ঢাকা | শুক্রবার
২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

একটি সেতুর জন্য বাঁশখালীর দুই ইউনিয়নের লাখো মানুষের আর্তনাদ

চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার জাইল্যাখালী খালের উপর নড়বড়ে সাঁকো দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে খাল পারাপার করছে দুই ইউনিয়নের লক্ষাধিক মানুষ। প্রায় ৩০ বছর যাবত নড়বড়ে এই সাঁকো দিয়ে প্রতিনিয়ত যাতায়াত করছে শীলকুপ ও ৭ নং সরল ইউনিয়নের মিনজিরতলা, কাহারঘোনা এলাকার বাসিন্দারা।

উপজেলার শীলকুপ ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ড মনকিচর জাইল্যাখালী বাজারের পশ্চিম দিকে মনকিচর মাওলানা আবু বকরের মাদ্রাসা হয়ে সরলের কাহারঘোনা এলাকার মাঝখান দিয়ে বয়ে যাওয়া জাইল্যাখালী খালের ওপর সাঁকোটির অবস্থান। ১২০ ফুট দীর্ঘ সাঁকো পার হয়ে স্কুল ও মাদ্রাসার শত শত শিক্ষার্থীও যাতায়াত করে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শিশুদের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় সাঁকোটিতে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় কোনো রকমের কাঠের পাঠাতন দেওয়া হয়েছে। বৃষ্টিতে ভিজে কর্দমাক্ত পায়ে মানুষ সাঁকোতে উঠছে মারাত্মক ঝুঁকি নিয়ে। সাঁকোর দক্ষিণ পাড় থেকে জালিয়াখালী বাজার, বঙ্গবন্ধু হাই স্কুলের দিকে পাঁকা রাস্তা আর সাঁকোর অপরদিকে পশ্চিম কাহারঘোনা থেকে জালিয়াখালী বাজারের দিকে কাঁচা রাস্তা হওয়ায় সাঁকো পার হয়ে দ্রুত যেতে চাইলেই পড়তে হবে ঝুঁকির মুখে।

সাঁকোর উভয় পাশের স্থানীয় বাসিন্দাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, কম সময়ে দ্রুত এপার থেকে ওপারে যেতে সাঁকোই তাঁদের সহজ পথ। কিন্ত এই সাঁকো স্কুল-মাদরাসায় যেতে-আসতে নিরাপদ নয়, বর্ষাকালে তো মোটেও নয়।

মনকিচর এমদাদুল উলুম মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা আবু বকর বলেন, ‘সাঁকোর দক্ষিণ পাশে এমদাদুল উলুম মাদরাসা, আল-হুমাইরা বালিকা মাদরাসা, মনকিচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নুরিয়া মাদরাসা, ইমাম বোখারী একাডেমি, দারুল হিকমা মাদরাসা, সাঁকোর উত্তর পাশে কাহারঘোনা থেকে রওশনিয়া মাদরাসা, আশিঘর পাড়া ফয়জুল উলুম মাদরাসা, কাহারঘোনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অসংখ্য ছাত্র-ছাত্রীর নিয়মিত যাতায়াতের পথ এই ঝুঁকিপূর্ণ পুরনো সাঁকো। এছাড়াও শীলকুপ ইউনিয়নের পশ্চিম অংশ ও ৭নং সরলের কাহারঘোনা এলাকার চাষী-জেলেগণসহ সাধারণ জনগণ এই সাঁকো দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করছে।

সেই সাথে ঝুঁকি নিয়ে বর্ষা মৌসুমে সঠিক সময়ে অনেক ছাত্র-ছাত্রী মাদ্রাসায় আসতে পারেনা। পারাপার করার সময় সাঁকো থেকে পড়ে আহত হওয়ার ঘটনাও ঘটেছে।’- যোগ করেন মাওলানা আবু বকর।

এ ব্যাপারে শীলকুপ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মহসিন বলেন, ‘এটি বহু বছরের পুরোনো একটি সাঁকো। দু’পাশের লোকজন ঝুঁকি নিয়ে সাঁকো পারাপার করছে। সাঁকোর স্থলে একটি সেতু খুবই জরুরী । আমি একজন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। আমার পক্ষে এই কাজ করা সম্ভব নয়। কারণ এটি এলজিইডির আওতাভুক্ত।’

এবিষয়ে বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোমেনা আক্তার বলেন, ‘আপনারা একটি জনদূর্ভোগের সংবাদ দিয়েছেন। এরকম একটা সাঁকো আছে বলে আমার জানা ছিল না। আমি দ্রুত পরিদর্শনে যাবো এবং কার্যকরী পদক্ষেপ নেব।’

আনন্দবাজার/শাহী/বেলাল

সংবাদটি শেয়ার করুন