চীনে উদ্ভাবিত সিনোফার্ম ভ্যাকসিন দেশে জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর। বৃহস্পতিবার মহাখালীতে ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে প্রতিষ্ঠানটির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মাহবুবুর রহমান গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, চীন প্রথম দফায় ৫ লাখ ডোজ দিচ্ছে। আগামী দুই সপ্তাহে চীনের ভ্যাকসিন দেশে আসার সম্ভাবনা আছে।
মেজর জেনারেল মাহবুবুর রহমান বলেন, ” এ ভ্যাকসিনটির ফেজ-১ ও ফেজ-২ এর ওপর আমরা আমাদের কারিগরি কমিটির পর্যালোচনামূলক প্রতিবেদনগুলো দেখেছি। এরপরেই আমরা সিনোফার্ম ভ্যাকসিন এবং দেশে এর জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছি”।
“ভ্যাকসিনগুলো সরকারিভাবে (জিটুজি ভিত্তিতে) গ্রহণ করা হবে”, যোগ করেন তিনি।
দেশের অভ্যন্তরে সিনোফার্ম ভ্যাকসিন উৎপাদনের ব্যাপারেও সরকার-পর্যায়ে আলোচনা অব্যাহত রয়েছে বলে জানান মেজর জেনারেল মাহবুবুর রহমান। স্বাস্থ্য অধিদফতর শুরুতে এক হাজার লোককে টিকা দেবে এবং এর প্রভাব পর্যবেক্ষণ করবে বলে তিনি জানান। “পর্যবেক্ষণের পরে আমরা গণ টিকাদান কার্যক্রম শুরু করব”।
প্রথম ডোজের ২৮ দিন পর এই ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণ করা যাবে।
গত বছরের জুলাই মাসে চীনের সিনোভ্যাক ভ্যাকসিন বাংলাদেশে ভ্যাকসিনের ট্রায়াল দেওয়ার আগ্রহ নিয়ে প্রস্তাব পাঠিয়েছিল। তখন বাংলাদেশ মেডিকেল রিসার্চ কাউন্সিল তা অনুমোদন করার পর আন্তর্জাতিক উদরাময় রোগ গবেষণা কেন্দ্র বাংলাদেশ (আইসিডিডিআরবি) ট্রায়ালের প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিও নিচ্ছিল।
কিন্তু সে সময় ভারতের পররাষ্ট্র সচিব হর্ষ বর্ধন শ্রিংলার ঝটিকা সফরের পর চীনা ভ্যাকসিনের ট্রায়ালে বাংলাদেশের আগ্রহ কমে যায় এবং ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে ভ্যাকসিন কেনার উদ্যোগ নেয় সরকার।
ভারত রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর ভ্যাকসিনের সংকট কাটাতে গত দু’সপ্তাহ ধরে চীন ও রাশিয়ার ভ্যাকসিনের জন্য তৎপরতা বাড়ায় সরকার।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বরাবরই বলে আসছেন, চীনা ভ্যাকসিনের ট্রায়াল প্রত্যাখ্যান করে কেবল একটি দেশের ওপর নির্ভর করার সিদ্ধান্তটি সঠিক ছিল না। সময়মত চীনা ভ্যাকসিনের ট্রায়াল হলে প্রযুক্তি হস্তান্তরের মাধ্যমে অনেক আগেই বাংলাদেশে চীনা ভ্যাকসিনের উৎপাদন সম্ভব হতো।
আনন্দবাজার/শহক