নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেল মাদারীপুরের বন্দরখোলা চরাঞ্চলের বাতিঘর খ্যাত এস.ই.এস.ডিপি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়। মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলার বন্দরখোলা ইউনিয়নের নূরুদ্দিন মাদবরেরকান্দি গ্রামে অবস্থিত বিদ্যালয়টি পদ্মার গর্ভে প্রায় বিলীন হয়ে গেছে। গতকাল বুধবার (২২ জুলাই) মধ্যরাতে মাঝ বরাবর ফেটে গিয়ে হেলে পড়ে বিদ্যালয় ভবনটি।
সর্বশেষ খবর পর্যন্ত বৃহস্পতিবার (২৩ জুলাই) দুপুরের দিকে বিদ্যালয়টি নদীর দিকে পুরোপুরি হেলে পড়েছে।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০০৯ সালে স্থাপিত হয়েছিল নূরুদ্দিন মাদবরের কান্দি এস.ই.এস.ডি.পি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়টি। বন্দোরখোলা ইউনিয়নের চরাঞ্চলে স্থাপিত এই বিদ্যালয়টিতে শিবচর উপজেলার বন্দোরখোলা ইউনিয়নের মমিন উদ্দিন হাওলাদারকান্দি, জব্বার আলী মুন্সীকান্দি, বজলু মোড়লের কান্দি, মিয়া আজম বেপারীর কান্দি, রহমত হাজীর কান্দি, জয়েন উদ্দিন শেখ কান্দি, মসত খাঁর কান্দিসহ প্রায় ২৪টি গ্রাম ও ফরিদপুর জেলার সদরপুর উপজেলার চর নাসিরপুরসহ বেশ কয়েকটি গ্রামের ছেলে-মেয়েরা এই বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করতো।
বিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা সবাই ছিলেন বিভিন্ন চরের বাসিন্দা। এই অঞ্চল থেকে মূল ভূ-খণ্ড অনেক দূরে হওয়ায় চরের ছেলে-মেয়েরা সেখানে গিয়ে লেখাপড়া করার সুযোগ পেত না। চরের ছোট ছোট প্রায় ২৪টি গ্রাম থেকে তিন শতাধিক শিক্ষার্থী এই বিদ্যালয়ে এসে লেখাপড়া করতো।
স্থানীয়রা জানান, পদ্মার নিকটবর্তী হওয়ায় বিদ্যালয়সহ আশেপাশের এলাকা প্রতি বছরই বন্যার পানিতে ডুবে যেতো। গত বছর পদ্মানদী ভাঙতে ভাঙতে বিদ্যালয়টির পেছন দিক পর্যন্ত চলে আসে। তখন ওই এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ড জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন ঠেকিয়ে রেখেছিল। চলতি বর্ষা মৌসুমেও ভাঙন ঠেকাতে জিও ব্যাগ ফেলে ডাম্পিং চালানো হয়। পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রচণ্ড স্রোতের কারণে জিও ব্যাগ ফেলে তেমন সুবিধা করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। এর ফলে বুধবার মাঝ রাতে তিন তলা ভবনের বিদ্যালয়টির কিছু অংশ হেলে পড়ে।
বন্দরখোলা ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য ইসমাইল বলেন, বুধবার রাত ১১টার দিকে হঠাৎ করেই বিকট শব্দ হতে থাকে স্কুলের ভবনের মধ্য থেকে। খবর পেয়ে অসংখ্য মানুষ ট্রলারে করে বিদ্যালয়টি দেখতে আসে। আমাদের সামনেই বিদ্যালয়টি মাঝখান থেকে ফাটল ধরে পেছন দিকে হেলে পড়ে।
তিনি আরও বলেন, মনোরম পরিবেশে একটি দৃষ্টিনন্দন বিদ্যালয় ছিল এটি। চোখের সামনে এভাবে বিদ্যালয়টি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে দেখে স্থানীয়রা আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েছে।
আনন্দবাজার/ডব্লিউ এস