টি সঠিক তদন্ত করে তাদের বিরুদ্ধে যেন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।

এ বিষয়ে কবিরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) টমাস বড়ুয়া জানান, এ বিষয়ে ক্ষতিগ্রস্থ মোহাম্মদ ইলিয়াছ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে আমরা তদন্ত করছি। তদন্ত পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

আনন্দবাজার/শহক

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন