শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভিজিএফ’র চাল আত্মসাতের ঘটনা ধামাচাপা দিতে গোপনে সংবাদ সম্মেলন

সম্প্রতি নীলফামারীর সৈয়দপুরে ঈদুল আজহা উপলক্ষে দেয়া ভিজিএফ’র চাল আত্মসাত ও স্লিপ পুড়িয়ে ফেলার ঘটনা ধামাচাপা দিতে গোপনে সংবাদ সম্মেলন করেছে ইউপি চেয়ারম্যান। ঘটনা তদন্তে গঠিত কমিটির প্রতিবেদন জেলা প্রশাসকের কাছে পৌঁছার আগেই তদন্তের ফলাফল নিয়ে মন্তব্য করে অভিযোগ মিথ্যে বলে বক্তব্য দিয়ে বিষয়টিকে ভিন্নখাতে প্রবাহের জন্য অপচেষ্টা করা হয়েছে। এমন অভিযোগ উঠেছে চেয়ারম্যান ও তদন্ত কমিটিসহ প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে।

সচেতন মহলে এটাকে তুষ দিয়ে আগুন ঢাকার অপচেষ্টা বলে গুন্জন উঠেছে। একইসাথে যথাসময়ে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে গড়িমসির অভিযোগও তুলেছে কেউ কেউ। কারণ তদন্তে প্রাপ্ত তথ্য সম্পর্কে তদন্ত কমিটির প্রধান ও সদস্যরাসহ উপজেলা নির্বাহী অফিসার সংবাদকর্মীসহ কোন পক্ষের কাছেই মুখ খুলতে অস্বীকৃতি জানালেও চেয়ারম্যান কিভাবে সে সম্পর্কে আগাম মতামত ব্যক্ত করেছেন সংবাদ সম্মেলনে। তাই বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়েছে উপজেলা জুড়ে।

এদিকে জানা যায়, গেল ২৯ জুলাই বুধবার সকালে উপজেলার কাশিরাম বেলপুকুর ইউনিয়নে ভিজিএফ’র চাল তুলতে গিয়ে চাল না পেয়ে বিক্ষোভ করে প্রায় সহস্রাধিক স্লিপধারী হতদরিদ্র মানুষ। এসময় তাদের চাল নেই বলে চলে যেতে বলে চেয়ারম্যান মোঃ এনামুল হক চৌধুরী ও ইউপি সচিব মোঃ রহিদুল ইসলাম। তাদের মধ্যে অনেকের স্লিপ তুলে নিয়ে পরে চাল বা টাকা দেয়া হবে বলে পুড়িয়ে ফেলা হয় ভিজিএফ স্লিপ। এতে উপস্থিত জনগন উত্তেজিত হয়ে উঠলে পরিস্থিতি সামাল দিতে খবর পেয়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা উপস্থিত হন।

আরও পড়ুনঃ  পাইকগাছায় দেলুটি ইউনিয়নে ত্রান বিতরণ

এসময় চাল না পেয়ে দীর্ঘ সময় ধরে অপেক্ষারত জনগণরা অভিযোগ করেন, চেয়ারম্যান ও সচিব চাল বিতরণে নিয়োজিত ট্যাগ অফিসার উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা মোহাম্মদ মশিউর রহমানের সমঝোতায় চাল বিক্রি করে দিয়েছেন। তাই স্লিপ প্রাপ্তদের চাল দিতে পারছেন না। তাই তারা গরীব মানুষগুলোর কাছ থেকে স্লিপ নিয়ে পুড়িয়ে ফেলেছেন।

এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ আবু হাসনাত সরকারের মধ্যস্থতায় চেয়ারম্যান ২৫০ জন স্লিপধারী চাল পায়নি স্বীকার করে পরের দিন চাল দেয়ার আস্বাস দেন। সে অনুযায়ী পরেরদিন ২৫০ জন কে বাজার থেকে ক্রয় করা চাল দেয়া হয়। তারপরও প্রায় শতাধিক স্লিপধারী আজও চাল পায়নি।

এদিকে জেলা প্রশাসক গত ১০ জুলাইও প্রতিবেদন পাননি বলে জানা যায়। কিন্তু তার আগেই গত ৯ জুলাই গোপনে গুটি কয়েকজন সংবাদকর্মী নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন অভিযুক্ত চেয়ারম্যান মোঃ এনামুল হক চৌধুরী। এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মোঃ আখতার হোসেন বাদল। এতে চেয়ারম্যান তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সত্য নয় এবং তদন্ত কমিটিও কোন অনিয়ম বা দূর্নীতির তথ্য পায়নি বলে মন্তব্য করেন।

আনন্দবাজার/শাহী/মনন

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন