রবিবার, ৮ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৪শে ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

টেজার গান দিয়ে ফাহিমকে হত্যা করা হয়েছে

বাংলাদেশের জনপ্রিয় রাইড শেয়ারিং অ্যাপ পাঠাওয়ের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ফাহিম সালেহ কে টেজার গান ব্যবহার করে হত্যা করা হয়েছে। পুলিশ জানান, এ ঘটনায় অভিযুক্ত টাইরেস ডেভন হ্যাসপিল এ বিশেষ অস্ত্র ব্যবহার করে। ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেছে। তাকে আজ আদালতে হাজির করা হবে।

নিউইয়র্ক প্রবাসী লেখক ও সাংবাদিক মিলি সুলতানা তার ফেসবুকে পেজে লিখেন, ‘ফাহিমকে হত্যা করার জন্য খুনি টাইরিস টেজার গান ব্যবহার করেছে। টেজার হল এক ধরনের বিশেষ অস্ত্র। যা পুলিশ-আর্মিরা এক্সট্রিম লেভেলের অপরাধীদের ধরাশায়ী করার জন্য ব্যবহার করে থাকে। লেজার রশ্মি দিয়ে টার্গেট নিশ্চিত করা হয়। তারপর পিস্তলের স্টাইলে ইলেক্ট্রিক শক ছুঁড়ে মারা। টেজারের ভিতর থেকে বেরিয়ে আসে এক ধরনের সূক্ষ্ম মারাত্মক জিনিস। যা পাঁচ সেকেন্ডের মধ্যে শরীরে আঘাত করে শরীরকে কিছু সময়ের জন্য সম্পূর্ণ নিথর ও অসাড় করে দেয়। শরীরের ভেতরে প্রতিটি পয়েন্টে কন্ট্রাক্ট করে টেজার। ফাহিমকেও তাই করেছে টাইরিস। টেজার দিয়ে আক্রমণ করে ফাহিমকে নিথর করে ফেলে খুনি।’

তিনি জানান, ‘ফাহিমের শরীর সম্পূর্ণ অবশ হয়ে যাওয়ার পর তার ঘাড়ে গলায় পেটে উপুর্যুপরি ছুরিকাঘাত করা হয়। খুন করে সোমবার দুপুরে। ফাহিমের ফ্ল্যাটে পুরো একদিন তার লাশ পড়ে থাকে। পরদিন মঙ্গলবার টাইরিস আবার যায় ফাহিমের ফ্ল্যাটে। এরমধ্যে লাশ কেটে টুকরো টুকরো করার সব ব্যবস্থা সেরে নিয়েছে। হোম ডিপোট থেকে করাত কিনেছে। ঘর স্যানিটাইজ করার জিনিসপত্র কিনেছে। ফাহিমের ফ্ল্যাটে ফিরে এসে প্রথমেই শরীর থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন করে নিয়েছে। তারপর একে একে হাত পা খণ্ড-বিখণ্ড করেছে। সেগুলো প্লাস্টিকের ব্যাগে ঢুকিয়ে রেখেছে।’

আরও পড়ুনঃ  মিয়ানমারকেই রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধান করতে হবে : প্রধানমন্ত্রী

মিলি সুলতানা আরও জানান, ‘মেঝেতে জমে থাকা রক্ত পরিষ্কার করেছে। ঘরের মেঝে পরিস্কার করার জন্য এই খুনি পোর্টেবল ভ্যাকুম ক্লিনার ব্যবহার করেছে। সব রক্ত রুমের এক কর্নারে জমিয়ে রাখে। হয়ত তার খুনির প্ল্যান ছিল সবশেষে রুমের কোনা পরিষ্কার করবে। কিন্তু তার আগেই ফাহিমের কাজিন ডোর বেল বাজায়। এতে টাইরিস তার কাজ সম্পূর্ণ করতে পারেনি। সে ইমার্জেন্সি এক্সিট ব্যবহার করে পালিয়ে যায়। খুন করার আগে টাইরিস নিঞ্জা মাস্ক, স্যুট টাই এবং হ্যাট পরে নিয়েছিল। ফাহিমের অটোপসি রিপোর্টে বলা হয় তার বুকে গভীরভাবে ছুরি ঢুকিয়ে ঘোরানো হয়েছিল। যাতে করে ফাহিমের বাঁচার নুন্যতম চান্স না থাকে।’

ফাহিমের ফ্ল্যাটের এক প্রতিবেশী লিসা হেনকক (৫৩) যিনি পেশায় একজন ফটোগ্রাফার। লিসা জানান, আমারই নেক্সট ডোর প্রতিবেশি ছেলেকে এভাবে নির্মমভাবে হত্যা করা হল, অথচ বুঝতেই পারলাম ছেলেটাকে মেরে ফেলা হচ্ছে। ফাহিম যখন মার্ডার হচ্ছিল ঘড়ির হিসেবে আমি তখন বাসায় অবস্থান করছিলাম। কিন্তু বুঝতেও পারলাম আমার প্রতিবেশি নির্মমভাবে খুন হচ্ছে।

আনন্দবাজার/এস.কে

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন