আগামী ২২ ও ২৩ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মালদ্বীপে সফর করবেন। প্রেসিডেন্টের আমন্ত্রণে সরকারি সফরে তিনি দেশটিতে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
গতকাল রবিবার রাজধানী ঢাকার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে বিগত ২০২০ সালের ১৭ থেকে ২৬ মার্চ ২০২১ তারিখ পর্যন্ত জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে দশ দিনব্যাপী বিশেষ অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়। সেই অনুষ্ঠানের প্রথম দিন ১৭ই মার্চ ২০২১ তারিখের অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে মালদ্বীপের রাষ্ট্রপতি ইব্রাহিম মোহামেদ সলিহ্ উপস্থিত ছিলেন। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশটিতে সফরের আমন্ত্রণ জানান।
মালদ্বীপের উপ-রাষ্ট্রপতি ফয়সাল নাসিম গত ২২-২৪ নভেম্বর বাংলাদেশ সফর করেছেন। সফরকালে তিনি মালদ্বীপের চাহিদার প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ থেকে চিকিৎসক ও নার্সসহ বিভিন্ন মেডিকেল পেশাজীবী স্বল্প সময়ের জন্য মালদ্বীপে প্রেরণের প্রস্তাব করেন। এছাড়া মালদ্বীপের মেডিকেল পেশাজীবীদের জন্য বাংলাদেশে বিশেষায়িত পোস্ট গ্রাজুয়েশন কোর্সের সুযোগের জন্য অনুরোধ জানান। তিনি বাংলাদেশের কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রও পরিদর্শন করেন। পরবর্তীতে, গত ২৭ নভেম্বর তারিখে মালদ্বীপের রাজধানী মালেতে অনুষ্ঠিত পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ে দ্বিপাক্ষিক কনসাল্টেশনে দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতার সুনির্দিষ্ট ক্ষেত্রসমূহ চিহ্নিত হয়।
২২ ডিসেম্বর বিশেষ ফ্লাইটযোগে প্রধানমন্ত্রী মালেতে অবতরণ করবেন এবং বিমানবন্দরে মালদ্বীপ সরকারের পক্ষ থেকে তাঁকে অভ্যর্থনা জানাবেন দেশটির পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী। ২৩ ডিসেম্বর সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম মোহামেদ সলিহ আনুষ্ঠানিকভাবে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাবেন এবং তখন তাঁকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হবে। গার্ড অব অনার গ্রহণ শেষে প্রধানমন্ত্রী প্রেসিডেন্সিয়াল প্রাসাদে গমন করবেন।
উক্ত ভেন্যুতে প্রধানমন্ত্রীর সাথে মালদ্বীপের প্রেসিডেন্টের দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠক শেষে দুই দেশের মধ্যে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, দ্বৈত করারোপ, যুব ও ক্রীড়া বিষয়ে কয়েকটি চুক্তি/সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হতে পারে (সম্ভাব্য তালিকা সংযুক্ত)। সফরকালে প্রধানমন্ত্রীর সাথে মালদ্বীপের ভাইস প্রেসিডেন্ট, স্পিকার ও প্রধান বিচারপতি সৌজন্য সাক্ষাৎ করবে। প্রধানমন্ত্রী মালদ্বীপের জাতীয় পার্লামেন্টেও বক্তব্য রাখবেন। মালদ্বীপে কর্মরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের সাথেও প্রধানমন্ত্রী ভার্চুয়ালি কুশল বিনিময় করবেন। এছাড়া মালদ্বীপের প্রতিরক্ষা দপ্তরের অনুরোধের প্রেক্ষিতে, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কর্তৃক প্রদেয় ১৩টি সেনাযান বন্ধুত্বের নিদর্শন স্বরূপ মালদ্বীপের প্রতিরক্ষা দপ্তরের কাছে হস্তান্তর করা হবে। আনুষ্ঠানিকতা শেষে দুই দেশের মধ্যে একটি যৌথ বিবৃতি প্রকাশিত হবে এবং দুই নেতা যৌথভাবে মালদ্বীপের স্থানীয় মিডিয়ার সামনে তাঁদের কর্মসূচি উপস্থাপন করবেন।
সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী তাঁর সম্মানে মালদ্বীপের রাষ্ট্রপতি কর্তৃক আয়োজিত রাষ্ট্রীয় নৈশভোজে যোগ দেবেন। এ সফরে প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হিসেবে পররাষ্ট্র মন্ত্রী, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী, সেনাপ্রধান, চেয়ারম্যান, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, পররাষ্ট্র সচিবসহ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের উপযুক্ত কর্মকর্তাবৃন্দ এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের সচিব পর্যায়ের কর্মকর্তাগণ যুক্ত হওয়ার কথা রয়েছে।
আনন্দবাজার/ টি এস পি