শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ওসি’ই যখন সফল কৃষক 

ওসি'ই যখন সফল কৃষক 

কুমিল্লার নাঙ্গলকোট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হিসেবে মো. বখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী যোগদানের দুই মাস পরেই দেশে শুরু হয় করোনার প্রাদুর্ভাব। অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে করোনাকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের মানুষকে নির্দেশনা দেন অনাবাদি জমিকে চাষাবাদের জন্য। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনাকে সম্মান জানিয়ে নাঙ্গলকোট থানার ওসিও উদ্যোগ দেন পরিত্যক্ত জমিতে চাষাবাদের। আর এতেই তিনি ওসি থেকে হয়ে উঠলেন একজন সফল কৃষক।

জানা যায়, ওসি বখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী চাষাবাদের জন্য বেছে নেন থানা কমপ্লেক্সের ভেতরে দীর্ঘদিন পরিত্যক্ত হিসেবে পড়ে থাকা একটি জমিকে। লতা-পাতায় ভরা ১২০ শতকের ওই জমিটি তিনি অন্যান্য পুলিশ সদস্যদের নিয়ে পরিষ্কার করেন। এরপর শুরু করেন শাক-সবজিসহ বিভিন্ন ফসলের চাষাবাদ। প্রথমে কয়েক দফা বীজবপন করা হলেও অতিবৃষ্টিসহ প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে ফসল পাননি তিনি। কিন্তু হাল না ছেড়ে একাধিকবারের চেষ্টায় সফল হন তিনি। বর্তমানে ওই পরিত্যক্ত জমি শাক-সবজিতে ভরপুর। এসব শাক-সবজি দিয়ে থানায় কর্মরত পুলিশ সদস্যদের চাহিদা মিটছে। পাশাপাশি বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষসহ স্থানীয়দেরও দেয়া হচ্ছে। ওসি নিজেই অন্যান্য পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে নিয়মিত ক্ষেত পরিচর্যা করেন।

ওই পরিত্যক্ত জমিতে এখন লাউ, বেগুন, মিষ্টি কুমড়া, পালংশাক, লালশাক, পেঁয়াজ, মরিচ, ফুলকপি, বাধাকপি, গাজর, শালগম, মুলা, ধনেপাতাসহ অন্তত ২০ প্রকার শাক-সবজির চাষ করা হয়েছে। ফলনও হয়েছে বাম্পার। আর এসব সবজি উৎপাদিত হচ্ছে সম্পূর্ণ বিষমুক্ত উপায়ে।

সম্প্রতি সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ওই মাঠে ফসলের পরিচর্যা করছেন ওসি বখতিয়ার। ফসলের মাঠের বিভিন্ন দিকে লাগানো হয়েছে ফলের গাছও। থানার মূল ফটক দিয়ে প্রবেশের দুই পাশে লাগানো হয়ে বাহারি রঙের ফুল গাছ। থানায় আসা সেবা প্রত্যাশীরা এমন দৃশ্য দেখে মুগ্ধ হওয়ার পাশাপাশি পুলিশের এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানাচ্ছেন।

আরও পড়ুনঃ  কুমিল্লায় ভ্রাম্যমান ট্রাফিক স্কুল কার্যক্রম

এ প্রসঙ্গে ওসি বখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী করোনাকালীন সময়ে নির্দেশনা দিয়েছেন কোনো জায়গা পরিত্যক্ত থাকতে পারবে না। এরপর চিন্তা করলাম আমাদেরও কিছু করা দরকার। সেই চিন্তা থেকেই এই উদ্যোগ নিয়েছি। প্রথমে ওই জমি থেকে পুলিশ সদস্যদের নিয়ে লতা-পাতা-জঙ্গল পরিষ্কার করেছি। এরপর শুরু করি চাষাবাদ। প্রথমে ফলন না হলেও একাধিকবারের চেষ্টায় এখন শাক-সবজির বাম্পার ফলন হয়েছে। আমাদের পুলিশ সদস্যরা এখন বিষমুক্ত শাক-সবজি খেতে পারছেন। পাশাপাশি থানায় আসা অনেকেই এখান থেকে সবজি নিচ্ছেন। ইনশাআল্লাহ, আমাদের এই চাষাবাদ অব্যাহত থাকবে।

আনন্দবাজার/শাহী/আলাউদ্দিন

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন