অবিরাম বর্ষণে নীলফামারীর সৈয়দপুর শহরের অধিকাংশ এলাকায় পানিবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। নিমজ্জিত হয়ে পড়েছে নিচু এলাকার রাস্তা, বাসা-বাড়ী, মাঠ ও ফসলের ক্ষেত। পুকুর-ডোবা, নালা-নর্দমা ভড়াট হয়ে নোংরা পানিতে সয়লাব হয়েছে আশেপাশের এলাকা। ফলে চরম দূর্ভোগে পড়েছে সৈয়দপুরবাসী। পানি নিষ্কাশন না হওয়ায় পরিস্থিতি প্রকট আকার ধারন করেছে।
গত শুক্রবার (১৮ জুলাই) দিবাগত রাত আনুমানিক ২ টা থেকে শুরু হয়েছে প্রবল বর্ষণ। মাঝে মাঝে একটু বিরতি দিয়ে অনবরত ঝড়ে যাচ্ছে শ্রাবণ ধারা। ফলে শহরের প্রধান রাস্তা শহীদ ডাঃ জিকরুল হক রোড, জহুরুল হক রোড, শেরেবাংলা সড়কে হাটু পানি জমে গেছে। সেই সাথে শহরের ১৫ নং ওয়ার্ডের মিস্ত্রিপাড়া মন্দীর রোড, বাঁশবাড়ী মদীনা লেন, ১৪ নং ওয়ার্ডে আলাউদ্দীন লেন, মসজিদ বায়তুস সালাম রোড, হানিফ মোড় থেকে বটগাছ তলা সড়ক, ১৩ নং ওয়ার্ডে শহীদ নূর মোহাম্মদ রোড, সাদরা লেন সম্পূর্ণভাবে পানিতে নিমজ্জিত হয়ে পড়েছে।
এছাড়াও ১২ নং ওয়ার্ডের নতুন বাবুপাড়ার খ্রীস্টান পল্লী, মেথরপট্টি, ১১ নং ওয়ার্ডের পৌর সবজী আড়ত, ১০ নং ওয়ার্ডের চাউল বাজার, পাটোয়ারীপাড়া সড়ক, ৯ নং ওয়ার্ডের হাতিখানা কবরস্থান সড়ক, বানিয়াপাড়া সড়ক, হাতিখানা ক্যাম্প, ৮ নং ওয়ার্ডের ডাঃ ষষ্টীচরনের বাড়ীর সামনের রাস্তা, ৭ নং ওয়ার্ডের উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সানজিদা বেগম লাকীর বাসার সামনের সড়ক, ৬ নং ওয়ার্ডের নিয়ামতপুর সরকারপাড়া, জুম্মাপাড়া, ৫ নং ওয়ার্ডের মুন্সিপাড়া রেলওয়ে কলোনী, খেজুরবাগ মসজিদ রোড, মহিলা কলেজ রোড, ৪ নং ওয়ার্ডের কয়ানিজপাড়ার দোলাপাড়া, নয়াটোলার মসজিদ রোড, থানার পাশের রাস্তা, আতিয়ার কলোনী, ৩ নং ওয়ার্ডের রসুলপুর রেল কলোনী, বার্মাসেল রাস্তা, ইসলামবাগ, ২ নং ওয়ার্ডের ঘোড়াঘাট রেল কলোনী, বিহারী ক্যাম্প, সুপারী বাগান রোড, গোলাহাট বাজার এবং ১ নং ওয়ার্ডের উত্তরা আাবাসন, সরকারপাড়া রোড ও ওয়াপদা ফকিরপাড়ার রাস্তাগুলোতে স্থায়ী পানিবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।
এর মধ্যে বাঁশবাড়ী, হাতিখানা ও মুন্সিপাড়া এলাকা দীর্ঘদিন থেকেই পানিমগ্ন। এসব এলাকায় পানি নিষ্কাশনের কোন ব্যবস্থায়ই কার্যকর নেই। একারণে ড্রেনের ময়লা পানি আর বৃষ্টির পানি একাকার হয়ে রাস্তা উপচিয়ে বাসাবাড়িতে প্রবেশ করে এক শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে। এর উপর অবিরাম প্রবল বর্ষণ যেন মরার উপর খারার ঘা হয়ে দাড়িয়েছে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে সমালোচনার তুমুল ঝর উঠেছে। ভুক্তভোগী এলাকাবাসী পৌর কর্তৃপক্ষসহ জনপ্রতিনিধিদের উপর তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করে নানা স্ট্যাটাস দিয়ে অচিরে দুর্বিষহ অবস্থা থেকে তাদেরকে উদ্ধারের দাবী জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, সৈয়দপুর শহর রেলওয়ের জায়গার উপর গড়ে উঠেছে। অপরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থা আর নিয়মিত পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার অভাবে পানি নিষ্কাশনের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা বিরাজ করছে। একারনে সামান্য বৃষ্টিতেই উল্লেখিত এলাকা ও সড়কে স্থায়ী পানিবদ্ধতা দেখা দেয়। এ পানি অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত চরম দূর্ভোগ পোহাতে হয় সংশ্লিষ্ট এলাকার সর্বস্তরের জনগনকে।
আনন্দবাজার/শাহী/মনন