শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কুমিল্লার মুরাদনগরে উৎসবমূখর পরিবেশে পিঠা উৎসব

কুমিল্লার মুরাদনগরে উৎসবমূখর পরিবেশে পিঠা উৎসব

শীতের পিঠায় লুকিয়ে আছে গ্রামবাংলার আনন্দ উৎসব, তাই এ পিঠাই যেন উৎসবের মতোই পিঠা উৎসব সুপ্রাচীন কালের। পঞ্জিকার নিয়মে, প্রকৃতিতে আগমন ঘটেছে পৌষের। এ গ্রামীণ ঐতিহ্য বেশ ঘটা করেই উদযাপন করলো কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ।

উপজেলা পরিষদের সেন্ট্রাল স্কুলে এমন আয়োজনে রকমারি পিঠার চিরচেনা স্বাদ ও গন্ধ মাতিয়ে রাখলো সবাইকে। আর মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে দেশীয় গানে অনুষ্ঠানে ভিন্ন মাত্রা রূপ নেয়। উৎসবে এসে অনেকেই যেন ফিরে গেলেন হারানো শৈশবে।

গতকাল শনিবার দুপুরে এ উৎসবের উদ্বোধন করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি উপজেলা মহিলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি সুস্মিতা দাশ টিনা। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ফওজিয়া আক্তারের সভাপতিত্বে এ উৎসবে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অভিষেক দাশ।

অনিন্দ্য সুন্দর এ পিঠা উৎসবে ঠাঁই পায় ভাপা, পাটিসাপটা, তেলের পিঠা, নকশী পিঠা, ঝাল পিঠা, চিতই পিঠা, সবজি পুলি, কলার পিঠা, ডালিম পিঠা, লবঙ্ক পিঠা, ফুল পিঠাসহ ৬০ পদের পিঠা। প্রায় অর্ধ-শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অংশ নেয় এ পিঠা উৎসবে। বড় বড় বাক্সে সাজানো রকমারি পিঠার স্বাদ-গন্ধ চেখে দেখতে সেখানে হাজির হয়েছিলেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। তাদের মুখে ছিলো সুস্বাদু ও জনপ্রিয় এসব পিঠার গুণকীর্তন।

স্মৃতি হাতড়ে শিক্ষক সমিতির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক গাজীউল হক চৌধুরী বলেন, এমন একটা সময় ছিলো যখন আত্মীয়-স্বজনদের নিমন্ত্রণ করে পিঠা খাওয়ানোর একটা রেওয়াজ প্রচলিত ছিলো। কিন্তু এখন সেসব শুধুই স্মৃতি। শীতের সময়ে এখন আর বাড়িতে বেড়াতে আসা অতিথিদের পিঠা দিয়ে আপ্যায়িত করা হয় না। এর ফলে দিনে দিনে পরিবারিক ও সামাজিক বন্ধনের মাধ্যমগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এ বন্ধন সুদৃঢ় করতে নতুন প্রজন্মের কাছে বাঙালির ঐতিহ্যবাহী সব পিঠার পরিচিতি তুলে ধরতে এ উৎসবের সুদুরপ্রসারী তাৎপর্য রয়েছে।

আরও পড়ুনঃ  বরগুনায় পরিবেশ অধিদপ্তরের অভিযানে ৫টি ইটভাটা ধ্বংস

পিঠা উৎসব আয়োজনের প্রশংসা করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অভিশেক দাশ বলেন, পিঠা উৎসব বাঙালির ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরছে। এটি একটি ভালো উদ্যোগ। এ উৎসবের মধ্যে দিয়ে নিজেদের ভেতর সম্প্রীতি গড়ে ওঠার সুযোগ তৈরি হয়। গত কয়েক বছর ধরে শীতে পিঠা উৎসবের আয়োজন করে আসছেন উপজেলা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ। পিঠা উৎসবের মধ্যে দিয়ে তারা বাঙালিত্বকে খুঁজে পান। তিনি আরো বলেন, বছরের অন্তত একটা দিন সবাই একসঙ্গে পিঠা খেয়ে প্রাণের উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠা নিঃসন্দেহে আনন্দের।

আনন্দবাজার/শাহী/বাশার

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন