শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আত্রাইয়ে বন্যায় থমকে গেছে কৃষকের স্বপ্ন

নওগাঁর আত্রাইয়ে প্রবল বর্ষণ ও ঢলের পানিতে আত্রাই নদীর পানি বৃদ্ধির ফলে উপজেলার ভরতেঁতুলিয়া ও মধুগুড়নই গ্রামে বেড়ি বাঁধ ও আত্রাই- বান্দাইখাড়া পাকা সড়কের জাতআমরুল নামক স্থানে এবং আত্রাই- সিংড়া পাকা সড়কের বৈঠাখালী ও পাঁচুপুর নামক স্থানে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে প্রায় অর্ধশত গ্রাম। পানিতে নষ্ট হয়েছে আউশ ধানের ক্ষেত, পটল, বেগুন, কাঁচা মরিচসহ বিভিন্ন সবজির ক্ষেত আর পানিতে তলিয়ে গেছে আমন ধানের বীজ তলা। এছাড়াও ভেসে গেছে শতাধিক পুকুরের মাছ। তবে নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ও পানি দ্রুতগতিতে নেমে যাওয়ার কারণে প্রতিদিনই উপজেলার নিম্মাঞ্চলগুলো নতুন করে প্লাবিত হচ্ছে। এতে কৃষিতে ক্ষতির পরিমাণ দ্বিগুন হচ্ছে।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি আউশ মৌসুমে উপজেলায় ১৪৮৫হেক্টর জমিতে আউশ ধান রোপন করা হয়েছে। বন্যার পানিতে প্রায় ১৩৭৫হেক্টর আউশ ধান আক্রান্ত হয়েছে। ৭৫হেক্টর বিভিন্ন সবজির ক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে। চলতি আমন মৌসুমে উপজেলায় আমন ধান চাষের জন্য লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হলেও বন্যার কারণে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হওয়ার আশঙ্কা করছে কৃষি বিভাগ। এছাড়াও আসন্ন আমন মৌসুমের তৈরি করা হয়েছিলো রোপা আমন ২৮৩হেক্টর বীজ তলা। বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে প্রায় ২৭০হেক্টর আমন ধানের বীজ তলা। তবে মাঠে উল্লেখ্যযোগ্য কোন ফসল না থাকার কারণে কৃষকদের ক্ষতির পরিমাণ তেমন বড় আকারের না হওয়ার আশা করছে কৃষি বিভাগ। তবে শত শত পুকুরের মাছ পানিতে ভেসে যাওয়ায় চরম ভাবে ক্ষতির মুখে পড়েছে মাছচাষীরা। বন্যার কারণে আমন ধানের চারার কৃত্রিম সংকট যাতে না হয় তাই উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শ ও সহযোগিতায় কৃষকরা নতুন করে কিছু উচু জমিতে বীজতলা তৈরি করছেন।

আরও পড়ুনঃ  বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশের সুযোগ নিতে প্রবাসীদের আহ্বান

উপজেলার ভবানীপুর গ্রামের আজাদ প্রামানিক বলেন বন্যার পানিতে আমার ২বিঘা জমির আউশ ধান পানিতে তলিয়ে গেছে। আমন ধানের জন্য তৈরি করা ১বিঘা জমির বীজতলাও তলিয়ে গেছে। তাই এখন আবার কৃষি অফিসের পরামর্শ অনুসারে উচু জমিতে নতুন করে বীজতলা তৈরি করতে হচ্ছে। এতে করে এবার আমন ধান চাষে খরচ অনেকটাই বেশি পড়ে যাবে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ কেএম কাউছার হোসেন বলেন বন্যার পানিতে বেশি ক্ষতি হয়েছে আমন ধানের বীজতলা। তবে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার কৃষকদের নতুন করে আমনের বীজতলা তৈরিতে সহায়তা করা হচ্ছে। এছাড়াও উপজেলায় এখনো যে পরিমাণ আমনের বীজতলা অক্ষত রয়েছে তা দিয়ে উপজেলায় আমন ধান রোপন সম্ভব নয় বলেও জানান তিনি। তবে বন্যার পানি যদি দীর্ঘসময় মাঠের নিম্মাঞ্চলে থাকে তাহলে আমন ধান রোপনে কিছুটা ব্যাহত হতে পারে। আর আমরা ক্ষতিগ্রস্থ্য এলাকার কৃষকদের সর্বসময় করনীয় বিষয়ে পরামর্শ প্রদান করছি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ছানাউল ইসলাম বলেন, উপজেলা প্রশাষনের পক্ষ থেকে পানিবন্দী পরিবারের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করা হচ্ছে এবং এ কর্মচূচী অব্যাহত থাকবে। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ্য সকল শ্রেণির মানুষদের একটি তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। বন্যার পর এই তালিকা চ’ড়ান্ত করে সরকারের উর্দ্ধতন মহলে পাঠানো হবে। পরবর্তিতে কোন সহযোগিতা এলে ক্ষতিগ্রস্থ্যদের মাঝে তা বিতরন করা হবে।

আনন্দবাজার/নাহিদ

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন